মুক্তিযোদ্ধা সেনা কর্মকর্তা, মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আবুল মঞ্জুর হত্যা মামলা থেকে জাতীয় পার্টির প্রয়াত চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচ এম এরশাদ ও মেজর জেনারেল (অব.) আবদুল লতিফকে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন করে সম্পূরক চার্জশিট দাখিল করেছে সিআইডি। এছাড়া তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাদের অভিযুক্ত করা হয়েছে চার্জশিটে। 

তারা হলেন, মেজর (অব.) কাজী এমদাদুল হক, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) মোস্তফা কামাল উদ্দিন ভূইঞা ও লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) শামসুর রহমান শমসের। 

ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পেশকার নুর মোহাম্মদ খান আজ (শুক্রবার) এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এরশাদ ও আবদুল লতিফ মারা যাওয়ায় তাদের এ মামলা থেকে অব্যাহতির আবেদন করা হয়েছে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে বহুল আলোচিত এ মামলাটি  ‘এরশাদকে বশীকরণ’ মামলা হিসেবে পরিচিতি ছিল অনেকের কাছে। 

নুর মোহাম্মদ খান বলেন, গত ১২ জানুয়ারি ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক দিলারা আলো চন্দনার আদালতে  এ সম্পূরক চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পুলিশ সুপার কুতুব উদ্দিন। আগামী ২৫ জানুয়ারি শুনানির জন্য দিন ধার্য রয়েছে।

২০১৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আসাদুজ্জামান খান রচি মামলাটি অধিকতর তদন্তের আবেদন করেছিলেন। আবেদনের শুনানিতে তিনি বলেছিলেন, এ মামলায় সঠিকভাবে তদন্ত হয়নি। ফলে আরও অনেককে সাক্ষী করা যায়নি। প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনের জন্য মামলাটি অধিকতর তদন্তের প্রয়োজন। আদালত রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন মঞ্জুর করে মামলাটির অধিকতর তদন্তের জন্য সিআইডিকে নির্দেশ দেন।

মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সেক্টর কমান্ডার মঞ্জুরকে ১৯৮১ সালের ১ জুন চট্টগ্রাম সেনানিবাসে সেনা হেফাজতে হত্যা করা হয়। এর এক দিন আগে ৩০ মে চট্টগ্রামে সংঘটিত সেনা অভ্যুত্থানে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জেনারেল জিয়াউর রহমান নিহত হন। এরপর মঞ্জুরসহ আরও বেশ কয়েকজন সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সেনা বিদ্রোহের অভিযোগ এনে সামরিক আদালতে বিচার করা হয়। কিন্তু জিয়া ও মঞ্জুর হত্যার বিচার করা হয়নি।

১৪ বছর পর ১৯৯৫ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি মঞ্জুরের ভাই আইনজীবী আবুল মনসুর আহমেদ চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানায় হত্যা মামলা করেন। ওই বছরের ২৭ জুন সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদসহ পাঁচজনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় সিআইডি। তাতে বলা হয়, ১৯৮১ সালে তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল এইচ এম এরশাদের পরিকল্পনা ও নির্দেশে জেনারেল মঞ্জুরকে হত্যা করা হয়। অভিযোগপত্রে এরশাদসহ পাঁচজন সেনা কর্মকর্তাকে আসামি করা হয়।

টিএইচ/এনএফ