দীর্ঘ হচ্ছে দরিদ্রদের বঞ্চনা, ভ্যাকসিন পেতে পেতে ২০২৩ সাল
বিশ্বজুড়ে মহামারি ডেকে আনা করোনাভাইরাসের শেষের আশা জাগানো ‘ভ্যাকসিন’ বিশ্বের ৮৫টিরও বেশি দরিদ্র দেশে ২০২৩ সালের আগে ব্যাপকভাবে সহজলভ্য হবে না। ব্রিটিশ প্রভাবশালী সাময়িকী ইকোনমিস্টের গবেষণা বিভাগ ইকোনমিস্ট ইনটেলিজেন্স ইউনিটের এক গবেষণায় এই তথ্য উঠে এসেছে বলে বুধবার খবর দিয়েছে রয়টার্স।
এতে বলা হয়েছে, বিশাল জনসংখ্যার ভারত এবং চীনে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন প্রদান কার্যক্রম ২০২২ সালের শেষ পর্যন্ত গড়াতে পারে এবং ৮৫টির বেশি দরিদ্র দেশে ভ্যাকসিনের ব্যাপক সহজলভ্যতা দীর্ঘায়িত হয়ে অপেক্ষা বাড়তে পারে ২০২৩ সালের শেষের দিক পর্যন্ত।
ইতিহাসের দ্রুততম সময়ে ভ্যাকসিনের আবিষ্কার এক বছরের বেশি সময়ের করোনা মহামারির অবসানের আশা জাগালেও এর বণ্টন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। উৎপাদন সমস্যা এবং ওষুধ প্রস্তুতারক কোম্পানিগুলোর সঙ্গে ধনাঢ্য দেশগুলোর বিশাল চুক্তির কারণে ভ্যাকসিনের অসম বণ্টনের শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
আগামী গ্রীষ্মের মধ্যে ফাইজার-বায়োএনটেক এবং মডার্নার কাছে থেকে আরও ২০ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন কেনার লক্ষ্য নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন
ইউরোপে অ্যাস্ট্রাজেনেকা এবং অন্যান্যদের সরবরাহ বিলম্বিত হওয়ার হতাশা থেকে ভ্যাকসিনের রফতানি সীমিত করার একটি প্রস্তাব করেছে ইউরোপীয় কমিশন।
বিজ্ঞাপন
গবেষণায় ইকোনমিস্ট ইনটেলিজেন্স ইউনিটের পরিচালক অ্যাগাথি ডেমাইস বলেছেন, ২০২৩ সালের আগে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ব্যাপক পরিসরে ভ্যাকসিন সহজলভ্য হওয়ার সম্ভাবনা নেই। এসব দেশের কিছুতে— বিশেষ করে দরিদ্র দেশগুলোতে তরুণ জনগোষ্ঠীর সংখ্যাধিক্য রয়েছে; তারা ভ্যাকসিন বণ্টনের বিলম্বের কারণে নেয়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলতে পারেন।
করোনার উত্থান এবং বৈশ্বিক মহামারি
• ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহানে প্রথম করোনা শনাক্ত হয়
• চীনে করোনায় প্রথম প্রাণহানি ঘটে ৯ জানুয়ারি
• ১৩ জানুয়ারি চীনের বাইরে প্রথম করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয় থাইল্যান্ডে
• এই ভাইরাসে বিশ্বে প্রথম প্রাণহানি ঘটে ২ জানুয়ারি ফিলিপাইনে
• ১১ মার্চ ‘করোনা মহামারি’ ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা
আফ্রিকার বেশিরভাগ দেশে গণহারে টিকাদান ২০২৩ সালের আগে শুরু হওয়ার সম্ভাবনা নেই। অন্যদিকে, এশিয়ার অনেক দেশে এই অপেক্ষা ২০২২ সালের শেষ দিক পর্যন্ত করতে হতে পারে।
ইকোনমিস্টের এই গবেষণায় বলা হয়েছে, বিশ্বজুড়ে ভ্যাকসিন সরবরাহে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) উদ্যোগ কোভ্যাক্সের মাধ্যমে ধনী দেশগুলোর অগ্রাধিকারের নীতি এবং উন্নয়নশীল বিশ্বের অনুন্নত অবকাঠামো ব্যবস্থার কারণে ভ্যাকসিনের বণ্টন ধীরগতি হতে পারে।
কোভ্যাক্স বলছে, চলতি বছরে বিশ্বের ৯২টি দরিদ্র দেশে ১৮০ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন সরবরাহ করা হবে। এসব দেশের প্রায় ২৭ শতাংশ মানুষের শরীরে এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা যাবে। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে উহানে উৎপত্তি হওয়া করোনাভাইরাসে বিশ্বজুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা ১০ কোটি ৯৩ লাখ ছাড়িয়েছে এবং প্রাণ গেছে ২১ লাখ ৬৯ হাজারের বেশি।
এসএস