শরীয়তপুরে দেলোয়ার হত্যায় ৫ আসামির মৃত্যুদণ্ড
আট বছর আগে শরীয়তপুরের পালং থানার পশ্চিম চররোসুদ্ধি গ্রামের যুবক দেলোয়ার হোসেন সরদার হত্যা মামলায় পাঁচ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪ এর বিচারক মোহাম্মদ হালিম উল্লাহ চৌধুরী বিকেলে এ রায় দেন। এছাড়া অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় অপর ১২ আসামিকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, ইসমাইল সরদার, ছালমুন সরদার, রেজাউল সরদার, জুয়েল সরদার এবং আমিনুল সরদার।
খালাসপ্রাপ্তরা হলেন, মজিবর সরদার, ফজলুল সরদার, আ. মালেক সরদার, মোকলেছ সরদার, মাহাবুব সরদার, তোতা সরদার, টিপু সরদার, পারচেজ সরদার, আ. ছালাম সরদার, পাভেল সরদার, আজিজুল হক সরদার এবং পারুল বেগম।
বিজ্ঞাপন
সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী মিজানুর রহমান এতথ্য নিশ্চিত করেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, পূর্ব শত্রুতার জেরে ২০১৭ সালের ১২ জুলাই দেলোয়ার হোসেন সরদার এবং তার ভাই দুলাল সরদার শরীয়তপুর জেলার পালং মডেল থানার সুবচনী বাজার থেকে অটোবাইকে করে বাড়ি ফেরার পথে আসামিরা তাদের অটোবাইকের গতি রোধ করে। অটোবাইক থেকে দেলোয়ার হোসেন সরদারকে টানা-হেঁচড়া করে রাস্তার ওপর নামিয়ে লোহার হাতুড়ি দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করতে থাকে। তখন দুলাল সরদার তার ভাই দেলোয়ার হোসেন সরদারকে রক্ষার চেষ্টা করেন। তখন ইসমাইল সরদারের হাতে থাকা ধারালো ডেগার দিয়ে দুলাল সরদারকে কুপিয়ে আহত করে। আসামি রেজাউল সরদারের হাতে থাকা হকিস্টিক দিয়ে দুলাল সরদারকে হত্যার উদ্দেশ্যে মারলে দুলাল সরদারের বাম হাতের কব্জির ওপরের অংশে লেগে গুরুতর জখম হয়। আসামিদের হাতে থাকা লোহার হাতুড়ি, ধারালো ডেগার ও হকিস্টিক দিয়ে দেলোয়ার সরদারকে রাস্তার ওপর ফেলে হত্যার উদ্দেশ্যে এলোপাথারি তার দুই পা, দুই হাত ও পাঁজরসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করে। জুয়েল সরদার দেলোয়ারের অন্ডকোষে হকিস্টিক দিয়ে ফাটিয়ে দেন।
ঘটনাস্থলের অদূরে বসবাসকারী তাদের স্বজন পারভীন আক্তার ভিকটিমদের ডাক চিৎকার শুনে দৌড়ে এসে বাধা দিলে আসামিরা তাকেও এলোপাথারি মারপিট করে জখম করেন। তখন ভিকটিমদের ডাক চিৎকারে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে এসে তাদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য দেলোয়ার হোসেন সরদারকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। ওইদিনই রাতে সাড়ে ৮টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক দেলোয়ার হোসেন সরদারকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় ২০১৭ সালের ১৪ জুলাই দেলোয়ার হোসেন সরদারের বাবা আ. সালাম সরদার বাদী হয়ে পালং মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্ত শেষে ২০১৮ সালের ১০ ডিসেম্বর ফরিদপুর জেলার পিবিআই পুলিশের পরিদর্শক দেলোয়ার হোসেন ১৮ জনকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। মামলার বিচার চলাকালে এক আসামি মারা যাওয়ায় ১৭ জনের বিরুদ্ধে বিচারিক কার্যক্রম চলে।
মামলার বিচার চলাকালে ৩১ জন ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দেন। আসামিদের আত্মপক্ষ শুনানি, যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে ট্রাইব্যুনাল আজ রায় ঘোষণা করলেন।
এনআর/এসএম