ইউক্রেনে রুশবিরোধী ঐক্য সমাবেশে হাজারও মানুষের ঢল
রাশিয়ার আগ্রাসনের তীব্র আশঙ্কার মাঝে ঐক্য প্রদর্শনে হাজার হাজার ইউক্রেনীয় সমাবেশ করেছেন রাজধানী কিয়েভে। ইউক্রেনের নেতা নাগরিকদের আতঙ্কিত না হওয়ার আহ্বান জানালেও শনিবার জনগণ রাস্তায় নেমে এই সমাবেশ করেছেন।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ইউক্রেন সীমান্তে রাশিয়ার লাখ লাখ সৈন্য সমাবেশ ঘিরে তৈরি হওয়া উত্তেজনার জেরে বিশ্ব নেতারা মস্কো যেকোনও মুহূর্তে কিয়েভে হামলা চালাতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। এমন উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরব, জর্ডানসহ বিশ্বের কয়েকটি দেশ নিজ নাগরিকদের ইউক্রেন ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে।
বিজ্ঞাপন
ইউক্রেনের পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোতে যোগদান ঠেকাতে রাশিয়া যুদ্ধংদেহী অবস্থানে গেলেও কয়েকদিন আগে দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লোদিমির জেলেনস্কি বলেছিলেন, গণমাধ্যমে অন্ধকারাচ্ছন্ন যুদ্ধের ভবিষ্যদ্বাণী করা হচ্ছে। এ নিয়ে আতঙ্কিত না হতে দেশটির নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
প্রতিবেশি ইউক্রেনের সীমান্তে এখন পর্যন্ত এক লাখের বেশি সৈন্য সমাবেশ করেছে রাশিয়া। বিশ্ব নেতাদের তীব্র উদ্বেগের মাঝে বড় ধরনের সামরিক মহড়াও চালিয়েছে দেশটি। শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, যেকোনও মুহূর্তে ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরু করতে পারে রাশিয়া। যদিও রাশিয়া এই পরিকল্পনা শুরু থেকেই অস্বীকার করে আসছে।
বিজ্ঞাপন
বার্তাসংস্থা রয়টার্স বলছে, রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ঐক্য দেখাতে শনিবার রাজধানী কিয়েভে হাজার হাজার ইউক্রেনীয় জমায়েত হয়েছিলেন। এ সময় তারা ইউক্রেনের পতাকা এবং বিভিন্ন ধরনের স্লোগান লেখা ব্যানার বহন করেন। কিছু কিছু ব্যানারে ‘ইউক্রেন প্রতিরোধ করবে’, ‘আক্রমণকারীরা অবশ্যই মরবে’ লেখা দেখা যায়।
শনিবার ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় খেরসন অঞ্চলে পুলিশের মহড়ায় যোগ দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লোদিমির জেলেনস্কি। তিনি বলেছেন, ‘রাশিয়ার হামলা যেকোনও সময় হতে পারে। তবে বড় ধরনের যুদ্ধ আসন্ন বলে অতিরঞ্জন করে তথ্য প্রকাশ করা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, আমাদের শত্রুর সর্বোত্তম বন্ধুদের প্রধান উদ্দেশ্য দেশে আতঙ্ক তৈরি করা। আর এসব তথ্য কেবলমাত্র আতঙ্ক উসকে দিচ্ছে; যা আমাদের কোনও ধরনের সহায়তা করবে না। যা ঘটে নাই, তার সঙ্গে আমি একমত অথবা দ্বিমত পোষণ করতে পারি না। এখন পর্যন্ত ইউক্রেনে কোনও ধরনের পূর্ণমাত্রার যুদ্ধ নেই।
২০১৪ সালে রাশিয়ার ক্রিমিয়া দখলের কথা স্মরণ করিয়ে জেলেনস্কি বলেন, আমাদের প্রত্যেকদিন প্রস্তুত থাকতে হবে। এটি গতকাল শুরু হয়নি। এটি ২০১৪ সালে শুরু হয়েছিল। সুতরাং আমরা প্রস্তুত এবং এই কারণেই আমরা এখানে আছি।
শনিবার আরও পরের দিকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মধ্যে ইউক্রেনের উত্তেজনাকর পরিস্থিতি নিয়ে টেলিফোনে আলোচনার কথা রয়েছে।
সূত্র: রয়টার্স।
এসএস