‘বাংলাদেশ জননেত্রী শেখ হাসিনা পরিষদ’ নামে ভুঁইফোড় সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মনির খান ওরফে দর্জি মনিরের বিরুদ্ধে রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর থানার মামলায় ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

বুধবার (৪ আগস্ট) দুপুরে তাকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। একই সঙ্গে মামলার সুষ্ঠু তদন্তের প্রয়োজনে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন।

এ সময় আসামিপক্ষের আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে আবেদন করেন। অপরদিকে, রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রিমান্ডের জোর দাবি জানান। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ধীমান চন্দ্র মণ্ডলের আদালত রিমান্ডের এ আদেশ দেন।

বুধবার বিকেল সোয়া ৩টায় আদালতের সংশ্লিষ্ট থানার সাধারণ নিবন্ধন (জিআর) শাখা থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

এর আগে মঙ্গলবার (৩ আগস্ট) চাঁদাবাজি ও প্রতারণার অভিযোগে ইসমাইল হোসেন নামে এক ব্যক্তি মামলাটি দায়ের করেন।

এজাহারে বাদী ইসমাইল হোসেন বলেন, আসামি মনিরকে আমি ১৫ বছর ধরে চিনি। তিনি একটি ছোট দর্জির দোকানে চাকরি করতেন। হঠাৎ তিনি নিজেকে রাজনৈতিক বড় নেতা পরিচয় দেওয়া শুরু করেন। তিনি একেক সময় একেক রাজনৈতিক পরিচয়সহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের এমডি হিসেবে পরিচয় দিতেন। এছাড়া বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি-প্রধানমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়, আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক ও স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী ছাড়াও আরও অনেক মন্ত্রী-এমপিদের সঙ্গে নিজের ছবি কম্পিউটার সফটওয়্যার ব্যবহারের মাধ্যমে এডিট করে বসিয়ে নিজেকে ‘বাংলাদেশ জননেত্রী শেখ হাসিনা পরিষদ’র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি দাবি করতেন। 

বাদী অভিযোগ করেন, এসব পদ ব্যবহার করে ঢাকা মহানগরী এবং বিভিন্ন জেলা উপজেলা কমিটি দেওয়ার নাম করে বিভিন্ন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে চাঁদা দাবি করতেন মনির। গত ৩০ জুলাই কামরাঙ্গীরচর থানা এলাকার মাদবর বাজার এলাকার ৭ নং ওয়ার্ডের এক জানাজায় বাদীকে তার সংগঠনের পদ এবং বিভিন্ন বড় বড় নেতাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক করিয়ে দেওয়ার নাম করে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন তিনি। 

বাদী এজাহারে দাবি করেন, আসামি ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করে ডিজিটাল জালিয়াতির মাধ্যমে ছবি এডিট করতেন। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে নিজের ছবি বসিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যা তথ্য প্রচার করে সাধারণ মানুষকে ঠকানোর উদ্দেশে বিশ্বাস স্থাপন করতেন। এছাড়া আসামি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া ব্যবহার করে নিজেকে ঢাকা-২ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী হিসেবে প্রচার করে এলাকায় রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ সৃষ্টি করেন। যার ফলে সাধারণ জনগণের মধ্যে চরম উত্তেজনা সৃষ্টি হয় এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়।

টিএইচ/এইচকে