রক্তপাত বন্ধ চাইলে মেনে নিতে হবে
ট্রাম্পের প্রস্তাব গাজার যোদ্ধাদের জন্য ‘আত্মসমর্পণের’ শামিল
ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস ও দখলদার ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধ বন্ধের জন্য ২০ দফা প্রস্তাব দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এতে সম্মতি জানিয়েছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু।
এখন হামাসের অনুমোদনের জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
ফিলিস্তিনি-ইসরায়েলি রাজনৈতিক বিশ্লেষক মারওয়ার বিশ্রা সংবাদমাধ্যম আলজাজিরাকে বলেছেন, ট্রাম্পের এ প্রস্তাব ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের জন্য আত্মসমর্পণের শামিল। তবে তারা যদি মনে করে রক্তপাত বন্ধ হওয়া উচিত, এর মাধ্যমে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের কিছুটা সম্ভাবনাও থাকবে। তাহলে হয়ত তারা ট্রাম্পের প্রস্তাব মেনে নিতে পারে।
তিনি বলেন, ‘হামাসের জন্য এটি আত্মসমর্পণ, অন্যভাবে বলার সুযোগ নেই।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন
আমি চেয়েছিলাম কথাটা আরেকটু ভালো বা ঘুরিয়ে বলতে কিন্তু ট্রাম্পের পরিকল্পনাটিকে হামাস আত্মসমর্পণ করার জন্য একটি চূড়ান্ত হুঁশিয়ারি হিসেবেই দেখবে। কারণ, তারা জানে যে আত্মসমর্পণ না করলে আমেরিকা তার সবচেয়ে কাছের বন্ধু ইসরায়েলকেই সমর্থন করবে।
এখন, হয়ত তাদের বোঝানো যেতে পারে যে আত্মসমর্পণেও তাদের মঙ্গল আছে। হয়ত অন্তত তিন বছরের গণহত্যা এবং লাগাতার বোমা হামলার পর... এই রক্তপাত থামবে। অথবা অন্তত এখন একটা সম্ভাবনা তৈরি হলো, ভবিষ্যতে কোনো একসময়, একটা ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠিত হওয়ার, যদিও সেটার অবস্থান কোথায় হবে, তা আল্লাহ্ মালুম।
কিন্তু যখন পুরো ব্যাপারটা এই ধারণার ওপর প্রতিষ্ঠিত যে গাজায় সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ক আছে, সেখানে সন্ত্রাসীরা রয়েছে। আর এই চুক্তির মাধ্যমে নিশ্চিত করা হবে যে তারা নিরস্ত্রীকরণ করবে এবং যে অঞ্চল তারা একসময় দখলদারিত্বের অধীনে শাসন করত, সেটিকে নিরস্ত্র করা হবে— তখন এটাকে আত্মসমর্পণ ছাড়া আর কিছুই বলা যায় না।
এদিকে ট্রাম্পের প্রস্তাব অনুযায়ী, হামাস এতে সম্মতি জানালে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে জীবিত ও মৃত সব জিম্মি মুক্তি পাবেন।
অপরদিকে হামাস গাজার নিয়ন্ত্রণ ছেড়ে দেবে। সেখানে আমেরিকান, ইউরোপ ও আরব দেশগুলো নিয়ে একটি অন্তর্বর্তী প্রশাসন গঠন করা হবে, যেটির মূল দায়িত্বে থাকবেন ট্রাম্প।
হামাসের ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির মাধ্যমে গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতি শুরু হবে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জানিয়েছেন, গাজা ও হামাসকে সম্পূর্ণ নিরস্ত্রীকরণ করা হবে। আর এ কাজে সহায়তা করবে আরব দেশগুলো। তারা হামাসকে নিরস্ত্রীকরণে সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বলেও দাবি করেছেন তিনি। এ ছাড়া সুড়ঙ্গসহ হামাসের সব অবকাঠামো ধ্বংস করা হবে।
গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে ৮ মুসলিম দেশের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন ট্রাম্প। ওই সময় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ট্রাম্প হুমকি দিয়েছেন, আরব দেশগুলো যদি হামাস ও গাজাকে নিরস্ত্র করতে ব্যর্থ হয় তাহলে ইসরায়েল এ কাজ করবে। যেটিতে যুক্তরাষ্ট্র পূর্ণ সমর্থন দেবে।
সূত্র : আলজাজিরা
এমটিআই