পরীক্ষা কেন্দ্রে বিশৃঙ্খলা

শিক্ষানবিশদের আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্তিকরণে বার কাউন্সিলের লিখিত পরীক্ষা শুরু হয় শনিবার (১৯ ডিসেম্বর) সকাল ৯টা থেকে। রাজধানীর ৯টি কেন্দ্রে প্রায় ১৩ হাজার শিক্ষানবিশ আইনজীবী এ পরীক্ষায় অংশ নেন। তবে ‘প্রশ্ন কঠিন’ হয়েছে উল্লেখ করে পরীক্ষা বর্জন করেছেন চার কেন্দ্রের শিক্ষার্থীরা। 

আরও কয়েকটিতে অন্য শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় দিতে বাধা, খাতা টেনে ছিঁড়ে ফেলাসহ কেন্দ্রের গাড়ি ও ভবনে ভাঙচুরসহ পরীক্ষার্থীদের একাংশ বিক্ষোভ করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১২ জনকে আটক করেছে পুলিশ।

পুলিশের দেয়া তথ্যমতে, প্রায় ১৩ হাজার শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে ঢাকার ৯টি কেন্দ্রে পরীক্ষার আয়োজন করা হয়। কিন্তু প্রশ্নপত্র হাতে পাওয়ার পরপরই বিশৃঙ্খলা দেখা দিতে থাকে।

রাজধানীর মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় কলেজ, মোহাম্মদপুর মহিলা কলেজ, মোহাম্মদপুর মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং রাজধানীর মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় কলেজে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়।

এ বিষয়ে মোহাম্মদপুর মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে অংশগ্রহণকারী পরীক্ষার্থী তোফায়েল হোছাইন বলেন, ‘সকাল ৯টায় পরীক্ষা শুরু হয়। এর ১০ মিনিট পরই বিশৃঙ্খলা শুরু হয়। একটু পরই আমার খাতা টেনে নিয়ে যায় বিশৃঙ্খলাকারীরা। পরে আর পরীক্ষাই দিতে পারিনি।’

তিনি বলেন, ‘বিক্ষুব্ধ পরীক্ষার্থীদের অভিযোগ, বার কাউন্সিলের পরীক্ষার যে গতানুগতিক ধারা এ প্রশ্নে সেটার ব্যত্যয় ঘটেছে। প্রশ্ন হয়েছে জুডিসিয়ারি পরীক্ষার মতো। সেটা আমারও মনে হয়েছে। কিন্তু পরীক্ষা দেয়ার চেষ্টা করেছি। সেটাও পারিনি।’

পরীক্ষা বর্জনকারীরা জানান, নতুন করে আবার পরীক্ষা নিতে হবে। লিখিত পরীক্ষা বাতিল করে সরাসরি ভাইভার মাধ্যমে ফলাফল চূড়ান্ত করতে হবে। এটা নিয়ে করোনা পরিস্থিতিতে দীর্ঘ ৬ মাস ধরে আন্দোলনও হয়েছে।

মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বার কাউন্সিলের পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের একাংশ পরীক্ষা বর্জন করেছে। তারা কেন্দ্রের ভেতরে ভাঙচুর চালায়। এতে বার কাউন্সিলের একটি গাড়ি এবং কলেজের কিছু জানালা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের মোহাম্মদপুর জোনের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) মৃত্যুঞ্জয় দে সজল জানান, বার কাউন্সিলের পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে একটি অংশ এই বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে যায় মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত থাকলেও ভাঙচুরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ১২ জনকে আটক করেছে পুলিশ। পরিস্থিতি বর্তমানে স্বাভাবিক রয়েছে।

এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

এ বিষয়ে বার কাউন্সিলের সচিব রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ভাঙচুর বিশৃঙ্খলা সম্পর্কে সঠিক তথ্য আমরা এখনও পাইনি। শুনেছি অনেক পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দিতে পারেননি। সে সংখ্যাটাও ঠিক কত, তা এখনও নিশ্চিত নই। নতুন করে পরীক্ষা হবে কি না- সে বিষয়েও এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।’

তবে ‍বার কাউন্সিলের নির্বাচিত সদস্য অ্যাডভোকেট মোখলেছুর রহমানের দাবি, ৯টি কেন্দ্রের মধ্যে মাত্র একটিতে বিশৃঙ্খলা হয়েছে। সে কারণে ওই কেন্দ্রের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। তবে বাকি সব কেন্দ্রেই সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে।

যেসব প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষার কেন্দ্র ছিল- আজিমপুর গভর্নমেন্ট গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ, শেখ বোরহানউুদ্দিন পোস্ট গ্রাজুয়েট কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, মোহাম্মদপুর মহিলা কলেজ, মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় কলেজ, সেন্ট্রাল উইমেন্স কলেজ, বিসিএসআইআর হাইস্কুল, গভর্নমেন্ট মোহাম্মদপুর মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং ঢাকা মহানগর মহিলা কলেজ।

জেইউ/এমএইচডি/এফআর