স্ত্রী হত্যা : মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত স্বামীর খালাসের রায় স্থগিত
বরিশালে কোহিনুর বেগম নামে এক গৃহবধূকে হত্যা মামলায় স্বামী মোস্তফা সরদারকে খালাস দিয়ে হাইকোর্টর রায় স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত।
সোমবার (২৩ আগস্ট) রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি ওবায়দুল হাসান খালাসের রায় আট সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেন।
বিজ্ঞাপন
আদালতে আসামিপক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. মো. বশির উল্লাহ। ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আদালতের আদেশের বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে ডেথ রেফারেন্স খারিজ এবং আসামির আপিল মঞ্জুর করে ২৭ জুন বিচারপতি এস এম এমদাদুল হক ও বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তীর ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ মোস্তফা সরদারকে খালাস দেন। পরে এই রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ।
বিজ্ঞাপন
স্ত্রী হত্যার দায়ে ২০১৫ সালের ৮ অক্টোবর বরিশালের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক আদীব আলী মোস্তফা সরদারকে মৃত্যুদণ্ড দেন। দণ্ডপ্রাপ্ত মোস্তফা সরদার বরিশালের গৌরনদী উপজেলার কসবা এলাকার মৃত হাতেম আলী সরদারের ছেলে।
আইন অনুযায়ী এ মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে পাঠানো হয়। পরে আসামিও আপিল করেন।
গৌরনদী উপজেলার কসবা এলাকার বাসিন্দা আসমত আলী সরদারের মেয়ে কোহিনুর বেগমের সঙ্গে একই এলাকার বাসিন্দা হাতেম আলী সরদারের ছেলে মোস্তফা সরদারের বিয়ে হয়। তাদের সংসারে ২ ছেলে ও ১ মেয়ে সন্তান রয়েছে।
হত্যাকাণ্ডের দুই মাস আগে মোস্তফা সরদার একই এলাকার লাল মিয়ার স্ত্রী বুলু বেগমকে বিয়ে করেন। এ নিয়ে মোস্তফা সরদার ও কোহিনুর বেগমের মধ্যে পারিবারিক কলহ দেখা দেয়। বিয়ের পর থেকে কোহিনুরকে প্রায়ই মারধর করতেন মোস্তফা।
২০১০ সালে কোহিনুর বেগমের বাবা আসমত আলী সরদার পার্শ্ববর্তী বাসিন্দা সরোয়ার পাইকের স্ত্রী হাসি বেগমের মাধ্যমে জানতে পারেন তার মেয়েকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এ ঘটনায় তিনি ও স্বজনরা অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাকে কোথাও পাননি। একই বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি মোস্তফা সরদারের চৌচালা ঘরের মাচার আড়ার সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় কোহিনুরের মৃতদেহ উদ্ধার করেন।
বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ হলে তিনি ওইদিনই বাদী হয়ে পরিকল্পিত হত্যার অভিযোগে পাঁচজনকে আসামি করে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ওই বছরের ৩১ মে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শাহজালাল খলিফা তিনজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
সাতজনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ২০১৫ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি বিচারিক আদালত অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় মোস্তফার দ্বিতীয় স্ত্রী বুলু বেগম ও তার আগের স্বামী লাল মিয়াকে খালাস দেন। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় মোস্তফা সরদারকে মৃত্যুদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা এবং ২০১ ধারায় সাত বছরের কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো দুই মাসের কারাদণ্ডাদেশ দেন।
এমএইচডি/জেডএস