পরে বেঁচে যান দুজনই
কিডনির জন্য মৃত্যুপথযাত্রী ক্যানসার রোগীকে বিয়ে নারীর
কিডনির জটিল রোগে আক্রান্ত। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন কিডনি প্রতিস্থাপন না করলে আর এক বছরের বেশি বাঁচবেন না। তখন অন্য এক রোগীর পরামর্শে একটি উপায় খুঁজে বের করেন ২৪ বছর বয়সী ওয়াং সিয়াও।
তিনি দুরারোগ্য ক্যানসার আক্রান্তদের একটি গ্রুপে একটি অদ্ভুত প্রস্তাব দেন। ওয়াং জানান, এমন একজন ক্যানসার রোগীকে বিয়ে করতে চান, যার মৃত্যুর পর কিডনিটি তাকে দেওয়া হবে। এর বদলে ওই ক্যানসার রোগীকে সঙ্গ দেওয়া এবং সেবা-যত্ন করবেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
তার এ পোস্ট দেখে সাড়া দেন ২৭ বছর বয়সী ইউ জিয়ানপিং। তার সঙ্গে ওয়াং সিয়াওয়ের রক্তের গ্রুপ মিলে যায়। ফলে তিনি মৃত্যুর পর তার কিডনটিটি ওয়াংকে দিতে আগ্রহ দেখান।
এরপর তারা গোপনে বিয়ে করেন এবং একে-অপরের খোঁজ খবর নেওয়া এবং পরিচর্যা শুরু করেন। তবে পরবর্তীতে ওয়াংয়ের আর কিডনির প্রয়োজন হয়নি। তার শারীরিক অবস্থা ভালো হয়। অপরদিকে ক্যানসার আক্রান্ত ইউ জিয়ানপিংও সুস্থ হয়ে যান।
বিজ্ঞাপন
গতকাল মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে সংবাদমাধ্যম সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট জানিয়েছে, ‘ম্যারিজ অ্যান্ড ফেমিলি’ নামে একটি ম্যাগাজিনে এ দুই দম্পতির জীবনী প্রকাশ করা হয়েছে। এরপর এ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়েছে।
ঘটনা ঘটেছিল মূলত ২০১৩ সালে। ওই বছর ওয়াং নামের ওই তরুণী কিডনি রোগে অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং তার কিডনি প্রতিস্থাপন প্রয়োজন হয়ে পড়ে। তখন কিডনির আশায় তিনি মৃত্যুপথযাত্রী ক্যানসার রোগীকে বিয়ে করেন। কিন্তু পরবর্তীতে দুজনই সুস্থ হয়ে যান।
এরমধ্যে ওয়াং তার স্বামীর প্রতি দুর্বল হয়ে পড়েন এবং তাকে ভালোবেসে ফেলেন। তখন শুধুমাত্র আর কিডনির প্রত্যাশায় তিনি তার সেবা করতে থাকেননি।
এর বদলে স্বামীর সঙ্গে হাসপাতালে যেতেন ওয়াং। বিভিন্ন সময় দেখা সাক্ষাৎ করতেন। ক্যানসার আক্রান্ত ইউ যেন বোন ম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্ট করাতে পারেন সেজন্য রাস্তার পাশে একটি দোকানে ফুল বিক্রি শুরু করেন। ওই দোকানে ফুল বিক্রির কারণ উল্লেখ করে একটি কাগজ ঝুলিয়ে রাখতেন। যা দেখে অনেকে তাকে সহায়তা করেন। এভাবে ৫ লাখ ইউয়ান জমিয়ে ফেলেন তিনি। যা দিয়ে পরবর্তীতে স্বামীর অস্ত্রোপচার করান ওয়াং।
তার স্বামী ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার আগে বিজনেস ম্যানেজার হিসেবে কাজ করতেন। তার মা জীবিত ছিলেন না। বাবা থাকলেও তার চিকিৎসার ব্যয় মেটাতে মেটাতে তিনিও অসহায় হয়ে পড়েন। ওয়াং বিয়ের সময় স্বামীকে কথা দিয়েছিলেন, তার মৃত্যুর পর তার বাবার দেখাশুনাও করবেন তিনি। কিন্তু সেগুলোর আর প্রয়োজন হয়নি।
তাদের এ জীবন কাহিনী নিয়ে ‘ভিভা লা ভিদা’ নামে একটি ছবি বানানো হয়। যা ২০২৪ সালে চীনে প্রদর্শিত হয়। ছবিটি ব্যাপক ব্যবসা সফলও হয়।
সূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট
এমটিআই