ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত নতুন যে প্রস্তাব পেশ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প—সে সম্পর্কে মতামত জানানোর জন্য বেঁধে দেওয়া ডেটলাইন বা সময়সীমা নিয়ে চাপে পড়েছে উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাস।

প্রস্তাবের ব্যাপারে নিজেদের মতামত জানানো বা অবস্থান স্পষ্ট করার জন্য হামাসকে ৩ থেকে ৪ দিন সময় দিয়েছেন ট্রাম্প।

তাছাড়া নতুন প্রস্তাব মেনে না নিলে সম্ভাব্য যা হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন ট্রাম্প— সেটি গোষ্ঠীটির ওপর চাপের আর একটি কারণ। ট্রাম্প বলেছেন, হামাস যদি প্রস্তাবের বিপক্ষে অবস্থান নেয়— তাহলে ‘খুবই দুঃখজনক পরিণতি’ ভোগ করতে হবে গোষ্ঠীটিকে।

২৯ সেপ্টেম্বর সোমবার ওয়াশিংটনে মার্কিন প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবন হোয়াইট হাউসে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠক করেন ট্রাম্প। তারপর এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, গাজায় যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত একটি নতুন প্রস্তাবের কাজ শেষ হয়েছে এবং ২০টি পয়েন্ট সম্বলিত প্রস্তাবটি যুদ্ধের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোকে পাঠানো হয়েছে।

নতুন প্রস্তাবে গাজার সরকারপ্রধান হিসেবে নিজের নাম এবং সরকারপ্রধানের সহযোগী হিসেবে যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারের নাম প্রস্তাব করেছেন ট্রাম্প। এছাড়া গাজায় বন্দি অবস্থায় থাকা সব ইসরায়েলি জিম্মিকে অবিলম্বে মুক্তি প্রদান এবং হামাসকে অস্ত্র সমর্পণের আহ্বানও জানানো হয়েছে।

অস্ত্র সমর্পণের শর্তটিতে তীব্র আপত্তি আছে হামাসের। এর আগেও বেশ কয়েক বার গোষ্ঠীটিকে অস্ত্র সমর্পণের জন্য আহ্বান জানানো হয়েছিল, কিন্তু প্রতিবারই সেই আহ্বান সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে হামাসের হাইকমান্ড।

তাছাড়া যুদ্ধবিরতির নতুন যে প্রস্তাবটি ট্রাম্প পেশ করেছেন, তার পয়েন্ট বা শর্তগুলো সম্পর্কে তেমন কোনো পূর্বাভাস পায়নি হামাস। কারণ যে সমস্ত আলোচনা ও বৈঠকের ভিত্তিতে প্রস্তাবটি তৈরি করা হয়েছে, সেগুলোর কোনোটিতেই হামাসের কোনো প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন না।

হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, যুদ্ধের অপর দুই মধ্যস্থতাকারী দেশ মিসর ও কাতারের মাধ্যমে হামাসের কাছে নতুন প্রস্তাবের কপি পৌঁছে দেওয়া হয়েছে; কিন্তু যে ডেটলাইন দিয়েছেন ট্রাম্প, তার আওতায় প্রস্তাবটি যাচাই, মতামত এবং আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য হামাসের হাতে সময় খুবই কম।

সোমবারের সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প বলেছেন, “ইসরায়েল এবং আরব নেতারা আমার নতুন যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনাকে সমর্থন করেছেন। এখন আমরা হামাসের সাড়ার অপেক্ষা করছি। মতামত জানানোর জন্য তাদেরকে তিন থেকে চার দিন সময় দেওয়া হয়েছে।”

“এই সময়সীমার মধ্যেই হামাসকে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে এবং যদি তারা বিপক্ষে অবস্থান নেয়, তাহলে খুবই দুঃখজনক পরিণতির জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।”

সংবাদ সম্মেলনে শেষে ট্রাম্প বিদায় নেওয়ার সময় এক সংবাদিক প্রশ্ন করেছিলেন, নতুন এই যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবের ওপর আরও আলোচনা করার সুযোগ আছে কি না।

জবাবে ট্রাম্প বলেছেন, “বেশি সুযোগ নেই।”

সূত্র : রয়টার্স

এসএমডব্লিউ