ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের গোপন তৎপরতা ও সশস্ত্র বাহিনীকে ব্যবহারের হুমকি দেশটির সার্বভৌমত্ব এবং জাতিসংঘ সনদের লঙ্ঘন বলে সতর্ক করে দিয়েছে জাতিসংঘ। মঙ্গলবার জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক বিশেষজ্ঞরা যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে এই সতর্কবার্তা দিয়েছেন।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক তিনজন স্বাধীন বিশেষজ্ঞ এক যৌথ বিবৃতিতে বলেছেন, ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষিত পদক্ষেপগুলো আন্তর্জাতিক আইনের মৌলিক বাধ্যবাধকতা লঙ্ঘন করছে। জাতিসংঘের আইনে অন্য কোনও দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে আরেক দেশের হস্তক্ষেপ কিংবা সশস্ত্র আক্রমণের হুমকি না দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

ওই তিন বিশেষজ্ঞ সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ‘‘এই ধরনের পদক্ষেপ অত্যন্ত বিপজ্জনক উত্তেজনা সৃষ্টি করছে; যা ক্যারিবীয় অঞ্চলের শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত চরম বিপদ ডেকে আনতে পারে।

জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞদের এই বিবৃতির কয়েক দিন আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দেশটির বৈদেশিক গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএকে ভেনেজুয়েলায় গোপন কার্যক্রম পরিচালনার অনুমোদন দেন। তার এই ঘোষণার পর ক্যারিবীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক উপস্থিতি ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। 

ভেনেজুয়েলার সরকার যুক্তরাষ্ট্রের এসব পদক্ষেপকে সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন এবং দেশে সরকার পরিবর্তনে বিদেশি ষড়যন্ত্র হিসেবে অভিযোগ করেছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোনও দেশের বিরুদ্ধে আরেক দেশের এই ধরনের সশস্ত্র হুমকি কিংবা গোপন অভিযান আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারে। কারণ এমন পদক্ষেপ একটি সার্বভৌম রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে হলেও তা কেবল দুই দেশের সম্পর্কের মাঝেই সীমাবদ্ধ থাকবে না।

তারা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের সাম্প্রতিক ঘোষণার পর ভেনেজুয়েলার উপকূলের কাছে মার্কিন সামরিক বাহিনী একাধিক প্রাণঘাতী অভিযান পরিচালনা করেছে। মার্কিন সৈন্যরা মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িত অভিযোগে ইতোমধ্যে কিছু জাহাজে হামলা চালিয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, অভিযোগ সত্য হলেও আন্তর্জাতিক জলসীমায় যথাযথ আইনি ভিত্তি ছাড়া প্রাণঘাতী বলপ্রয়োগ আন্তর্জাতিক সমুদ্র আইনের লঙ্ঘন এবং তা বিচারবহির্ভূত হত্যার শামিল। আরেকটি সার্বভৌম রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে গোপন কিংবা প্রত্যক্ষ সামরিক পদক্ষেপের প্রস্তুতি নেওয়া জাতিসংঘ সনদেরর গুরুতর লঙ্ঘন।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কারাকাসের সংঘবদ্ধ অপরাধচক্র ট্রেন দে আরাগুয়া-সহ কয়েকটি গোষ্ঠীকে ‘সন্ত্রাসী’ সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছেন। তিনি অভিযোগ করে বলেছেন, এসব চক্রের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে মাদকের চোরাচালান ঘটছে।

সূত্র: এএফপি, রয়টার্স।

এসএস