তালেবান কাবুল দখল করে বিজয় ঘোষণার দুদিন পর আফগানিস্তানে যেসব ঘটনা ঘটেছে তার জন্য আমেরিকাকে দায়ী করে রাশিয়ায় মঙ্গলবার প্রকাশিত সংবাদপত্রগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের তীব্র সমালোচনা প্রকাশিত হয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।

রাষ্ট্রায়ত্ত দৈনিক রসিইসকায়া গেজেটায় পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক বিশ্লেষক ফিয়োদোর লুকিয়ানফ দেশটির ঘটনাবলীকে এক ‌‘চরম বিশৃঙ্খলা’ বলে বর্ণনা করে বলেছেন, ‘মার্কিন মদতপুষ্ট প্রশাসন তাসের ঘরের মত ভেঙে পড়েছে। আমেরিকানরা ঘরে ফেরেনি, তারা পালিয়েছে।''

বিবিসির মস্কো প্রতিনিধি স্টিভ রোজেনবার্গ টুইটারে সংবাদপত্রগুলোর পর্যালোচনা করে বলছেন, ‘পত্রিকাগুলোর শিরোনাম হয়েছে মূলত এরকম, ‘একটা চরম বিশৃঙ্খলা’, ‘পশ্চিমা বিশ্ব এবং জো বাইডেনের জন্য পাহাড়-প্রমাণ রাজনৈতিক অপমান।’ 

একটি পত্রিকা এমন প্রশ্নও তুলেছে, ‘রাশিয়াকে কি এখন আফগানিস্তানে সৈন্য পাঠাতে হবে?’ আফগানিস্তানের পরিস্থিতি নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলোর উদ্বেগ, উৎকণ্ঠার মধ্যেই রাশিয়ার সংবাদমাধ্যমগুলো মঙ্গলবার এমন প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার বিষয়টি নজরে আসলো।

এদিকে আফগানিস্তানে মস্কোর রাষ্ট্রদূত দিমিত্রি ঝিরনভ মন্তব্য করেছেন, কাবুল দখলের পর তালেবান প্রথম ২৪ ঘণ্টায় শহরটিকে যতটা নিরাপদ করে তুলেছে, আফগানিস্তানের আগের প্রশাসনের অধীনে রাজধানী এতটা নিরাপদ ছিল না বলে মনে হচ্ছে তার।

প্রসঙ্গত, তালেবানরা আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের সহযোগী দেশগুলোর কর্মীরা রাজধানী ছাড়তে শুরু করলেও রাশিয়া, চীন ও ইরান ইঙ্গিত দিয়েছে, কাবুলে তাদের দূতাবাস বন্ধ করার কোনো পরিকল্পনা নেই।

রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গতকাল রোববার বলেছে, তাদের আফগানিস্তান ছাড়ার কোনো পরিকল্পনা নেই। তালেবানদের সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলার ব্যাপারে তারা আশাবাদী। তবে তালেবানকে শাসক হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার কোন তাড়া আপাতত নেই।

প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিশেষ প্রতিনিধি কাবুলে রুশ দূতাবাসের মাধ্যমে তালেবান নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। সরকারের পতন ও রাজধানী কাবুল তালেবানের হাতে চলে যাওয়ার পরদিন রাশিয়ার পক্ষ থেকে এমন কথা জানানো হয়।

তিনের বিশেষ প্রতিনিধি জমির কাবুলভ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‌‘তারা কাবুলের সাথে কথা বলছে। এই মুহূর্তে সেখানে সব রকম যোগাযোগ করা হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে কাবুলে রাশিয়ার দূতাবাস।’

পুতিনের বিশেষ প্রতিনিধি জমির কাবুলভ রয়টার্সকে বলেন, ‘আমাদের দূতাবাস কর্তৃপক্ষ আমাদের দূতাবাসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার স্থায়ী প্রক্রিয়া তৈরির জন্য তালেবানের শীর্ষ নেতৃত্বের দ্বারা বিশেষভাবে নিযুক্ত প্রতিনিধিদের সাথে যোগাযোগ রাখবে।’

এএস