শিশুটির মা বলেছেন, অভিযুক্ত লিবনুস শ্লীলতাহানির উদ্দেশ্যে শিশুটির হাত ধরেছেন এবং প্যান্টের চেইন খুলেছেন I ছবি- প্রতীকী

‘মেয়ে শিশুদের হাত ধরা ও প্যান্টের চেইন খোলা যৌন নির্যাতন নয়’ বলে এক আদেশ জারি করেছে ভারতের মহারাষ্ট্র প্রদেশের বোম্বে হাইকোর্ট। গত ১৫ জানুয়ারি হাইকোর্টের বিচারপতি পুষ্প গানেডিওয়ালার একক বেঞ্চে ৫০ বছর বয়সী এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে পাঁচ বছর বয়সী মেয়ে শিশুকে যৌন নিপীড়নের মামলার ঘটনায় বৃহস্পতিবার আদালত এই পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন। 

অভিযুক্ত লিবনুস কুজুরের বিরুদ্ধে ২০২০ সালের অক্টোবরে ভারতীয় শ্লীলতাহানি আইনের ৩৫৪(ক)-১ ধারা, আইপিসি আইনের ৪৪৮ ধারা এবং শিশু নির্যাতন আইনের ৮, ১০ ও ১২ ধারা মোতাবেক অভিযোগ গঠন করা হয়। শ্লীলতাহানির অভিযোগে তার ৫ বছরের কারাদণ্ডের রায় দেয়া হয়। এই রায়ের বিরুদ্ধে লিবনুস কুজুর আদালতে চ্যালেঞ্জ জানালে বৃহস্পতিবার মেয়ে শিশুদের হাত ধরা-প্যান্টের চেইন খোলা যৌন নির্যাতন নয় বলে পর্যবেক্ষণে জানান বোম্বে হাইকোর্ট।

বিচারপতি গানেডিওয়ালা বলেন, অভিযুক্ত নিজেই মেয়েটির কাছে শ্লীলতাহানির উদ্দেশ্যে গেছে এমন অভিযোগ প্রমাণ করা সম্ভব হয়নি।

হাইকোর্ট বলেছেন, শিশু নিগ্রহ আইনে যৌন নির্যাতনের সংজ্ঞা হিসেবে বলা হয়েছে, কারও সম্মতি ছাড়া যৌনসঙ্গম করলে তা যৌন নির্যাতন হিসেবে ধরা হবে।

বিচারপতি গানেডিওয়ালা বলেন, শিশুটির মায়ের বক্তব্য অনুযায়ী- অভিযুক্ত লিবনুস কুজুর শ্লীলতাহানির উদ্দেশ্যে শিশুটির হাত ধরেছে এবং প্যান্টের চেইন খুলেছে। হাত ধরা ও প্যান্ট খোলা শ্লীলতাহানির পর্যায়ে পড়ে না। হাইকোর্ট আরও বলেছেন, অভিযুক্ত কুজুরের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানি আইনে অভিযোগ প্রমাণ করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে শিশু নির্যাতন আইনের ১২ ধারার সঙ্গে আইপিসি আইনের ৩৫৪(ক)-১ ধারায় অন্যান্য অভিযোগ প্রমাণ করা সম্ভব হয়েছে। 

অভিযোগে বলা হয়েছে, লিবনুস কুজুর ২০১৮ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি শ্লীলতাহানির উদ্দেশ্যে ৫ বছর বয়সী ওই শিশুর মায়ের অনুপস্থিতিতে ঘরে প্রবেশ করেন। শিশুটির মা অফিস থেকে ফিরে অভিযুক্তকে শ্লীলতাহানি করতে দেখে ফেলেন। এই অভিযোগে শিশুটির মা নিম্ন আদালতে মামলা করেন।

পরবর্তীতে হাইকোর্ট শিশু নির্যাতন আইনে অভিযুক্তকে বেকসুর খালাস দিলেও অন্যান্য আইনে বিচার চলমান রয়েছে। আদালত বলেছেন, অন্যান্য আইনে অভিযোগ প্রমাণ না হলে অভিযুক্তকে বেকসুর খালাস দেয়া হবে।

উল্লেখ্য, চলতি মাসে বিচারপতি গানেডিওয়ালা ৩৯  বছর বয়সী এক পুরুষের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির রায় দেন। এই মামলায়ও যৌন নির্যাতনের অভিযোগ প্রমাণ করা সম্ভব হয়নি।

সূত্র: এনডিটিভি।

এইচএকে/এসএস