রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত অর্থনীতিতে বড় ধরনের সংস্কার এনে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে বেশিরভাগ খাতে ব্যবসা করার অনুমতি দিয়েছে কিউবা। দেশটির শ্রমমন্ত্রী মার্তা এলেনা ফিতো সম্প্রতি এক ঘোষণায় এ তথ্য জানিয়েছেন।

ঘোষণায় এলেনা ফিতো বলেন, সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দেশের ২ হাজারেরও বেশি খাতে বিনিয়োগ ও ব্যবসার জন্য বেসরকারি বা ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, এর আগে যার সংখ্যা ছিল ১২৭।

সামান্য কিছু খাত রাষ্ট্রের জন্য সংরক্ষিত থাকছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘মোট ১২৪টি খাত সরকারের নিয়ন্ত্রণে রেখে বাকি সবগুলো খাতে বেসরকারি ও ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোকে কাজ করার সুযোগ দেওয়া হবে।’ তবে এই ১২৪টি খাতের তালিকায় কোন কোন খাত রয়েছে তা ওই ঘোষণায় বলেননি কিউবার শ্রমমন্ত্রী।

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের দেওয়া নিষেধাজ্ঞা এবং মহামারীর ধাক্কায় কমিউনিস্ট পার্টিশাসিত কিউবার অর্থনীতিকে বড় ধরনের সংকট মোকাবিলা করতে হচ্ছে বলে জানিয়েছে বিবিসি। 

গত বছর দেশটির অর্থনীতি তিন দশকের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১১ শতাংশ সংকুচিত হয়। বর্তমানে কিউবার নাগরিকদেরকে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের ঘাটতিও মোকাবেলা করতে হচ্ছে। 

তবে কিউবার সরকার দেশটির অর্থনীতিকে ধীরে ধীরে বেসরকারি ও ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের জন্য খুলে দিলেও দৈনন্দিন জীবনে এর প্রভাব পড়তে আরও সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন পর্যবেক্ষকরা।

এর কারণ হিসেবে তারা বলেন, কিউবায় বেসরকারি ও ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোর সবচেয়ে বড় খাত পর্যটন চলতি বছর মহমামারির কারণে মারত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কিউবার অর্থনীতির অন্যতম প্রধান স্তম্ভ এই পর্যটন।

এর বাইরে দেশজুড়ে গড়ে ওঠা কয়েকলাখ ছোট ছোট উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান কারিগরি পণ্য প্রস্তুত, ট্যাক্সি ড্রাইভিং এবং ভোগ্যপণ্য বিক্রয়ের মতো ক্ষুদ্র পরিসরের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত। দেশটির প্রায় ৬ লাখ মানুষ যা মোট শ্রমশক্তির ১৩ শতাংশ, এইসব ছোট উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠানগুলোতে কাজ করেন।

প্রায় ৬ দশকের বৈরী সম্পর্ক শেষে ২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তখনকার প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও কিউবার রাউল কাস্ত্রো দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ব্যাপারে কিছু উদ্যোগ নিলেও পরের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের আমলে তা বদলে যায়।

নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ওবামার ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন; কিউবার সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে আগ্রহও দেখিয়েছেন তিনি। যদিও এ বিষয়টি তার প্রশাসনের অগ্রাধিকার তালিকায় কোথায় অবস্থান করছে, তা এখনো স্পষ্ট নয়।

সূত্র: বিবিসি

এসএমডব্লিউ