ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের এক বিচারককে মারধরের ঘটনায় হাতিরঝিল থানায় দায়ের করা মামলায় মো. আলী নামের এক আসামিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। 

রোববার (২৩ জুন) আদালতের হাতিরঝিল থানার সাধারণ নিবন্ধন শাখার কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক এশারত আলী ঢাকা পোস্টকে জানান, গত ১৬ জুন তাকে চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করে পুলিশ। 

আসামিপক্ষের আইনজীবী জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন এবং জামিন বিষয়ে শুনানির জন্য ২৩ জুন দিন ধার্য করেন।

এ দিন আসামি পক্ষের জামিন আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সুলতান সোহাগ উদ্দিনের আদালত আসামির উপস্থিতিতে জামিন শুনানির জন্য আগামী ২৭ জুন ধার্য করেন। 

এর আগে, গত ১৪ জুন ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট-১৮ আদালতের অফিস সহায়ক (ওমেদার) হুমায়ুন কবির হাতিরঝিল থানায় বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।

মামলার এজাহারে তিনি বলেন, গত ৭ জুন আমার বিচারক স্যারের সাথে প্রাইভেটকার যোগে হাতিরঝিল হয়ে টাঙ্গাইল যাওয়ার পথে হাতিরঝিল মধুবাগ ব্রিজের ওপরে একজন মোটরসাইকেল আরোহী হঠাৎ গাড়িতে ধাক্কা দেয়। আমি এবং আমার স্যার গাড়ি থেকে নেমে অজ্ঞাতনামা মোটরসাইকেল আরোহীকে থামাই। মোটরসাইকেল আরোহীকে ধাক্কা দেওয়ার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে সে আমাদের সাথে তর্কাতর্কি শুরু করে। 

অজ্ঞাতনামা সাইকেল আরোহী তর্কাতর্কি শুরু করলে আমি এবং আমার স্যার সেখান থেকে চলে যাওয়ার চেষ্টা করি। তখন অজ্ঞাতনামা মোটরসাইকেল আরোহী আমাদের গতিরোধ করে। এমন সময় ঢাকা মেট্রো-গ-১৬-২৩৩২ নামীয় প্রাইভেটকার চালক তার গাড়ি আমাদের গাড়ির পেছনে থামায়। গাড়ি থেকে আসামি মো. আলী (৫৩) মোটরসাইকেল আরোহীর সাথে যোগ দিয়ে আমার ও আমার স্যারের সাথে তর্কাতর্কি শুরু করে। আমার স্যার তখন তার পরিচয় দিলে আসামিরা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে কোনো কারণ ছাড়াই আমার স্যারকে ধাক্কা দেয়। 

আমি তাকে ধাক্কা দেওয়ার কারণ জিজ্ঞাসা করলে আসামি আলী (৫৩) ও অজ্ঞাতনামা আসামি মোটরসাইকেল চালক আমার স্যারকে চড়-থাপ্পড় মারতে শুরু করে। আমার স্যারকে হত্যার উদ্দেশ্যে গলা চেপে ধরে রাখে এবং মেরে ফেলতে চেষ্টা করে। আমি বাধা দিলে অজ্ঞাতনামা আসামি (মোটরসাইকেল আরোহী) আমাকেও কিল-ঘুষি মেরে মাথা, ঘাড় ও পিঠে জখম করে। মোটরসাইকেলের অজ্ঞাতনামা চালক আমাদের গাড়ির লুকিং গ্লাস ভেঙে ফেলে এবং বিভিন্ন হুমকি প্রদান করে।

আমরা সেখান থেকে কোনোরকম পালিয়ে আসি। আসার সময় আমরা আসামি মো. আলীর (৫৩) গাড়ি ও মোটরসাইকেলের ছবি তুলতে সক্ষম হই। গাড়ির নম্বর থেকে প্রাইভেটকার চালক আসামি আলীর (৫৩) পরিচয় বের করতে সক্ষম হই। অজ্ঞাতনামা আসামি মোটরসাইকেল চালকের নাম ও ঠিকানা বের করতে পারিনি। তবে আমার তোলা ছবির মাধ্যমে মোটরসাইকেলের নম্বর শনাক্ত করতে সক্ষম হই।

এনআর/কেএ