বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোস। এ কথা সবার জানা। কিন্তু এই ধনকুবের কেই কি না আপনার মনে হবে নেহায়েত দুধের শিশু! ঠিক তাই। এমন পাঁচ জন ধনকুবের ছিলেন, যাদের সম্পত্তি হিসাব করলে বেজোসকে নেহাতই দুধের শিশু বলে মনে হবে। কিন্তু তারা কারা?

এ পাঁচ ধনকুবেরের কাছে ৫৭ বছরের আমেরিকান ধনকুবের বেজোসকে নিতান্তই নগণ্য বলে মনে হতে পারে। তবে অ্যামাজনের সাবেক সিইও বেজোসের সম্পত্তির পরিমাণ মোটেও হেলাফেলা করার মতো নয়।

আমেরিকার পত্রিকা ফোর্বর্স জানিয়েছে, চলতি বছরে বেজোসের মোট সম্পত্তির পরিমাণ ১৭ হাজার ৭০০ কোটি ডলার। মাইক্রোসফটের সহ-প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস এবং বার্কশায়ার হ্যাথওয়ের ধনকুবের চেয়ারম্যান ওয়ারেন বাফেকেও ছাড়িয়ে গেছে বেজোসের মোট সম্পদের পরিমাণ।

টানা চার বছর ধরে বিশ্বের ধনী ব্যক্তির মুকুট পরে আছেন বেজোস। তবে মানসা মুসা জীবিত থাকলে এ কথা শুনে বোধ হয় হেসেই খুন হতেন। ১২শ শতকের মালির এ শাসকের কাছে যা সম্পত্তি ছিল, তা এখন গুনলে চোখ কপালে ওঠার জোগাড় হতো।

খুব টেনেটুনে হিসাব করলেও দেখা গেছে যে মানসা মুসার ব্যক্তিগত সম্পদের পরিমাণ ছিল ৪৫ হাজার কোটি ডলার। তবে বহু আর্থিক বিশেষজ্ঞের মতে, তার সম্পত্তির ঠিকঠাক হিসাব কষা হয়নি। অর্থাৎ ৪৫ হাজার কোটি ডলারের থেকে বেশি সম্পদের অধিকারী ছিলেন মুসা।

১২শ শতক পেরিয়ে এবার আসা যাক ১৫শ শতকে। সে সময়ে জেকব ফাগার নামে জার্মানির এক ব্যবসায়ীর সম্পত্তিও বেজোসের থেকে বেশি ছিল।

ব্যবসার পাশাপাশি ব্যাংকার হিসাবেও নাম কুড়িয়েছিলেন ফাগার। ব্যাংকার হিসাবে সম্পত্তির নিরিখে সর্বকালীন রেকর্ড ভেঙে দিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি ফাগারের কাছে খনির মালিকানাও ছিল। আজকের অর্থব্যবস্থার নিরিখে তার সম্পত্তির মোট পরিমাণ ৪০ হাজার কোটি ডলার।

আমেরিকার ব্যবসায়ী জন ডি রকেফেলারকে সে দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে ধনী বলে মনে করেন অনেকে। আবার আধুনিক বিশ্বের ধনীদের তালিকায়ও তার নাম শীর্ষ স্থানে বলেও দাবি।

নিজের চেষ্টার বিপুল সম্পত্তির মালিক হয়েছিলেন আমেরিকার এক হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান রকেফেলার। ১৯৩৭ সালে ৯৭ বছর বয়সে মৃত্যুর আগে রকেফেলারের কাছে মোট সম্পত্তির আর্থিক মূল্য আজকের নিরিখে ৩৫ হাজার কোটি ডলার। এক সময় আমেরিকার অপরিশোধিত তেল এবং তৈলজাত দ্রব্যের ৯০ শতাংশই ছিল তার দখলে।

আমেরিকার ইস্পাত শিল্পে কার্যত বিপ্লব এনেছিলেন অ্যান্ড্রিউ কার্নেগীর ব্যবসায়িক বুদ্ধি। ১৯ শতকে স্কটিশ-আমেরিকান কার্নেগীর ব্যবসায়িক সাম্রাজ্য পশ্চিম গোলার্ধের অর্থনীতির ছবিটাই বদলে দিয়েছিল।

১৯ শতকে আমেরিকার গাড়ি বা আবাসন শিল্প থেকে রেল— সবকিছুতেই কার্নেগীর সংস্থার ইস্পাতের জোগান ছিল। ফলে প্রভূত সম্পত্তির মালিকানা ছিল তার। আজকের নিরিখে কার্নেগীর মোট সম্পদের পরিমাণ ৩১ হাজার কোটি ডলার।

বিশ্বের ধনকুবেরদের তালিকায় মির ওসমান আলি খানের নামও রয়েছে। ব্রিটিশ শাসনকালে হায়দ্রাবাদের শেষ নিজাম ছিলেন তিনি। ১৯৩৭ সালে বিশ্বের ধনীতম ব্যক্তির শিরোপা পেয়েছিলেন মির ওসমান। এক সময় তার মোট সম্পত্তি ছিল ২১ হাজার কোটি ডলারের। ফলে মোট সম্পত্তির নিরিখে বেজোসকে হেসেখেলে গোল দিতে পারতেন মির ওসমানও।

সূত্র: আনন্দবাজার

এসএসএইচ