খুব শিগগিরই মোদির মন্ত্রিসভায় বড় রদবদল

দুই বছর আগে দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর নরেন্দ্র মোদি কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণ করেননি। আর দিন কয়েকের মধ্যে মন্ত্রিসভার রদবদল করতে পারেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। বহুলপ্রতীক্ষীত প্রথমবারের এই রদবদল হতে পারে বড় আকারে।

আর সাত-আট মাসের মধ্যে পাঁচ রাজ্যের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিধানসভা নির্বাচন। পাঁচ রাজ্যের মধ্যে উত্তরপ্রদেশ আর উত্তরাখণ্ডও রয়েছে। এসব রাজ্যে জয় বিজেপি জন্য রাজনৈতিকভাবে খুবই গুরুপূর্ণ। তাই এবার মন্ত্রিসভার রদবদল করছেন তিনি।

জুনের শুরু থেকে মোদির মন্ত্রিসভায় রদবদলের কথা শোনা যাচ্ছে। সূত্র জানাচ্ছে, আগামী সপ্তাহের মধ্যে রদবদল হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। বড় আকারের রদবদলের জন্য ইতোমধ্যে কিছু রাজ্য থেকে বিজেপি নেতাদের দিল্লিতে ডেকে পাঠানো হয়েছে।

যেমন আসামের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল মোদি ও অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করেছেন। উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী তীরথ সিং রাওয়াতকেও কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় নিয়ে আসা হতে পারে। সম্প্রসারিত মন্ত্রিসভায় আরও অনেকের ঠাঁই হতে পারে।

মাত্র চার মাস আগে তীরথ সিং রাওয়াতকে উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি লোকসভার সাংসদ। নিয়মানুসারে ছয় মাসের মধ্যে তাকে বিধানসভার উপনির্বাচনে জিতে আসতে হবে। বেশ কয়েকটি রাজ্যে কিছু বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন স্থগিত আছে। 

করোনা পরিস্থিতির উন্নতি না ঘটলে নির্বাচন কমিশনও উপনির্বাচন করাবে কি না, তা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে প্রশ্ন রয়েছে। দুই মাসের মধ্যে উপনির্বাচন হলে রাওয়াত মুখ্যমন্ত্রী থাকতে পারবেন। আর নির্বাচনের আয়োজন করা না গেলে তাকে সরতে হবে। 

তবে উপনির্বাচন হলে আর তাতে জিতলে তীরথ সিং মুখ্যমন্ত্রী থাকতেই পারেন। রাওয়াতের সঙ্গে অমিত শাহ ও বিজেপি সভাপতি জে পি নাড্ডার কথা হয়েছে। তারপর তিনি উত্তরাখণ্ড ফিরে গেছেন। উত্তরাখণ্ডের অজয় ভাট বা অনিল বালুনিও কেন্দ্রে মন্ত্রী হতে পারেন।

মধপ্রদেশের সাব্কে কংগ্রেস নেতা জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়াও আছেন মন্ত্রিত্ব পাওয়ার তালিকায়। কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার সময় তাকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। এবার নরেন্দ্র মোদির দেওয়া সেই প্রতিশ্রুতি পালন করা হতে পারে।

উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা নির্বাচন আসন্ন বলে ওই রাজ্য থেকে একাধিক নেতাকে মন্ত্রিত্ব দেওয়া হতে পারে। বরুণ গান্ধীসহ একাধিক নাম নিয়ে জল্পনা রয়েছে। আপনা দল নেত্রী অনুপ্রিয়া প্যাটেলও মন্ত্রী হতে পারেন। তার সঙ্গেও আগে অমিত শাহের কথা হয়েছে।

এছাড়া বিহারের সাবেক উপ মুখ্যমন্ত্রী সুশীল মোদি, মহারাষ্ট্রের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিস, নারায়ণ রানে আর হরিয়ানার ভূপেন্দ্র যাদবের মতো নেতার নামও হবু মন্ত্রী হিসেবে শোনা যাচ্ছে বলে সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো আভাস দিতে শুরু করেছে।

বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের দলও এবারের মন্ত্রিসভায় আসতে পারে। রামবিলাস পাসোয়ানের ভাই পশুপতি পরস সম্প্রতি চিরাগ পাসোয়ানের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে পুরো দলের দখল নিয়ে নিয়েছেন। চিরাগ একা হয়ে গেছেন। নীতীশ চাইছেন পশুপতি মন্ত্রী হোন।

মোদির মন্ত্রিসভার সদস্য এখন ৫৩। তিনি আরও ২৮ জনকে নিতে পারেন। এতটা হয়তো সম্প্রসারিত হবে না। গত এক মাস ধরে মোদি বর্তমান মন্ত্রীদের সাফল্য-ব্যর্থতার হিসাব নিয়েছেন। তাই বর্তমান মন্ত্রীদের দফতর বদলের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।

এএস