ধানমন্ডির সেই ৩০০ কোটি টাকার সম্পত্তি বরাদ্দে স্থিতাবস্থা হাইকোর্টের
রাজধানীর ধানমন্ডি ২ নম্বর রোডে ৩০০ কোটি টাকা মূল্যমানের বাড়িটি (পরিত্যক্ত সম্পত্তি) কাউকে বরাদ্দ দেওয়া এবং সেখানে অবকাঠামো নির্মাণের ওপর স্থিতাবস্থা জারি করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ওই সম্পত্তি অধিগ্রহণ ও বরাদ্দ দেওয়া কেন অবৈধ হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। রুলে বাড়িটি জনগণের জন্য কেন সংরক্ষণ করা হবে না, তাও জানতে চাওয়া হয়েছে।
সোমবার (১৮ আগস্ট) বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি ফয়েজ আহমদের হাইকোর্ট বেঞ্চ এক রিটের প্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন।
বিজ্ঞাপন
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার কাজী মাইনুল হাসান। তিনি নিজেই জনস্বার্থে এই রিট দায়ের করেন।
এর আগে ২০২২ সালের নভেম্বরে ধানমন্ডির ২ নম্বর রোডের প্রায় ৩০০ কোটি টাকা দামের পরিত্যক্ত সম্পত্তিটি (২৯ নম্বর বাড়ি) সরকারের বলে রায় দেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে তথ্য গোপন করে এই বাড়ির মালিকানা দাবি করে রিট দায়ের করায় সাংবাদিক আবেদ খানকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন আদালত।
বিজ্ঞাপন
পৃথক দুটি রিট নিষ্পত্তি করে বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর হাইকোর্ট বেঞ্চ ওই রায় দেন।
সেদিন আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন তখনকার ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান। আবেদনকারী নেহাল আহমেদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ আবুল হাসেম।
আরও পড়ুন
সেদিন তখনকার ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান বলেছিলেন, ধানমন্ডি ২ নম্বর রোডের আলোচিত ২৯ নম্বর বাড়িটি ১৯৭২ সালে তৎকালীন মালিক কর্তৃক পরিত্যাগ করে চলে যাওয়ায় সরকার পরিত্যক্ত সম্পত্তি হিসেবে দখল ও নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করেন। পরবর্তী সময়ে ওই সম্পত্তির উত্তরাধিকার হিসেবে মালিকানা দাবি করে তোয়াব খান, আবেদ খান ও অন্যান্যরা প্রথম সেটেলমেন্ট কোর্টে ১৯৮৯ সালে মামলা দায়ের করেন। সাক্ষ্য ও পক্ষদ্বয়ের কাগজপত্র ও সরকারি নিবন্ধক দপ্তরের নথি পর্যালোচনা করে প্রথম সেটেলমেন্ট কোর্টে বর্ণিত সম্পত্তি সরকার আইনসঙ্গতভাবেই পরিত্যক্ত সম্পত্তি হিসেবে দখল ও নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন মর্মে রায় প্রদান করেন। এই রায় বহাল থাকা অবস্থায় এস নেহাল আহমেদ নামে এক ব্যক্তি ১৯৮৭ সালের আবেদন দেখিয়ে প্রথম সেটেলমেন্ট কোর্টে ১৯৯৬ সালে মামলা দায়ের করেন। এই মামলায় সরকারের পক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা হয়নি। প্রথম সেটেলমেন্ট কোর্টে কোন সাক্ষী প্রদান করা হয়নি, বা সমর্থনীয় এবং আবশ্যকীয় কাগজপত্রও দাখিল করা হয়নি। তারপরও কোর্ট এস. নেহাল আহমেদ দাবিকারী ব্যক্তির পক্ষে রায় প্রদান করেন।
এই রায় বাস্তবায়নের জন্য এস নেহাল আহমেদ হাইকোর্টে ২টি রিট পিটিশন দায়ের করেন।
এদিকে একই সম্পত্তির বিষয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য উপাত্ত ও সমর্থনীয় কাগজপত্র ছাড়াই সাংবাদিক আবেদ খান তাদের বিরুদ্ধে সেটেলমেন্ট কোর্টের রায় গোপন করে ২০১৫ সালে হাইকোর্টে রিট করেন। তিনি ওই সম্পত্তির মালিকানা দাবি করেন। তথ্য গোপন করে রিট করায় আদালত তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
এমএইচডি/এসএম/জেএস