হাইকোর্টের রায়ে ভাগ্য ফিরল অন্ধ পারুল বেগমের
নারায়ণগঞ্জের মেয়ে পারুল বেগম। জন্ম থেকেই চোখে দেখতে পারেন না। ইডেন কলেজ থেকে অনার্স মাস্টার্স করা পারুল বেগম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে পরীক্ষা দিয়ে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।
কিন্তু ভাইভা পরীক্ষায় প্রতিবন্ধী কোটা অনুসরণ না করায় শিক্ষক হিসেবে নিয়োগে ব্যর্থ হন তিনি। নিয়োগ বঞ্চিত পারুল বেগমসহ ২৮৫ জন শারীরিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তি হাইকোর্টে রিট করেন।
বিজ্ঞাপন
বিনা পয়সায় তাদের এই মামলা পরিচালনায় এগিয়ে আসেন আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া। রিটের শুনানি নিয়ে গত বছর রুল জারি করেন হাইকোর্ট। রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে হাইকোর্ট পারুল বেগমসহ ২৮৫ জন প্রতিবন্ধীকে নিয়োগ দিতে রায় ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ যুগান্তকারী এ দেন। রায় পাওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে পারুল বেগমসহ রিটকারীদের নিয়োগ দিতে বলা হয়েছে।
রায়ের পর পারুল বেগম আবেগাপ্লুত হয়ে ঢাকা পোস্টকে বলেন, হাইকোর্ট এত সুন্দর রায় দেবেন এটা আমার ভাবনায় ছিল না। আমি বিচারপতিদের প্রতি কৃতজ্ঞ। একইসঙ্গে আমাদের আইনজীবী ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া স্যারের প্রতিও কৃতজ্ঞ। তিনি আমাদের কাছ থেকে কোনো ফি নেননি।
বিজ্ঞাপন
পারুল বেগম বলেন, আমি চাই হাইকোর্টের রায় যেন দ্রুত বাস্তবায়ন হয়। চাকরিটা পেলে আমরা সুন্দর জীবন ফিরে পাব।
এর আগে ২৮৫ শারীরিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তির সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কোটার ভিত্তিতে নিয়োগ দিতে নির্দেশ দিয়ে রায় ঘোষণা করেন হাইকোর্ট।
এ বিষয়ে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে রোববার বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশ গুপ্ত।
রায়ের পর রিটকারী আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া বলেন, প্রতিবন্ধীদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় হাইকোর্টের আজকের রায় যুগান্তকারী। আশা করছি কর্তৃপক্ষ অবিলম্বে হাইকোর্টের রায় বাস্তবায়ন করবেন।
এর আগে গত ১১ ডিসেম্বর ২৮৫ শারীরিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তির সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কোটার ভিত্তিতে নিয়োগে জারি করা রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষ হয়। একই সঙ্গে এ বিষয়ে রায়ের জন্য ১৪ জানুয়ারি দিন ধার্য করা হয়।
এমএইচডি/এসকেডি