রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সুবাদে গত কিছু দিন ধরে আন্তর্জাতিক রাজনীতির আলোচ্যসূচিতে উঠে এসেছে টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কি অভিযানরত রুশ বাহিনীকে চাপে ফেলতে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে টমাহক চেয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র এখন পর্যন্ত এ ব্যাপারে সম্মতি দেয়নি, আবার পুরোপুরি বাতিলও করেনি।

আজ শুক্রবার ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবন ও দপ্তর হোয়াইট হাউসে গিয়েছেন জেলেনস্কি। সেখানে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে এ ব্যাপারে তার বৈঠক হচ্ছে। যদি ট্রাম্প ইউক্রেনকে টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহে রাজি হন, তাহলে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে তার প্রভাব পড়বে।

কী এই টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র

টমাহক হলো যুক্তরাষ্ট্রের একটি দূরপাল্লার ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ভূমি এবং সাগর— উভয় জায়গা থেকেই ছোড়া যায়। সাধারণত সাগরে যুদ্ধজাহাজ থেকে এটি ছোড়া হয়। টমাহক সর্বোচ্চ ১ হাজার ৬০০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুকে নিখুঁতভাবে আঘাত হানতে সক্ষম, এমনকি ব্যাপক শক্তিশালী আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও টমাহক ক্ষেপণাস্ত্রকে ঠেকাতে পারে না। যে কোনো দেশ বা ভূখণ্ডের গভীরে হামলার জন্য টমাহক আদর্শ ক্ষেপণাস্ত্র। এই ক্ষেপণাস্ত্রটি ২০ ফুট লম্বা। বিমানের মতো টমাহকেও দু’টি পাখা থেকে। ক্ষেপণাস্ত্রের মাঝামাঝি জায়গায় থাকা দুই পাখার প্রস্থ সাড়ে ৮ ফুট এবং ওজন ১ হাজার ৫১০ কেজি। এটি নন-নিউক্লিয়ার, অর্থাৎ পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র নয়।

সম্প্রতি ইয়েমেনে হুথি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে এই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে হামলা চালিয়েছে মার্কিন নৌবাহিনী।

উৎপাদন ব্যয়

টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র বেশ ব্যয়সাপেক্ষ সমরাস্ত্র। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সদর দপ্তর পেন্টাগন কয়েক দিন আগে দেশটির ফেডারেল বা কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে বাজেট জমা দিয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে আগামী ২০২৬ সালের জন্য ৫৭টি টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছে পেন্টাগন। এগুলোর মোট নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ১৩ লাখ ডলার।

কী কারণে টমাহক চায় ইউক্রেন

সম্প্রতি সময়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের এবং পাল্লার মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে এবং করছে ইউক্রেনীয় বাহিনী। এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্যগুলো হলো ফ্লেমিঙ্গো, নেপচুন, হারপুন এবং এটিসিএম।

এই চার ক্ষেপণাস্ত্রের মধ্যে সবচেয়ে দূরপাল্লারটি হলো ফ্লেমিঙ্গো। টমাহকের মতো ফ্লেমিঙ্গোও ১ হাজার মাইল বা ১ হাজার ৬০০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম। তবে এটি টমাহকের মতো শক্তিশালী নয়। রাশিয়ার আধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সহজেই আটকে দেয় ফ্লেমিঙ্গোকে।

মূলত এই কারণেই যুক্তরাষ্ট্রের কাছে টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র চাইছে ইউক্রেন।

সূত্র : রয়টার্স

এসএমডব্লিউ