ফিলিপাইনে বিমান বিধ্বস্তে নিহত বেড়ে ৪৫
ফিলিপাইনের সামরিক বিমান বিধ্বস্তে প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে অন্তত ৪৫ জনে দাঁড়িয়েছে। ধ্বংসস্তুপ থেকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে কয়েক ডজন মানুষকে। জীবিত উদ্ধার হওয়া মানুষদের পাশের একটি সামরিক হাসপাতাল ভর্তি করা হয়েছে।
দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় সুলু প্রদেশের পাতিকুল এলাকায় রোববার দুপুরে সামরিক বাহিনীর ওই বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। অবতরণের সময় দুর্ঘটনায় পড়া লকহিড কোম্পানির তৈরি সি-১৩০ বিমানটিতে দেশটির সামরিক বাহিনীর ৯৬ জন আরোহী ছিলেন।
বিজ্ঞাপন
ফিলিপাইনের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান জেনারেল কিরিলিতো সোবেজানা জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার পর ঘটনাস্থল থেকে ৫০ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। বিধ্বস্ত বিমানটি সৈন্যদের এক স্থান থেকে অন্য স্থানে পরিবহনের কাজে নিয়োজিত ছিল।
ফিলিপাইনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে অধিকাংশই দেশটির সামরিক বাহিনীর সদস্য। এছাড়া বিমানটি যেখানে বিধ্বস্ত হয়েছে সেখানকার তিন জন বেসামরিক মানুষও রোববারের ওই বিমান দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন।
বিজ্ঞাপন
বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, প্রায় ৩০ বছরের মধ্যে ফিলিপাইনের সামরিক বাহিনীর জন্য আকাশে এটি সবচেয়ে বড় বিপর্যয়। তবে দুর্ঘটনার কারণ সম্পর্কে এখনো নিশ্চিত কিছু জানা যায়নি। বিমানবাহিনী কারণ অনুসন্ধানে তদন্তের কথা জানিয়েছে।
বিধ্বস্ত হওয়ার সময় বিমানটি বিষ্ফোরিত হয় ও ভেঙে যায়। কালো ধোঁয়ায় ছেঁয়ে যায় চারপাশের আকাশ। পরে দেশটির উদ্ধারকর্মীরা ধ্বংসস্তুপ থেকে এখন পর্যন্ত ৪৫টি মরদেহ উদ্ধার করেছে। ভাগ্যক্রমে জীবিত উদ্ধার হয়েছে অর্ধশত মানুষ।
গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে প্রকাশিত ঘটনাস্থলের ছবিতে গাছের মধ্যে পড়ে থাকা বিমানটির ভগ্নাবশেষ দেখা গেছে। দেখা যাচ্ছে ঘটনাস্থলের আকাশ আগুন ও কালো ধোঁয়ায় ঢেকে আছে। তার আশেপাশে রয়েছে বেশ কিছু বহুতল ভবন।
দেশটির সশস্ত্র বাহিনী প্রধান জেনারেল কিরিলিতো সোবেজানা সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘রানওয়েতে নামতে গিয়ে ব্যর্থ হয় বিমানটি। ইঞ্জিন নতুন করে সচলের চেষ্টা করেও লাভ হয়নি। এরপরই মাটিতে আছড়ে পড়ে সেটি।’
সুলুর সামরিক বাহিনীর জয়েন্ট টাস্কফোর্স বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘দুর্ঘটনাকবলিত বিমানটি মাটিতে আঘাত করার আগে বেশ কিছু সৈন্য বিমান থেকে লাফিয়ে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন।’ এখনো জীবিত সেনা উদ্ধার হওয়ার আশার কথাও জানানো হয়েছে।
ফিলিপাইনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ডেলফিন লোরেনজানা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, প্রাথমিক প্রতিবেদনগুলো অনুযায়ী বিমানটিতে তিন পাইলট ও পাঁচ ক্রুসহ মোট ৯৬ জন আরোহী ছিলেন। এখনো পাঁচ জন নিখোঁজ রয়েছেন। উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
বিমানটিতে থাকা বেশিরভাগ সেনা সম্প্রতি তাদের সামরিক বাহিনীর মৌলিক প্রশিক্ষণ শেষ করেছিলেন। তাদেরকে কাগায়ান ডি ওরো থেকে দক্ষিণের দ্বীপ মিন্দানাওয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। পথে জোলো শহরের পাশে তাদের বহনকারী বিমানটি বিধ্বস্ত হয়।
বিধ্বস্ত হওয়া বিমানটি ১৯৮৮ সালে মার্কিন বিমানবাহিনীর বহরে যুক্ত হয়। প্রতিরক্ষা সহযোগিতা চুক্তির আওতায় যুক্তরাষ্ট্র গত জানুয়ারিতে ফিলিপাইনকে যে দুটি ব্যবহৃত হারকিউলেস ফিলিপাইনকে দিয়েছিল তার মধ্যে এটি একটি।
সুলু প্রদেশে ইসলামপন্থি বিদ্রোহীদের সঙ্গে সেনাবাহিনীর দীর্ঘদিন ধরে লড়াই চললেও কর্মকর্তারা বলেছেন, বিমানটিতে হামলা হওয়ার কোনও লক্ষণ দেখা যায়নি। উদ্ধার অভিযান শেষ হয়ে গেলেই ঘটনার তদন্ত শুরু হবে।
এএস