এবার নাভালনির ভাইকে আটক করল পুতিনের পুলিশ
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সমালোচক ও বিরোধী নেতা অ্যালেক্সি নাভালনির ভাই ওলেগ নাভালনিকে আটক করেছে দেশটির পুলিশ। বুধবার (২৭ জানুয়ারি) সহযোগীদের খোঁজে নাভালনির বাসা ও অফিসে তল্লাশির পর তাকে আটক করা হয়।
নাভালনির মুক্তির দাবিতে আন্দোলনের মধ্যেই এই তল্লাশি অভিযান চলে। এছাড়া কারাগারে আটক নাভালনির স্ত্রীর ফ্ল্যাটেও তল্লাশি চালিয়েছে পুলিশ।
বিজ্ঞাপন
এর আগে জার্মানিতে চিকিৎসা শেষে দেশে ফেরার পর অ্যালেক্সি নাভালনিকে আটক করেছিল পুলিশ। স্থগিত দণ্ডের ‘শর্ত লঙ্ঘনের অভিযোগে’ তাকে মস্কো বিমানবন্দর থেকে আটক করা হয়েছিল। পরে তাকে ৩০ দিনের কারাদণ্ড দেয় রাশিয়ার একটি আদালত।
বিজ্ঞাপন
এরপর তীব্র শীত ও সরকারি নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে বিরোধী নেতা অ্যালেক্সি নাভালনির মুক্তির দাবিতে দেশজুড়ে বিক্ষোভ শুরু করে রাশিয়ার মানুষ। সেই বিক্ষোভ থেকে প্রায় চার হাজার মানুষকে আটক করা হয়। আগামী রোববার আবারও বড় ধরনের বিক্ষোভের পরিকল্পনা করছে নাভালনির সমর্থকরা।
অ্যালেক্সি নাভালনির দুর্নীতিবিরোধী ফাউন্ডেশনের ডিরেক্টর ইভান জাদানভ টুইটারে জানান, ওলেভ নাভালনি তার ভাইয়ের অ্যাপার্টমেন্টে অবস্থান করছেন এবং সেখানে তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।
পরে অবশ্য তাকে আটক করা হয়।
সাড়ে তিন বছর কারাবাসের পর ২০১৮ সালে মুক্তি পান ওলেগ নাভালনি। সমালোচকরা বলছেন, ভাই অ্যালেক্সি নাভালনির ওপর চাপ সৃষ্টি করতেই সাজানো মামলায় তাকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।
এর আগে চলতি সপ্তাহের প্রথম দিকে নাভালনির মুক্তির দাবিতে রাস্তায় নেমে আসেন হাজার হাজার রুশ নাগরিক। ভ্লাদিভোসটোকের এক ভিডিওতে দেখা যায়, মাইনাস ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস শীত উপেক্ষা করে খাবারোভস্কের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন হাজার হাজার মানুষ। এ সময় দাঙ্গা পুলিশের সদস্যরা বিক্ষোভকারীদের সড়ক থেকে সরাতে লাঠিচার্জ করেন। পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়; বিক্ষোভকারীরা ‘লজ্জা’ ‘লজ্জা’, ‘দস্যু’ বলে সেসময় স্লোগান দেন।
রয়টার্স জানিয়েছিল, মস্কোতে ৪০ হাজারের বেশি মানুষ নাভালনির মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন। এছাড়াও দেশটির বিভিন্ন শহরে হাজার হাজার মানুষ নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে বিক্ষোভে অংশ নেন।
কে এই নাভালনি?
দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনের কর্মী এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরোধী হিসেবে অত্যন্ত পরিচিত রাজনীতিক নাভালনি। ২০১৮ সালে দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়াইয়ের চেষ্টা করেছিলেন তিনি। কিন্তু অর্থ আত্মসাতের দায়ে দেশটির বিরোধী এই নেতাকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নেওয়া থেকে বিরত রাখা হয়।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রাশিয়ার বিরোধী এই নেতার লাখ লাখ অনুসারী রয়েছেন। চলতি বছর সাইবেরিয়ার স্থানীয় পরিষদ নির্বাচনে নাভালনির কয়েকজন সমর্থক নির্বাচিত হয়েছেন।
গত বছরের আগস্টে বিষাক্ত নার্ভ অ্যাজেন্ট হামলায় মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছিলেন তিনি। এই হামলার জন্য রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে দায়ী করেন তিনি। যদিও ক্রেমলিন এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
সূত্র: রয়টার্স
টিএম