আসন্ন সপ্তাহগুলোতে ইরানে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস প্রতিরোধক টিকা কার্যক্রম শুরু হতে পারে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি। তিনি বলেন, এ বিষযয়ে তার সরকার জোরালো প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।

করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে গঠিত জাতীয় টাস্কফোর্সের এক বৈঠকে শনিবার (২৩ জানুয়ারি) প্রেসিডেন্ট রুহানি একথা বলেন।

মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মধ্যে করোনা মহামারিতে সবচেয়ে বিপর্যস্ত দেশ হলো ইরান।

ইরানের প্রেসিডেন্ট বলেন, আজকের বৈঠকে চলতি ফার্সি মাসেই ইরানের টিকা কার্যক্রম শুরু করার ব্যাপারে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানোর কথা ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। আল্লাহ চান তো এটি শুরু হবে এবং এটি হবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ।

তিনি আরও জানান, চলতি ফার্সি বছরের বাকি দিনগুলোতে করোনাভাইরাস-প্রতিরোধক তিনটি টিকা ইরানের বাজারে আসবে। আগামী ২১ মার্চ দেশটিতে ফার্সি নতুন বছর শুরু হবে।

রুহানি বলেন, এসব টিকার কোনো কোনোটা সম্পূর্ণভাবে দেশে তৈরি, বাকিগুলো যৌথভাবে তৈরি। এর পাশাপাশি একটি বহুজাতিক কোম্পানির উৎপাদিত এক কোটি ৬০ লাখ কোভ্যাক্স টিকা গ্রহণ করবে ইরান। এছাড়া, আরও বিভিন্ন জায়গা থেকে টিকা কেনার চেষ্টা করছে তেহরান।

ইরানি প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘দেশে উদ্ভাবিত টিকা হাতে না আসা পর্যন্ত আমাদের বিদেশি টিকা প্রয়োজন। দেশের টিকা বাজারে পর্যাপ্ত পরিমাণে না আসা পর্যন্ত বিদেশ থেকে টিকা আমদানি করা হবে।’

এর আগে চলতি মাসের শুরুর দিকে যুক্তরাষ্ট্র এবং ব্রিটেনের করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ইরান। গত ৮ জানুয়ারি দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি এই নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দেন।

সেসময় ইরানের এই নেতা বলেছিলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র এবং ব্রিটেনের ভ্যাকসিন দেশে আমদানি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আমি এই নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে ইরানের কর্মকর্তাদের জানিয়েছি এবং এখন প্রকাশ্যে বললাম।’

আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি দাবি করেছিলেন, ‌‌যুক্তরাষ্ট্র যদি করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন তৈরি করতে পারতো, তাহলে তাদের নিজ দেশে করোনায় এর ধরনের বিপর্যয় ঘটতো না।

মধ্যপ্রাচ্যে নভেল করোনাভাইরাস মহামারিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দেশ ইরান। স্থানীয় বিজ্ঞানীদের তৈরি করোনাভাইরাসের প্রথম একটি ভ্যাকসিন গত মাসের শেষের দিকে মানবদেহে পরীক্ষা শুরু করেছে দেশটি।

যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞায় টিকা আমদানি করতে না পারলেও দেশীয় ভ্যাকসিন করোনাভাইরাস মহামারিকে হারাতে সহায়তা করবে বলে দাবি করেছে ইরান।

প্রসঙ্গত, মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে টিকা কিনতে না পারলেও গত মাসে নিজেদের উদ্ভাবিত করোনা টিকা মানবদেহে প্রয়োগ করে পরীক্ষা শুরু করেছেন ইরান। তেহরান টিকাটির নাম রেখেছে ‘কোভ-ইরানব্লেসিং’।

তবে দেশটির কোনো সাধারণ নাগরিকের দেহেও এই টিকার প্রয়োগ করা হচ্ছে না। পরীক্ষামূলকভাবে যেসব স্বেচ্ছাসেবকের ওপর এই টিকা প্রয়োগ করা হচ্ছে, তারা হচ্ছেন টিকার উদ্ভাবক রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের কর্মী।

সূত্র: আরব নিউজ

টিএম