কনটেন্ট ক্রিয়েটর আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলমকে হত্যাচেষ্টা মামলায় তার তৃতীয় স্ত্রী রিয়া মনি ও কামরুল ইসলাম রিয়াজের (রিয়া মনির বন্ধু) জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত।

রোববার (২২ জুন) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জশিতা ইসলাম শুনানি শেষে এক হাজার টাকা মুচলেকায় মামলার আগামী ধার্য তারিখ ২৭ জুলাই পর্যন্ত তাদের জামিন মঞ্জুর করে আদেশ দেন।

এদিন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হাতিরঝিল থানার উপ-পরিদর্শক মো. মোস্তানছির বিল্লাহ তাদের আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন।

আসামিদের পক্ষে তাদের আইনজীবী আতিকুর রহমান খান জামিন চেয়ে আবেদন করেন। শুনানিতে তিনি বলেন, রিয়া মনি বাদীর (হিরো আলম) তৃতীয় স্ত্রী। সেদিনের ঘটনা লাইভে দেখেছি। হিরো আলমের অনুসারীরা মিলে রিয়া মনি এবং রিয়াজকে মারধর করেছে। রিয়াজের মাথায় চারটা সেলাই লেগেছে। আসামিদের মামলা করার কথা, উল্টো তারাই মামলা খেল। ফেব্রিকেটেড মামলা। আসামিদের হয়রানি করতে, ষড়যন্ত্রমূলকভাবে মামলা দিয়েছে।

বাদীপক্ষে আইনজীবী মিজানুর রহমান জামিনের বিরোধিতা করেন। তিনি বলেন, অবৈধ প্রেমের সম্পর্কে বাঁধা দিতে যাওয়া তারা হিরো আলমকে মারধর করেছে। যেদিন রিয়া মনির শ্বশুর মারা যায়, দেখতে যান নাই। রঙ্গমঞ্চে ব্যস্ত ছিল। এরপর থেকে হিরো আলম ব্যক্তিগত তদন্ত শুরু করে। জানতে পারে, তার স্ত্রী অবৈধ সম্পর্কে লিপ্ত। যে বাসায় ঘটনা ঘটেছে সেটা হিরো আলমেরই বাসা (ভাড়া) তবে তিনি বাসায় কম যেতেন। সন্দেহ করা নিয়ে তাদের (হিরো আলম-রিয়া) মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। কপোত-কপোতীর (রিয়া-রিয়াজ) জন্য বাধা ছিলেন হিরো আলম।

তিনি আরও বলেন, তার কল্পনায় ছিল না তার বাসায় তার সঙ্গে এমনটা করবে। তাদের বাসায় যৌন কামনায় লিপ্ত অবস্থায় দেখতে পান। তার ওপর হামলা চালায়। তার ডাক-চিৎকারে আশ-পাশের লোকজন এগিয়ে আসে। লোকজন না থাকলে হয়ত সেদিন তাকে মেরে ফেলতো। তাদের জামিনের বিরোধিতা করছি। জামিন পেলে হিরো আলম ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হবেন।

উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত আদেশ অপেক্ষমাণ রাখেন। পরে তাদের জামিনের আদেশ দেন বলে জানান আদালতে হাতিরঝিল থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক মোকছেদুল ইসলাম।

হত্যাচেষ্টার অভিযোগে গতকাল শনিবার হিরো আলম বাদী হয়ে রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় মামলা করেন। 

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, রিয়া মনি সম্পর্কে হিরো আলমের ৩য় স্ত্রী। গত ২১ জুন বিকেল ৪টার দিকে হাতিরঝিল থানাধীন এলাকায় ভাড়া বাসায় হিরো আলম গিয়ে দেখেন রিয়া মনি এবং রিয়াজ রুমের ভেতর দরজা বন্ধ অবস্থায় রয়েছেন। তখন হিরো আলম তার স্ত্রী রিয়া মনি ও রিয়াজকে একসঙ্গে বেড রুমে অবস্থানের কারণ জিজ্ঞাসা করেন। তারা কোনো সঠিক উত্তর দিতে পারেনি। এসময় রিয়া মনি তার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। একপর্যায়ে রিয়ামনি এবং পলাতক আসামি আবদুল্লাহ হত্যার উদ্দেশ্যে কাঠের লাঠি দিয়ে হিরো আলমের মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে এলোপাথাড়ি মারধর করেন। রিয়ার নির্দেশে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গলা চাপ দিয়ে ধরে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করে। তখন হিরো আলমের গলায় থাকা আট আনা ওজনের স্বর্ণের চেইন কৌশলে চুরি করে নেয়।

এনআর/এআইএস