চীনের একটি স্বর্ণখনিতে বিস্ফোরণের ফলে আটকে পড়া ১১ শ্রমিককে জীবিত উদ্ধার করেছেন দেশটির উদ্ধারকর্মীরা। ভূপৃষ্ঠের ৬০০ মিটার গভীরে আটকে পড়ার দুই সপ্তাহ পর তাদের উদ্ধার করা হয়েছে বলে চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

গত ১০ জানুয়ারি চীনের পূর্বাঞ্চলের শ্যাংনদং প্রদেশের ইয়ানতাই শহরের হুশান এলাকার একটি স্বর্ণখনিতে বিস্ফোরণের ফলে খনি থেকে নির্গমন পথ এবং বাইরের পৃথিবীর সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যায়। খনির নির্গমণ পথটি নির্মাণাধীন ছিল।

খনিতে বিস্ফোরণের পর আটকে পড়া শ্রমিকদের মধ্যে প্রাথমিকভাবে ১১ জন বেঁচে ছিলেন। উদ্ধার তৎপরতার একপর্যায়ে আটকে পড়া শ্রমিকদের সঙ্গে টেলিফোন সংযোগ স্থাপন করা হয় এবং দীর্ঘ ও সরু একটা সুড়ঙ্গের মধ্য দিয়ে খাবার ও ওষুধ পাঠানো হয়। অবশ্য খনিতে বিস্ফোরণের কারণ এখনও জানা যায়নি।

চীনা রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে বিবিসি বলছে, খনি থেকে উদ্ধার করে আনা শ্রমিকরা এখন ‘খুবই দুর্বল’। আলোতে তাকাতে পারছিলেন না এবং উদ্ধারের পরই তাদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

এর আগে চীনের রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যম জানিয়েছিল, বন্ধ হয়ে যাওয়া ওই নির্গমণ পথ দিয়ে একটি ছোট সরু সুড়ঙ্গ করতে সমর্থ হয়েছেন উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা। সেই সুড়ঙ্গ দিয়েই দড়ির সাহায্যে শ্রমিকদের পাঠানো হচ্ছে খাদ্য, ওষুধ, কাগজ ও পেন্সিল।

সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ২০০০ ফুট গভীরে আটকে পড়া ওই শ্রমিকদের উদ্ধারে খনি এলাকার আশেপাশে বেশ কয়েকটি সুড়ঙ্গ তৈরির চেষ্টা উদ্ধারকারী কর্মীরা করছেন বলেও জানিয়েছিল দেশটির রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যমটি।

গত ১০ জানুয়ারি চীনের পূর্বাঞ্চলের শ্যাংনদং প্রদেশের ইয়ানতাই এলাকায় নির্মাণাধীন হুশান সোনার খনিতে বিস্ফোরণের পর বহিরাগমন পথ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা বিকল হলে খনিটির ২২ জন ভূগর্ভে আটকা পড়েন।

জীবিতদের খোঁজে এরপর থেকে তল্লাশি শুরু করে উদ্ধারকর্মীরা। অবশেষ নয়দিন পর তারা টের পায় যে ভেতরে আটকেপড়া শ্রমিকদের অনেকে এখনও বেঁচে আছেন। ওপর থেকে ড্রিলের মাধ্যমে একটি দীর্ঘ ও পাতলা যোগাযোগ যন্ত্রের মাধ্যমে উদ্ধারকর্মীরা কিছু  খনি শ্রমিকের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করতে সমর্থ হওয়ার পর ভেতরের গর্তে তারা খাদ্য, ওষুধ, কাগজ ও পেন্সিল পাঠায়।

চীনে খনি দুর্ঘটনা খুব অস্বাভাবিক কোনো ঘটনা নয় এবং এ বিষয়ে নিরাপত্তামূলক পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষেত্রেও উদাসীন দেশটির সরকার। গতবছর ডিসেম্বরে চীনের একটি কয়লাখনিতে বিষাক্ত গ্যাস কার্বন মনোক্সাইডের নিঃসরণের ফলে ২৩ খনি শ্রমিক মারা গিয়েছিলেন।

এর তিন মাস আগে সেপ্টেম্বরে একই কারণে অপর একটি কয়লা খনিতে মারা গিয়েছিলেন ১৬ জন শ্রমিক। এর আগের বছর ২০১৯ সালে চীনের গুইঝৌ রাজ্যের একটি কয়লাখনিতে বিস্ফোরণের কারণে মারা গিয়েছিলেন ১৪ জন শ্রমিক।

সূত্র: বিবিসি

টিএম