সৌদি-আমিরাতে অস্ত্র বিক্রি বন্ধে বাইডেনের প্রতি আহ্বান
যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের উদ্দেশ্যে ইয়েমেনের সংঘাত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের কাছে অস্ত্র বিক্রি বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)।
প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবাসাইটে সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ সম্পর্কে বলা হয়, ‘গত কয়েক বছর ধরে ইয়েমেনের বিবাদমান গোষ্ঠীগুলো ধারাবাহিকভাবে যুদ্ধের নীতি লঙ্ঘন করে যাচ্ছে যুদ্ধাপরাধের সঙ্গে তাদের যুক্ততার হার দিন দিন বাড়ছে।’
বিজ্ঞাপন
এইচআরডব্লিউর ইয়েমেন শাখার গবেষণাকর্মী আফরাহ নাসেরের লেখা ওই প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় বলা যায়, সত্যিকারভাবে জবাবদিহিতার আওতায় আনার আগ পর্যন্ত ইয়েমেনে সংঘাত বন্ধ করার কোনো সদিচ্ছা বিবাদমান গোষ্ঠীগুলোর নেই। তাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা নিশ্চিত করতে এখন প্রয়োজন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের এগিয়ে আসা।’
‘তবে বাইডেন প্রশাসন এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের কাছে যদি অস্ত্র বিক্রি বন্ধ করা হয়, সেক্ষেত্রে অন্তত ইয়েমেনে যথেচ্ছ হামলার ঘটনা কমবে এবং এ পর্যন্ত যতগুলো যুদ্ধাপরাধ ঘটেছে, সেগুলো তদন্তের পরিবেশও সৃষ্টি হবে।’
বিজ্ঞাপন
আমিরাত সরকারের পক্ষ থেকে এইচআরডব্লিউর এই আহ্বানের কোনো প্রতিক্রিয়া না জানানো হলেও সৌদি আরবের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ প্রতিবেদরে প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছে, ইয়েমেনের বৈধ সরকারের আহ্বানে সাড়া দিয়েই সেখানে সেনাবাহিনী পাঠিয়েছে সৌদি আরব। ইয়েমেনের ইরান সমর্থিত বিদ্রোহীরা পুরো মধ্যপ্রাচ্যের শান্তির জন্য বড় হুমকি- এ বিষয়ে আরবের দেশগুলোও একমত।
এর আগে আমিরাত যদিও জানিয়েছিল- ইয়েমেন থেকে সেনাসদস্যদের প্রত্যাহার করে নিয়েছে দেশটি, কিন্তু তা নাকচ করে ইয়েমেন সরকার বলেছে , আমিরাত এখনো দেশটি থেকে তার সেনা সদস্যদের প্রত্যাহার করেনি।
২০১৪ সালে ক্ষমতাসীন সরকারকে হটিয়ে হুথি বিদ্রোহীরা রাজধানী সানা দখল করে নেয়ার মধ্যে দিয়ে সংঘাত শুরু হয় ইয়েমেনে। পরিস্থিতি আরও গুরুতর রূপ নেয় ২০১৫ সালের মার্চে, সৌদি সমর্থনপুষ্ট সরকারপন্থি মিলিশিয়া বাহিনী যখন হুথি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে।
উভয়পক্ষের সংঘর্ষে বিধ্বস্ত ইয়েমেনে প্রয়োজনীয় খাবার ও সুপেয় পানির অভাবে ধুঁকছেন বর্তমানে আড়াই কোটি মানুষ, যা দেশটির মোট জনসংখ্যার ৮৪ শতাংশ।
চলমান সংঘাতের কারণে করোনা মহামারি দেখা দেয়ারও আগে ইয়েমেনের স্বাস্থ্যসেবা কাঠামো সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়েছে। জাতিসংঘ বরাবরই বলে আসছে, মানবিক বিপর্যয়ের তালিকায় থাকা দেশগুলোর মধ্যে ইয়েমেনের অবস্থান শীর্ষে।
সূত্র: মিডলইস্ট মনিটর।
এসএমডব্লিউ