বিএনপির আইন সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেছেন, বিএনপির শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশকে বানচাল করতে পুলিশ ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ-যুবলীগ-ছাত্রলীগ কাকরাইল মোড়ে বিএনপির মহাসমাবেশে আসা নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষের ওপর আক্রমণ করে। একই সাথে সরকারের আজ্ঞাবহ পুলিশ বাহিনী সরকারি দলের এজেন্ডা বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে সমাবেশ বানচালের জন্য মুহুর্মুহু গুলিবর্ষণ, সাউন্ড গ্রেনেড বিস্ফোরণ, টিয়ার শেল নিক্ষেপ করতে করতে নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশ বানচালে লিপ্ত হয়।  

তিনি আরও বলেন, পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে যোগ হয় আওয়ামী লীগের পাল্টা সমাবেশে লগি-বৈঠা নিয়ে আসা আওয়ামী ক্যাডাররা। প্রধান বিচারপতির বাসভবনে কথিত ভাঙচুরের ঘটনাটিও এই নাটকের অংশ, যেন বিএনপি নেতাকর্মীরা বিচার বিভাগ থেকে কোনো ন্যায় বিচার না পান।

আজ (সোমবার) জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন কায়সার কামাল।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের বিদ্যমান আইনে ঢাকায় সভা-সমাবেশ করার ক্ষেত্রে ডিএমপি কমিশনারের অনুমতির কোনো আইনী বাধ্যবাধকতা নেই। তবুও মহাসমাবেশ অনুষ্ঠানের বিষয়টি বিএনপির পক্ষ থেকে ডিএমপি কমিশনারকে বেশ আগেই লিখিতভাবে অবহিত করা হয়। কিন্তু অতীতের মতো এই মহাসমাবেশ বানচাল করার লক্ষ্যে ক্ষমতাসীন দল পুলিশকে ব্যবহার করে তথাকথিত অনুমোদনের নামে নানা ছলচাতুরি করতে থাকে। সমাবেশের এক সপ্তাহ আগে থেকে সারা দেশে অভিযান পরিচালনা করে বিএনপির অসংখ্য নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়। মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়। 

তিনি আরও বলেন, পথে পথে নানা হয়রানি করা হয়। এমনকি সমাবেশপূর্ব রাতে তথাকথিত ককটেল উদ্ধারের নাটক সাজিয়ে ও বিভিন্ন পুরনো মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে মহাসমাবেশের দিন ১২০০ এর অধিক বিএনপি নেতাকর্মীকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। এরপরেও শত বাধা-বিপত্তি, মামলা-হামলা উপেক্ষা করে লক্ষ লক্ষ জনতা বিএনপির মহাসমাবেশে যোগদান করেন। এতে হতবিহ্বল হয়ে ক্ষমতাসীন দল সেই পুরনো খেলায় মেতে ওঠে।  তাদের আক্রমণে একজন যুবদল নেতা শামিম মোল্লা নিহত হন। একজন পুলিশ কন্সটেবলও নিহত হন। পুলিশের টিয়ারসেশেলে গুরুতর আহত একজন সিনিয়র সাংবাদিক রফিক ভূইয়া পরদিন মৃত্যুবরণ করেন। দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে বহু সাংবাদিক গুরুতর আহত হন। 

তিনি বলেন, পুলিশ আওয়ামী লীগের যৌথ হামলায় বিএনপির মহাসমাবেশ পণ্ড করার ঘটনাটি ছিল পূর্ব পরিকল্পিত। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে একের পর এক মিথ্যা ও বানোয়াট মামলা দায়ের, বিএনপি মহাসচিবসহ অন্যান্য নেতাদের গ্রেপ্তার, রিমান্ডে গ্রহণ, বিএনপি অফিসকে তালাবদ্ধ করে রাখা- এ সবই জনপ্রিয় দল বিএনপিকে নেতৃত্বশূন্য করার নীল নকশার অংশ। যাতে বিএনপি এই অবৈধ সরকারের বিরুদ্ধে চলমান ‘এক দফার আন্দোলন’ থেকে বিচ্যুত হয়ে পড়ে। আমরা বিশ্বাস করি গণতন্ত্রের এই লড়াই অব্যাহত থাকবে।

সংবাদ সম্মেলন থেকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ আটক নেতাদের অবিলম্বে মুক্তি ও দায়েরকৃত ‘মিথ্যা’ মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন— অ্যাডভোকেট এ জে মোহাম্মদ আলী, সুব্রত চৌধুরী, সৈয়দ মামুন মাহবুব, বদরুদ্দোজা বাদল, রুহুল কুদ্দুস কাজল, গাজী কামরুল ইসলাম সজল প্রমুখ।

এমএইচডি/এনএফ