ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীদের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা এক মাসের জন্য স্থগিত করেছে ওয়াশিংটন। হুথিদের ওপর ট্রাম্প প্রশাসনের দেওয়া ‘সন্ত্রাসী সংগঠনের’ তকমা পর্যালোচনার পর সোমবার (২৫ জানুয়ারি) এ সিদ্ধান্ত নেয় বাইডেন প্রশাসন। এর ফলে হুথি বিদ্রোহীরা আপাতত এক মাসের জন্য সবার সঙ্গে অর্থনৈতিক লেনদেন করতে পারবে।

এদিকে বাইডেন প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তের পর ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীদের সঙ্গে অর্থনৈতিক লেনদেনের অনুমতি দিয়ে একটি লাইসেন্স ইস্যু করেছে মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয়। সোমবার মার্কিন অর্থ বিভাগের ইস্যু করা ওই লাইসেন্স অনুযায়ী- হুথি আন্দোলন বা যেসব প্রতিষ্ঠানে হুথিদের ৫০ শতাংশ বা তার বেশি বিনিয়োগ আছে, সেসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বাণিজ্য বা ব্যবসায়িক লেনদেনের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে।

তবে যুক্তরাষ্ট্রের কালো তালিকায় থাকা হুথিদের নেতারা এই স্থগিতাদেশের বাইরে থাকবেন। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হুথি বিদ্রোহীদের ‘সন্ত্রাসী’ গোষ্ঠীর তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে তাদের সঙ্গে সব ধরনের অর্থনৈতিক লেনদেন নিষিদ্ধ করেছিলেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রস্তাবিত পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিংকেন সম্প্রতি বলেছিলেন, ইয়েমেনে হুথিদের সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার যে পদক্ষেপ ওয়াশিংটন নিয়েছিল তা পুনর্মূল্যায়ন করবে বাইডেন প্রশাসন।

এছাড়া গত শুক্রবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বলেছিলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ওই সিদ্ধান্ত পুনর্মূল্যায়নের কাজ শুরু করেছে নতুন প্রশাসন।

তিনি আরও বলেন, প্রস্তাবিত পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিংকেন এ বিষয়ে পরামর্শ দেওয়ার পরই বিষয়টি পুনর্মূল্যায়নের কাজ শুরু করে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর।

মার্কিন এ মুখপাত্র বলেছিলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে বাইডেন প্রশাসন প্রকাশ্যে আলোচনা করবে না এবং এ বিষয়ে সরাসরি কোনো মন্তব্য করবে না। তবে ইয়েমেন ইস্যুটিকে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখে আমরা খুব দ্রুত পুনর্মূল্যায়নের কাজ শেষ করবো।’

উল্লেখ্য, ২০১২ সালে ‘আরব বসন্ত’ নামে পরিচিত বিপ্লব প্রতিরোধের লক্ষ্যে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আলি আবদুল্লাহ সালেহর পদত্যাগ করার মধ্য দিয়ে শুরু হয় ইয়েমেন সংকটের। এরপর একপর্যায়ে রাজধানী সানা দখল করে নেয় ইরান সমর্থিত এই শিয়া মিলিশিয়া গোষ্ঠী।

পরে সৌদি আরবের নেতৃত্বে কয়েকটি আরব দেশ হুথিদের হটাতে ইয়েমেনে হামলা করে। সেই যুদ্ধ এখনও চলছে। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার দাবি- দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা এই যুদ্ধের কারণে ভয়াবহ মানবিক সংকটের মুখে পড়েছে নারী-শিশুসহ দেশটির বেসামরিক জনগণ।

তবে এরপরও সৌদি আরবের প্রতি ট্রাম্পের সমর্থন ছিল চোখে পড়ার মতো। এরই ধারাবাহিকতায় ক্ষমতা থেকে বিদায় নেওয়ার মাত্র নয় দিন আগে চলতি মাসের ১১ জানুয়ারি হুথি বিদ্রোহীদের ওপর কঠোর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ট্রাম্প প্রশাসন।

সূত্র: আলজাজিরা

টিএম