ভুয়া বাড়ি ভাড়া চুক্তিনামা দেখিয়ে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে ঘুস গ্রহণের অভিযোগে দুদকের মামলায় পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলামের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ সাব্বির ফয়েজ শুনানি নিয়ে তার জামিন নামঞ্জুরের আদেশ দেন।

দুদক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট দেলোয়ার জাহান রুমি জামিন নামঞ্জুরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এদিন সকাল ১০টার দিকে তাকে ঢাকা মহানগর আদালতের হাজতখানায় আনা হয়। বেলা ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে তাকে এজলাসে তোলা হয়। পরে আসামি পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার আসিফুর রহমান জামিন চেয়ে শুনানি করেন। শুনানিতে তিনি বলেন, শিবলী রুবাইয়াতের গাজীপুরে একটা পৈত্রিক জায়গা আছে। ২০২১ সালে বাবার জায়গায় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আমেরিকান নাগরিকের সঙ্গে ল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ও ভাড়া নেওয়ার জন্য চুক্তি করেন। সে চুক্তি অনুযায়ী টাকাটা এসেছে। পরে আরেকজন অবজেকশন জানিয়ে ওই টাকার দাবি করেন। এটা নিষ্পত্তির জন্য আদালতে মামলা হয়।

তিনি আরও বলেন, ২০২১ সালের আমাদের পার্সোনাল এগ্রিমেন্টের বিষয়ে দুদক মামলা করেছে। এটা মূলত আমাদের ব্যক্তিগত একটা চুক্তি। এছাড়া সিকিউরিটিজে জেলার ব্রোকারেজ হাউজে অনৈতিক সুবিধা দিয়ে লাইসেন্স দেওয়ার কথা এসেছে। এখানে তো অনৈতিক সুবিধা দেওয়ার কিছু নেই। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে আবেদন করবে, টাকা জমা দেবে। প্রক্রিয়া হয়ে আসবে। এখানে যারাই প্রক্রিয়া মেনে আবেদন করবে। তারাই সুবিধা পাবে। এখানে তো অনৈতিক সুবিধা দেওয়ার কিছু নেই। আমরা ওনার জামিন চাচ্ছি।

পরে শিবলী রুবাইয়াত কথা বলার জন্য আইনজীবীর মাধ্যমে অনুমতি চান। কিন্তু আদালত আইনজীবীর উদ্দেশ্যে বলেন, আপনি উনার পক্ষে যথেষ্ট বলেছেন।

দুদকের পক্ষে প্রসিকিউটর দেলোয়ার জাহান রুমি জামিনের বিরোধীতা করেন। এরপর আদালত তার জামিন নামঞ্জুরের আদেশ দেয়।

গত ৪ ফেব্রুয়ারি রাত ১০টার দিকে ঢাকার ধানমন্ডি এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন (৫ ফেব্রুয়ারি) দুদকের উপপরিচালক (মানিলন্ডারিং) মো. মাসুদুর রহমান বাদী হয়ে শিবলী রুবাইয়াতসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। 

এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন মোনার্ক হোল্ডিং ইনকর্পোরেশনের চেয়ারম্যান জাবেদ এ মতিন, ঝিন বাংলা ফেব্রিক্সের প্রোপাইটর আরিফুল ইসলাম, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক পিএলসির দিলকুশা শাখার ফরেন এক্সচেঞ্জ বিভাগের সাবেক ইনচার্জ ইসরাত জাহান, ভাইস প্রেসিডেন্ট ইকবাল হোসেন, এসইভিপি সৈয়দ মাহবুব মোরশেদ।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ভুয়া বাড়িভাড়া চুক্তিনামা দেখিয়ে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে আসামি শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম এক কোটি ৯২ লাখ টাকা বা প্রায় দুই লাখ ২৬ হাজার ৩০৮ ইউএস ডলার ঘুষ গ্রহণ করেন। এছাড়া ভুয়া বিক্রয় চুক্তি দেখিয়ে পণ্য রপ্তানি না করে প্রতারণা ও জাল জালিয়াতির আশ্রয় গ্রহণ করে।

ব্যাংক কর্মকর্তারা কাস্টমার ডিউ ডিলিজেন্স অনুসরণ না করে, পণ্য রপ্তানির বিপরীতে কোনোরূপ রেকর্ডপত্র না পেয়েও কর্তব্যে অবহেলা ও পরস্পর যোগসাজশে নিজের বা অন্য কারও অপরাধলব্ধ আয়ের অবৈধ উৎস গোপন বা আড়াল করার উদ্দেশ্যে তিন লাখ ৬১ হাজার ইউএস ডলার টাকা বাংলাদেশে নিয়ে এসেছে। এর মধ্যে তিনি এক কোটি ৮৪ লাখ ২৮ হাজার টাকা নিজে গ্রহণ করেন।

এনআর/এসএম