পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্র উত্তর কোরিয়ার ‘সবচেয়ে বড় শত্রু’ যুক্তরাষ্ট্র বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন। উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থা কেসিএনএ’র বরাত দিয়ে শনিবার (৯ জানুয়ারি) একথা জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।

শুক্রবার (৮ জানুয়ারি) এক অনুষ্ঠানে কিম বলেন,‘যুক্তরাষ্ট্রকে পরাজিত করার লক্ষ্য নিয়েই আমাদের কাজ করতে হবে। তারা (যুক্তরাষ্ট্র) আমাদের প্রধান শত্রু এবং উন্নয়নের বড় বাধা।’

যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ক্ষমতাগ্রহণের মাত্র ১১ দিন আগে এমন মন্তব্য করলেন কিম জং উন। এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পরেও তার সঙ্গে কথার যুদ্ধে জড়িয়েছিলেন তিনি। পরে অবশ্য ট্রাম্প-কিমের মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে উঠে।

বাইডেনের ক্ষমতাগ্রহণের দিকে ইঙ্গিত করে কিম জং উন বলেন,‘যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতায় কে রয়েছে সেটা কোনো বিষয় না। ক্ষমতায় যেই থাকুক না কেন উত্তর কোরিয়ার প্রতি ওয়াশিংটনের নীতি কখনোই পরিবর্তন হবে না।’

এসময় পিয়ংইয়ংয়ের পারমাণবিক সক্ষমতা আরও বাড়ানোসহ সাম্রাজ্যবাদবিরোধী কর্মকাণ্ড বিস্তৃত করার অঙ্গীকার করেন তিনি।

এদিকে কিম জং উনের এই ‘কড়া’ বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রদপ্তর। এছাড়া বাইডেন শিবিরের মুখপাত্রও এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

উল্লেখ্য, ২০১৮ ও ২০১৯ সালে তিন বার বৈঠকে বসেন ডোনাল্ড ট্রাম্প ও কিম জং-উন। পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের বিনিময়ে উত্তর কোরিয়ার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার প্রশ্নে সিঙ্গাপুর ও ভিয়েতনামে প্রথম দুই দফা বৈঠকে বসেন কিম-ট্রাম্প।

সবশেষ ২০১৯ সালের জুলাই মাসে তাদের বৈঠক হয় দুই কোরিয়ার সীমান্তে অবস্থিত পানমুনজমের একটি বেসামরিক এলাকায়। এর কোনোটিতেই আশানুরূপ ফল পাওয়া যায়নি।

উত্তর কোরিয়াকে পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত করতে অটল যুক্তরাষ্ট্র। তবে পিয়ংইয়ং কখনো জনসমক্ষে বলেনি, তারাও সেটা চায়। পারমাণবিক কর্মসূচির কারণে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞায় বিপর্যস্ত উত্তর কোরিয়ার অর্থনীতি। ফলে দেশটি সেই নিষেধাজ্ঞা থেকে বেরোতে চায়।

এ জন্য ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের ওই সময়গুলোতে ইয়ংবিন নামের একটি পারমাণবিক কেন্দ্র বন্ধের প্রস্তাব দেয় পিয়ংইয়ং। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, অস্ত্র বানাতে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের জন্য আরও অনেক কেন্দ্র রয়েছে দেশটির।

টিএম