জামিন পেলেন রন হক সিকদার
সিকদার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রন হক সিকদারের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় করা হত্যাচেষ্টা মামলায় জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত। শুক্রবার (১২ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার চিফ ম্যাট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আশেক ইমামের আদালত শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
এর আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সুষ্ঠু তদন্ত শেষ না হওয়ায় পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। এ সময় আসামি পক্ষের আইনজীবী কেএম ফুরকান ও শ্রী পান নাথ তার জামিনের আবেদন করলে রাষ্ট্রপক্ষ এর বিরোধিতা করেন। পরে উভয় পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক জামিনের এ আদেশ দেন। এদিন দুপুর আড়াইটায় ঢাকার চিফ ম্যাট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তাকে হাজির করা হয়। আদালতের নেওয়ার পর রনকে হাজতখানায় রাখা হয়।
বিজ্ঞাপন
শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ডিবির গুলশান বিভাগের একটি দল তাকে গ্রেপ্তার করে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডিএমপি গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার (গোয়েন্দা) মশিউর রহমান।
এদিকে, ঢাকা মেট্রোপলিটন গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার ঢাকা পোস্টকে বলেন, ২০২০ সালের ১৯ মে তার বিরুদ্ধে একটি মামলা করা হয়েছিল। মামলা নম্বর ৩। এ মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বাবা মারা গেছে সেজন্য সে দেশে আসতে পারেন এটা আমাদের আগেই সন্দেহ ছিল। আমরা ইমিগ্রেশনে বিষয়টি বলে রেখেছিলাম। সে আজ দেশে আসলে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ তাকে আটক করে। পরে আমরা গ্রেপ্তার করি।
বিজ্ঞাপন
তাকে কি প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে নাকি আদালতে প্রেরণ করা হবে এমন প্রশ্নের জবাবে ডিবির প্রধান বলেন, উনি করোনায় আক্রান্ত ছিলেন। তাকে এখন আমরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করব। তারপর আদালতে পাঠাবো।
পুলিশ জানায়, এক্সিম ব্যাংকের করা একটি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। মামলাটির অপর আসামি রন হক সিকদারের ভাই দিপু হক সিকদার এখনও দেশে ফেরেননি। তিনি পলাতক আছেন। আইন অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানানো হয়।
এক্সিম ব্যাংকের দুই কর্মকর্তাকে নির্যাতন ও গুলি করে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে সিকদার গ্রুপ অব কোম্পানিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রন হক সিকদার ও তার ভাই দিপু হক সিকদারের বিরুদ্ধে রাজধানীর গুলশান থানায় গত বছর মামলা করে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। মামলার বিবরণীতে বলা হয়, গত ৭ মে রন ও দিপু এক্সিম ব্যাংকের এমডি মুহাম্মদ হায়দার আলী মিয়া ও অতিরিক্ত এমডি মুহাম্মদ ফিরোজ হোসেনকে একটি অ্যাপার্টমেন্টে বন্দী করে রাখেন। এমনকি তাদের গুলি করে হত্যা করার চেষ্টা করা হয়।
মামলায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আরও উল্লেখ করে, নির্যাতনের একপর্যায়ে সাদা কাগজে সই নিয়ে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। সিকদার গ্রুপ ব্যাংকটির কাছে ৫০০ কোটি টাকা ঋণ প্রস্তাব দিলে এর বিপরীতে গ্রুপের বন্ধকি সম্পত্তি পরিদর্শনে যান ব্যাংকের দুই কর্মকর্তা। সে সময় এ ঘটনা ঘটে। এতে আরও বলা হয়েছে, গ্রুপের এমডির দাবির তুলনায় বন্ধকি সম্পত্তির মূল্য কম ছিল।
ওই ঘটনার পর থেকেই মামলার দুই অভিযুক্ত রন হক সিকদার ও দিপু হক সিকদার পলাতক রয়েছেন।
এর আগে গত বুধবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দুবাইয়ে বাংলাদেশ সময় আনুমানিক রাত ২টায় রন হক সিকদারের বাবা বিশিষ্ট শিল্পপতি সিকদার গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের কর্ণধার ও বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নুল হক সিকদার মারা গেছেন। পুলিশের সন্দেহ ছিলো রন হক সিকদার বাবার মৃত্যুতে দেশে আসবেন। আর আজই বিমানবন্দর থেকেই তাকে গ্রেপ্তার করা হলো।
টিএইচ/এমএইচএস