সাক্ষরতার হার ৯৬ শতাংশের বেশি রয়েছে এমন এক এলাকায় আপনি রাস্তার ধারে বিনামূল্যের বইয়ের ছোট ঘর দেখতে পেলে কি আশ্চর্য হবেন? না হওয়াটাই স্বাভাবিক। কারণ সেখানকার বেশিরভাগ মানুষের সাক্ষর জ্ঞান রয়েছে, বই পড়ার অভ্যাস রয়েছে।

ভারতের কেরালা রাজ্যের ছোট্ট এক গ্রাম পেরুমকুলাম। যে গ্রামে সামান্য কয়েকশ মিটার দূরত্বের ব্যবধানে রাস্তার পাশে ছোট ছোট অনেক বই ঘর দাঁড়িয়ে আছে। বিনামূল্যে যে কেউ চাইলে এই ঘর থেকে বই নিয়ে যেতে পারেন পড়ার জন্য। পড়া শেষে আবারও সেখানেই রেখে যেতে হয় বই।

প্রত্যন্ত এক গ্রামের এমন বই প্রেম আপনি কখনও হয়তো কোনও শহরে পাবেন না। কিন্তু এক্ষেত্রে ব্যতিক্রমী দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে পেরুমকুলাম।

কেরালার এই গ্রামের নামই যে পাল্টে গেছে। অনেকেই পেরুমকুলামকে এখন পুস্তক গ্রাম অথবা বই গ্রাম হিসেবে ডাকেন। পাখির বাসার মতো ছোট ছোট টিনের চার কোণা ঘরে শুধু বই নয়, আছে সংবাদপত্রও। গ্রামের লোকজন তাদের পছন্দমতো সেগুলো নিয়ে গিয়ে অবসর সময়ে পড়তে পারেন। একইভাবে বই সেখানেই রেখে যান।

বুধবার বিশ্ব সাক্ষরতা দিবসে কেরালার পর্যটন বিভাগ ওই গ্রামের বইয়ের ঘরের একটি ভিডিও টুইট করেছে। এতে দেখা যায়, রাস্তার পাশের ছোট সেই ঘর থেকে একটি বই নিয়ে পাশের বেঞ্চে বসে পড়ছেন এক ব্যক্তি। মানুষ যাতে বই নেওয়ার পর চাইলে সেখানে বসে পড়তে পারেন, সেজন্য বেঞ্চ বসানো হয়েছে ঘরের সামনে।

কেরালার পর্যটন বিভাগ বলেছে, জনসাধারণের জন্য বইয়ের এই ঘর একটি ‘অনন্য ধারণা’ এবং গ্রামবাসীদের অবাধে বই বিনিময় অথবা ধার নেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে। ভারতের মধ্যে কেরালায় যে সাক্ষরতার হার সবচেয়ে বেশি, সেই সত্যও তুলে ধরেছে এটি।

অনেকে গ্রামে শিক্ষার বিস্তার ঘটাতে ‘পুস্তক গ্রাম’ বা ‘বই গ্রাম’ ধারণাটিকে ‘একটি উজ্জ্বল ধারণা’ হিসেবে প্রশংসা করেছেন। টুইটারে একজন লিখেছেন, কেরালায় সাক্ষরতার উচ্চ হারের কারণ তিনি এই ভিডিও দেখে বুঝতে পেরেছেন।

জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা (ইউনেসকো) ১৯৬৬ সালে ৮ সেপ্টেম্বরকে বিশ্ব সাক্ষরতা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। পরের বছর থেকে বিশ্বজুড়ে এই দিবসের উদযাপন শুরু হয়। চলতি বছর শিক্ষা ক্ষেত্রে ডিজিটাল বিভাজন নিরসনের লক্ষ্য নিয়ে এই দিবসটি উদযাপন করা হয়।

সূত্র: এনডিটিভি।

এসএস