সুপ্রিম কোর্টের মাজার গেট থেকে বার ভবন সংলগ্ন সোনালী ব্যাংক পর্যন্ত বিশেষায়িত পরিবহন গলফ কার্ট চলাচল শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) সকাল ৮টা থেকে তিনটি গলফ কার্ট চলাচল করছে। সন্ধ্যা পর্যন্ত চলাচল করবে বিশেষায়িত এ পরিবহন।

আইনজীবীদের চলাচলের জন্য বিশেষায়িত পরিবহন চালু হওয়ায় সকাল থেকে সুপ্রিম কোর্টের অভ্যন্তরে রিকশা প্রবেশ বন্ধ করে দেওয়া হয়। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মাজার গেটে চাপ বাড়তে থাকতে থাকে। বিশেষায়িত পরিবহনের সংখ্যা অপ্রতুল হওয়ায় সকাল সাড়ে ৯টার দিকে রিকশা ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়। রোববার থেকে রিকশা চলাচল পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার কার্যালয় নিশ্চিত করেছে।

সুপ্রিম কোর্টের মাজার গেটে দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের আজ থেকে রিকশা সুপ্রিম কোর্টের অভ্যন্তরে প্রবেশ বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

সুপ্রিম কোর্টের অভ্যন্তরে রিকশা বন্ধ করে বিশেষায়িত পরিবহন চালুর উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন আইনজীবীরা। মাজার গেটে কয়েকজন আইনজীবী ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রধান বিচারপতির এ উদ্যোগকে আমরা পজিটিভলি নিচ্ছি। এটা ভালো উদ্যোগ। তবে পরিবহনের সংখ্যা আরও বাড়াতে হবে।

অন্যদিকে আইনজীবী সহকারী ও বিচারপ্রার্থীর সঙ্গে একই পরিবহনে চলাচলে আপত্তি আছে অনেক আইনজীবীর। দুই আইনজীবী ঢাকা পোস্টকে বলেন, আইনজীবীদের জন্য পৃথক পরিবহনের ব্যবস্থা করতে হবে।

এর আগে সোমবার (২২ জানুয়ারি) আইনজীবীদের চলাচলের জন্য সুপ্রিম কোর্টে গলফ কার্ট উদ্বোধন করা হয়। প্রধান বিচারপতির উদ্যোগে বিশেষায়িত এ পরিবহনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

আইনজীবীদের মধ্যে যারা রিকশায় চলাচল করেন তারা মাজার গেটে নেমে সুপ্রিম কোর্টের সরবরাহ করা গলফ কার্টে উঠে আইনজীবী সমিতি ভবন সংলগ্ন সোনালী ব্যাংকের সামনে যেতে পারবেন।

সোমবার বিকেলে গলফ কার্ট চলাচল উদ্বোধন করেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। এসময় আপিল বিভাগের বিচারপতি ও সুপ্রিম কোর্টের আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা কমিটির প্রধান বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম, আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম, আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতিরা উপস্থিত ছিলেন।

উদ্বোধনের পর তিনটি গলফ কার্টে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, সুপ্রিম কোর্ট বার সভাপতি মোমতাজ উদ্দিন ফকির, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর, শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ, ব্যারিস্টার মেহেদী হাছান চৌধুরী, বার সম্পাদক আবদুন নূর দুলাল, বারের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও কয়েকজন সাংবাদিক সুপ্রিম কোর্ট চত্বর প্রদক্ষিণ করেন। এসময় পাশে দাঁড়িয়ে থেকে প্রধান বিচারপতি, আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতিরা হাততালি দিয়ে উৎসাহ দেন।

এর আগে গলফ কার্ট উদ্বোধন উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান বিচারপতি বলেন, সুপ্রিম কোর্টের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে ও পরিবেশ সুন্দর রাখতে রিকশার পরিবর্তে  গলফ কার্ট চলাচলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে সুপ্রিম কোর্ট থেকে আইনজীবীদের চলাচলের জন্য তিনটি গলফ কার্ট দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে সংখ্যা বাড়ানো হবে। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি চাইলে তিনটির সঙ্গে আরও গলফ সংযুক্ত করতে পারবে।

সুপ্রিম কোর্টের আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা কমিটির প্রধান, বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম বলেন, পৃথিবীর অধিকাংশ দেশে সুপ্রিম কোর্টের নিরাপত্তার কথা বিশেষভাবে ভাবা হয়। সেসব দেশে সুপ্রিম কোর্টে প্রবেশের ক্ষেত্রে অনেক বিধিনিষেধ রয়েছে। বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের নিরাপত্তার কথা ভেবে প্রধান বিচারপতির বিশেষ উদ্যোগে গলফ কার্ট উদ্বোধন করা হলো। তিনি এ উদ্যোগ বাস্তবায়নে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ও আইনজীবীদের সহযোগিতা কামনা করেন।

এমএইচডি/এসএসএইচ