টিকাদান শুরুর ১২ দিনে মহামারি নিয়ন্ত্রণের দাবি ভারতের
• ভারতে করোনার টিকাদান শুরু হয় ১৬ জানুয়ারি
• ১২ দিনে ২৪ লাখ মানুষ পেয়েছেন করোনা টিকা
• ভারতের ৭১৮টি জেলার ১৪৬টিতে গত ৭ দিন সংক্রমণ নেই
• আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে খুলছে সুইমিং পুল, সিনেমা হল
• দেশটিতে করোনায় মারা গেছেন এক লাখ ৫৩ হাজার ৮৪৭ জন
করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঊর্দ্ধগতি নিয়ন্ত্রণের দাবি জানিয়ে ভারত বলছে, দেশটির এক-পঞ্চমাংশ জেলায় এক সপ্তাহ ধরে নতুন করে কোনও সংক্রমণ শনাক্ত হয়নি। দেশটিতে টিকাদান শুরুর মাত্র ১২ দিনের মাথায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের দাবি করলেও ভারতে ইতোমধ্যে মাত্র ২৪ লাখ মানুষকে টিকা দেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
যুক্তরাষ্ট্রের পর বিশ্বে দ্বিতীয় সর্বাধিক করোনা সংক্রমণের রেকর্ড ১৩৫ কোটি মানুষের দেশ ভারতের; যদিও গত সেপ্টেম্বরের মাঝের দিকে সংক্রমণ চূড়ায় পৌঁছানোর পর সম্প্রতি তা উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমে এসেছে। বেশ কিছু গবেষণায় বলা হয়েছে, প্রাকৃতিকভাবে সংক্রমণের মাধ্যমে ভারত ইতোমধ্যে হার্ড ইমিউনিটি অর্জন করে থাকতে পারে।
ভারত সফলভাবে মহামারি নিয়ন্ত্রণ করেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে মাত্র ১২ হাজার মানুষ নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।
ভারতের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন
বিজ্ঞাপন
মন্ত্রী বলেন, ভারতের ৭১৮টি জেলার মধ্যে ১৪৬টিতে গত এক সপ্তাহ ধরে নতুন সংক্রমণ শনাক্ত হয়নি। এছাড়া গত দুই সপ্তাহ ধরে অন্য ১৮টি জেলায় করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েনি। হর্ষ বর্ধন বলেন, করোনা সংক্রমণের চিত্র নিম্নমুখী করেছে ভারত।
সংক্রমণ কমে আসায় দেশটির সরকার বলছে, আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে সরকারি সুইমিং পুলের ব্যবহার, সিনেমা হল এবং থিয়েটারে ৫০ শতাংশের বেশি আসনে বসার জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে। এছাড়া সব ধরনের প্রদর্শনী হল চালু করে দেয়া হতে পারে।
বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বাধিক জনবহুল এই দেশটিতে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে ভ্যাকসিনের প্রয়োগ শুরু হয়েছে গত ১৬ জানুয়ারি। আগামী জুলাই-আগস্টের মধ্যে দেশটির ৩০ কোটি মানুষকে টিকাদানের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার।
ভারতে এখন পর্যন্ত প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ কোটি ৭০ লাখের বেশি মানুষ এবং মারা গেছেন এক লাখ ৫৩ হাজার ৮৪৭ জন। বিশ্বের যে কয়েকটি দেশে করোনায় মৃত্যুর হার কম, ভারত সেই দেশগুলোর একটি; তরুণ জনগোষ্ঠী বেশি হওয়ায় ভারতে করোনায় মৃত্যুর হার কম।
ভারতের শীর্ষ তিনটি ডায়াগনোস্টিক চেইনের অন্যতম একটি থাইরোকেয়ার টেকনোলজি লিমিটেড। থাইরোকেয়ার বলছে, তারা সাত লাখে বেশি মানুষের শরীরে অ্যান্টিবডি পরীক্ষা করেছে। এতে দেখা গেছে, দেশটির প্রায় ৫৫ শতাংশ মানুষ ইতোমধ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বলছে, সংক্রমণের চেইন ভেঙে ফেলার জন্য কোনও দেশের মোট জনসংখ্যার কমপক্ষে ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ মানুষের ইমিউনিটি দরকার হয়। ভারতের শীর্ষ ভ্যাকসিন কর্মকর্তা বিনোদ কুমার পাল বলেছেন, ভারত এই স্তরে পৌঁছেছে বলে তিনি মনে করেন না। তবে এরচেয়েও কম হার করোনাভাইরাসের বিস্তারের গতি ধীর করতে সহায়তা করে।
দেশটির ভ্যাকসিন প্রয়োগ কৌশল কমিটির প্রধান এই কর্মকর্তা বলেন, আমাদের বেশিরভাগ জনবহুল জেলা ও শহরে এখনও মহামারি অব্যাহত আছে...এক দৃষ্টিকোণ থেকে আপনি এটাকে হার্ড ইমিউনিটি বলতে পারেন।
সূত্র: রয়টার্স।
এসএস