ব্লগার ও লেখক অভিজিৎ রায় | ফাইল ছবি

ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যা মামলায় পাঁচ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে এক আসামিকে। রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন অভিজিতের ছোট ভাই অনুজিৎ রায়।

রায় শোনার পর ঢাকা পোস্টকে তিনি বলেন, ‘এই রায়ে আমি সন্তোষ। তবে রায়টি যেন দ্রুত কার্যকর হয়। পাশাপাশি দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক দুই আসামিকে যেন দ্রুত গ্রেপ্তার করা হয়। তারা যদি গ্রেপ্তার না হয় তাহলে যেকোনো মুহূর্তে মুক্তমনা লেখক ও ব্লগারদের শঙ্কায় থাকতে হবে। 

ভাই হত্যার রায়ের দিন আদালতে হাজির হওয়ার কথা থাকলেও শারীরিক অসুস্থতার কারণে তিনি আদালতে হাজির হতে পারেননি। 

সংশ্লিষ্ট আদালতের প্রসিকিউটর গোলাম সারোয়ার খান জাকিরও রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন।

ব্লগার ও লেখক অভিজিৎ রায় হত্যা মামলায় পাঁচ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। অপর একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মুজিবুর রহমান এ আদেশ দেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- মোজাম্মেল হুসাইন ওরফে সায়মন, মো. আবু সিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিব ওরফে সাজিদ ওরফে শাহা, মো. আরাফাত রহমান, সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল হক ওরফে মেজর জিয়া (বরখাস্ত) এবং আকরাম হোসেন ওরফে আবির ওরফে আদনান ওরফে হাসিবুল ওরফে আবদুল্লাহ। অপর আসামি শাফিউর রহমান ফারাবীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল হক ও আকরাম হোসেন পলাতক রয়েছেন। মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে ব্যাপক নিরাপত্তার মধ্যে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তাদের আদালতে হাজির করা হয়। এরপর আসামিদের হাজতখানায় রাখা হয়। পরে সেখান থেকে তাদের ট্রাইব্যুনালে নেওয়া হয়।

২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি বইমেলা চলাকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় ব্লগার অভিজিৎ রায়কে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হন তার স্ত্রী রাফিদা আহমেদ। ওই ঘটনায় অভিজিতের বাবা প্রয়াত অধ্যাপক ড. অজয় রায় শাহবাগ থানায় হত্যা মামলা করেন। ছেলে হত্যার বিচারের আশায় অসুস্থ শরীরে হুইল চেয়ারে বসে ২০১৯ সালের ২৮ অক্টোবর আদালতে এসে সাক্ষ্য দেন ড. অজয় রায়। এর দেড় মাসের মাথায় ২০১৯ সালের ৯ ডিসেম্বর মারা যান তিনি। দেখে যেতে পারলেন না ছেলে হত্যার বিচার।

২০১৯ সালের ১৩ মার্চ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (পরিদর্শক) মো. মনিরুল ইসলাম ট্রাইব্যুনালে মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ওই বছরের ১ আগস্ট ছয় আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মুজিবুর রহমান।

২০১৯ সালের ২৮ অক্টোবর অভিজিতের বাবা অধ্যাপক অজয় রায়ের সাক্ষ্যগ্রহণের মধ্য দিয়ে এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। গত ২১ জানুয়ারি সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়।

টিএইচ/এমএআর