ফাইজারের টিকার অনুমোদন দিল বাহরাইন
যুক্তরাজ্যের পর বিশ্বের দ্বিতীয় দেশ হিসেবে মার্কিন ফার্মাসিউটিক্যাল জায়ান্ট কোম্পানি ফাইজার এবং জার্মানির বায়োএনটেকের তৈরি করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনের অনুমোদন দিয়েছে বাহরাইন। শুক্রবার বাহরাইনের জাতীয় স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ (এনএইচআরএ) ফাইজারের টিকার অনুমোদনের তথ্য নিশ্চিত করেছে।
দেশটির সরকারি সংবাদ সংস্থা বাহরাইন নিউজ অ্যাজেন্সি (বিএনএ) জাতীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মরিয়ম আল-জালাহমার এক বিবৃতির বরাত দিয়ে বলেছে, করোনাভাইরাস মহামারি মোকাবিলায় সরকারের নেয়া প্রচেষ্টায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে ফাইজার/বায়োএনটেকের ভ্যাকসিনের অনুমোদন।
বিজ্ঞাপন
ফাইজার এবং বায়োএনটেকের ভ্যাকসিন বাহরাইনে কবে নাগাদ প্রয়োগ শুরু হতে পারে সেব্যাপারে নির্দিষ্ট করে কোনও সময়সীমা জানাতে পারেননি মরিয়ম আল-জালাহমা।
এর আগে, বুধবার যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ মার্কিন ও জার্মান কোম্পানি ফাইজার-বায়োএনটেকের করোনা ভ্যাকসিন দেশটিতে সর্বত্র প্রয়োগের অনুমোদন দেয়। আগামী সপ্তাহে দেশটিতে এই ভ্যাকসিনের প্রয়োগ শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। ফাইজার এবং বায়োএনটেক বলছে, তাদের তৈরি করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনটি তৃতীয় ধাপের পরীক্ষায় ৯৫ শতাংশ কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
যুক্তরাজ্য ইতোমধ্যে ফাইজার এবং বায়োএনটেকের সঙ্গে এই ভ্যাকসিনের ৪ কোটি ডোজ কেনার চুক্তি সম্পন্ন করেছে। এর ফলে দেশটির ২ কোটি মানুষকে দু’টি করে ডোজ দেয়া যাবে। শিগগিরই দেশটিতে এই ভ্যাকসিনের এক কোটি ডোজ পৌঁছাবে।
উপসাগরীয় অঞ্চলের ক্ষুদে রাষ্ট্র বাহরাইন গত নভেম্বরে চীনের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি সিনোফার্মের তৈরি করোনাভাইরাসের একটি ভ্যাকসিন সম্মুখসারির স্বাস্থ্য কর্মীদের শরীরে প্রয়োগর অনুমোদন দেয়।
বাহরাইনে মহামারি করোনাভাইরাসে এখন পর্যন্ত ৮৭ হাজারের বেশি মানুষ আক্রান্ত এবং ৩৪১ জন মারা গেছেন। দেশটিতে নিযুক্ত ফাইজারের প্রতিনিধি লিন্ডসে ডিচি বলেছেন, বিজ্ঞান জয়ী হবে বলে আমরা প্রথমে ঘোষণা দিয়েছিলাম। ভ্যাকসিন ব্যবহারের অনুমোদনের এই ঘোষণা আমাদের সেই লক্ষ্য অর্জনের সূচনা; যে লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি।
বাস্তবতার নিরীখে বিশ্বে দ্রুততম সময়ে প্রথম করোনা ভ্যাকসিন তৈরির খেতাব বগলদাবা করেছে ফাইজার এবং বায়োএনটেক। একটি ভ্যাকসিন তৈরিতে কয়েক দশক সময়ের দরকার হলেও মাত্র ১০ মাসেই করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনের যুগান্তকরী উদ্ভাবনের মাইলফলকে পৌঁছেছে মার্কিন ও জার্মান এ দুই কোম্পানি।
গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের উহানে উৎপত্তি হওয়া প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন তৈরির জন্য বিশ্বজুড়ে শতাধিক প্রকল্প চলমান রয়েছে। নিরাপদ এবং কার্যকর একটি ভ্যাকসিন খুঁজে পাওয়ার আশায় দিনরাত নিরলস কাজ করে চলেছেন বিজ্ঞানীরা। বিশ্বের দুই শতাধিক দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়া করোনা এখন পর্যন্ত ১৫ লাখ ২৪ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণ কেড়েছে এবং এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৬ কোটি ৬২ লাখের বেশি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিগগিরই ভ্যাকসিন প্রয়োগ কার্যক্রম শুরু হলেও লোকজনকে সতর্কতা এবং ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে করোনাভাইরাসের বিধি মেনে চলতে হবে।
এসএস