ছবি: রয়টার্স

ইউক্রেন সীমান্ত থেকে রুশ সেনা প্রত্যাহার করে নেওয়া হচ্ছে— এই খবর প্রচারিত হওয়ার পর থেকেই চাঙা ভাব শুরু হয়েছে রাশিয়ার অর্থনীতিতে। ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক বাজারে রুশ মুদ্রা রুবল ও দেশটির বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে রাশিয়া-ইউক্রেন সীমান্তে মোতায়েন ছিল ১ লাখেরও বেশি রুশ সেনা। সীমান্ত ছাড়াও কৃষ্ণ সাগরের দ্বীপ ক্রিমিয়া ও রাশিয়ার অন্যতম মিত্র দেশ বেলারুশে বাড়ানো হয়েছিল রুশ সেনা উপস্থিতি।

সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের অঙ্গরাজ্য ও রাশিয়ার প্রতিবেশীরাষ্ট্র ইউক্রেন কয়েক বছর আগে পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য আবেদন করার পর থেকেই উত্তেজনা শুরু হয়েছে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে। সম্প্রতি ন্যাটো ইউক্রেনকে সদস্যপদ না দিলেও ‘সহযোগী দেশ’ হিসেবে মনোনীত করার পর আরও বেড়েছে এই উত্তেজনা।

ইউক্রেন যেন ন্যাটোর সদস্যপদ লাভের আবেদন প্রত্যাহার করে নেয়, মূলত সেজন্য দেশটির ওপর চাপ সৃষ্টির করতেই সীমান্তে সেনা মোতায়েন করেছিল রাশিয়া। কারণ, ১৯৪৯ সালে গঠিত ন্যাটোকে রাশিয়া বরাবরই পাশ্চাত্য শক্তিসমূহের আধিপত্য বিস্তারের হাতিয়ার হিসেবে মনে করে; এবং ঐতিহাসিকভাবেই বিশ্বের বৃহত্তম দেশ রাশিয়া পাশ্চাত্য আধিপিত্যবাদের বিরোধী।

কিন্তু এই সেনা মোতায়েন ঘিরে ব্যাপক উত্তেজনা শুরু হয় যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্যরাষ্ট্রসমূহের মধ্যে। এক পক্ষের সেনা মোতায়েন ও অপর পক্ষের উত্তেজনায় রীতিমতো যুদ্ধাবস্থা দেখা দেয়। এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক বাজারে রুবল ও রুশ কোম্পানিগুলোর শেয়ারের মূল্যেও নিম্নমূখী হওয়া শুরু করে।

তবে রাশিয়া এই সেনা প্রত্যাহার অব্যাহত রাখবে কিনা তা নিয়ে এখনও সংশয়ে আছে ইউক্রেন ও ন্যাটো। ন্যাটোর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্যরাষ্ট্র যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ট্রাস বুধবার দেশটির বেতার সংবাদমাধ্যম এলবিসি রেডিওকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ সম্পর্কে বলেন, ‘রাশিয়া যদিও বলেছে, তার আগ্রাসনের কোনো পরিকল্পনা নেই, তবে আমরা চাই সীমান্ত থেকে যেন সব রুশ সৈন্যকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।’

ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্র কুলেবা কিয়েভে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘সীমান্ত থেকে যদি সব সেনা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়, কেবল তাহলেই আমরা বিশ্বাস করব— রাশিয়ার হামলা করার কোনো পরিকল্পনা নেই।’

এসএমডব্লিউ