ওয়াং ওয়েনবিন, ছবি: আলজাজিরা

যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক নিষেধাজ্ঞাকে ‘বেপরোয়া পদক্ষেপ’ উল্লেখ করে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় বলেছে, অবিলম্বে এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না করা হলে চীনের পক্ষ থেকে ‘সমুচিত জবাব’ দেওয়া হবে। মঙ্গলবার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন এই সতর্কবার্তা দেন।

গত শুক্রবার (১০ ডিসেম্বর) চীনসহ ৪ দেশের বিরুদ্ধে মানবাধিকার সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগ। তালিকা থাকা অপর তিন দেশ হলো বাংলাদেশ, উত্তর কোরিয়া ও মিয়ানমার।

মঙ্গলবার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ‍এই নিষেধাজ্ঞাকে যুক্তরাষ্ট্রের ‘উশৃঙ্খল পদক্ষেপ’ উল্লেখ করে বলেন, ‘আমরা যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে আহ্বান জানাচ্ছি- অবিলম্বে যেন এই ভুল সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। পাশাপাশি, দেশটির সরকারের প্রতি আমাদের আহ্বান থাকবে- তারা যেন চীনের অভ্যন্তরীণ বিষয়গুলোতে নাক গলানো বন্ধ করে এবং চীনের ক্ষতি করার চেষ্টা থেকে বিরত থাকে।’

‘যদি যুক্তরাষ্ট্র এভাবে একের পর এক বেপরোয়া পদক্ষেপ নিতে থাকে, তাহলে চীনও দৃঢ়ভাবে এসবের উপযুক্ত জবাব দেবে।’

চলতি মাসের ০৯ ও ১০ ডিসেম্বর ভার্চুয়াল মাধ্যমে বিশ্ব গণতন্ত্র সম্মেলন করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তবে সেই সম্মেলনে চীনসহ বেশ কয়েকটি দেশকে আমন্ত্রণ জানায়নি বাইডেন প্রশাসন।

ঘটনাচক্রে, সম্মেলন যেদিন শেষ হলো- সেই দিন, অর্থাৎ ১০ ডিসেম্বর চীনসহ চার দেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগ।

সোমবারের ব্রিফিংয়ে ওয়াং ওয়েনবিন বলেন, চীন সবসময়ই তার সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা এবং উন্নয়নবিষয়ক স্বার্থকে রক্ষার ব্যাপারে অটল। দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশ জিনজিয়াংয়ে বসবাসরত উইঘুর মুসলিমদের বিষয়ে চীনের কমিউনিস্ট সরকারের গৃহীত নীতির পক্ষেও সাফাই দিয়েছেন তিনি।

এ সম্পর্কে ওয়েনবিন বলেন, ‘চীন নীতিগতভাবে সংঘাত, সন্ত্রাসবাদ, বিচ্ছিন্নতাবাদ ও ধর্মীয় উগ্রপন্থী শক্তিগুলোকে দমনে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।’

‘যুক্তরাষ্ট্রের কোনো উশৃঙ্খল পদক্ষেপ জিনজিয়াংয়ের উন্নতিতে যেমন প্রতিবন্ধকতা আনতে পারবে না, তেমনি চীনের অগ্রগতি ও তার ঐতিহাসিক উন্নয়নের ধারাকে বাধাগ্রস্তও করতে পারবে না।’

জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, চীনের উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ জিনজিয়াংয়ে ১০ লাখ উইঘুর মুসলিম রয়েছেন। বিখ্যাত মানবাধিকার বিষয়ক আইনজীবী ও আন্তর্জাতিক উইঘুর ট্রাইব্যুনালের প্রধান স্যার জেওফ্রে নাইস কিউসি সম্প্রতি আলজাজিরাকে বলেন, চীনের উইঘুর সম্প্রদায়ের মানুষজনকে বাধ্যতামূলক শ্রমদানের পাশাপাশি জন্মহার নিয়ন্ত্রণের জন্য উইঘুর নারী-পুরুষদের জোরপূর্বক বন্ধ্যাকরণ করা হচ্ছে।

চীনের সরকার অবশ্য বরাবরই এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, জীবনমান উন্নয়ন ও ইসলামি উগ্রপন্থা থেকে দূরে রাখতে উইঘুরদের কারিগরি প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে জিনজিয়াংয়ে।

সূত্র: আলজাজিরা

এসএমডব্লিউ