পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমান ও দুদকের পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরের বিরুদ্ধে দায়ের করা দুর্নীতির মামলায় গাড়িচালক এনামুল হকের সাক্ষ্য নিয়েছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক শেখ নাজমুল আলম এ সাক্ষ্য নেন। এদিন সাক্ষীকে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা জেরা করেন। জেরা শেষে বিচারক পরবর্তী সাক্ষ্য নেওয়ার জন্য ১৩ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেন। আদালতের সংশ্লিষ্ট এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

গত বছরের ১৮ মার্চ তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। ওই বছরের ১৯ জানুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের পরিচালক শেখ মো. ফানাফিল্যা আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

২০১৯ সালের ১৬ জুলাই ৪০ লাখ টাকা ঘুষ লেনদেনের অভিযোগে জেলা কার্যালয় ঢাকা ১-এ মিজান ও বাছিরের বিরুদ্ধে মামলাটি করেছিলেন দুদকের পরিচালক শেখ মো. ফানাফিল্যা।

ঘুষ কেলেঙ্কারির অভিযোগ ওঠার পর খন্দকার এনামুল বাছির ও ডিআইজি মিজানুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

মিজান ও বাছিরের বিরুদ্ধে করা মামলার এজাহারে বলা হয়, খন্দকার এনামুল বাছির কমিশনের দায়িত্ব পালনকালে অসৎ উদ্দেশে নিজে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার আশায় ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। ডিআইজি মিজানুর রহমানকে অবৈধ সুযোগ দেওয়ার উদ্দেশে তার অবৈধভাবে অর্জিত ৪০ লাখ টাকা ঘুষ হিসেবে নিয়েছেন। ঘুষের ওই টাকার অবস্থান গোপন করেছেন। এর মাধ্যমে তিনি দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন এবং মানি লন্ডারিং আইনে অপরাধ করেছেন।

একইভাবে ডিআইজি মো. মিজানুর রহমান সরকারি কর্মকর্তা হয়েও তার বিরুদ্ধে ওঠা অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পাওয়ার আশায় অর্থাৎ অনুসন্ধানের ফলাফল নিজের পক্ষে নেওয়ার অসৎ উদ্দেশে খন্দকার এনামুল বাছিরকে অবৈধভাবে প্রভাবিত করেছেন। এ জন্য ৪০ লাখ টাকা ঘুষ দিয়ে পরস্পর যোগসাজশে প্রচলিত আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর ডিআইজি মিজানের অবৈধ সম্পদ অর্জন সংক্রান্ত একটি অনুসন্ধানের দায়িত্ব দেওয়া হয় এনামুল বাছিরকে। ওই অনুসন্ধান চলমান অবস্থায় ২০১৯ সালের ৯ জুন ডিআইজি মিজান ওই অনুসন্ধান থেকে বাঁচতে এনামুল বাছিরকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ দিয়েছেন বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর আসে। 

এর পরপরই দুদকের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে উচ্চপর্যায়ের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটি তাৎক্ষণিকভাবে খন্দকার এনামুল বাছিরের বক্তব্য গ্রহণ করে এবং পারিপার্শ্বিক বিষয় পর্যালোচনা করে ঘুষ নেওয়ার বিষয়ে প্রাথমিক সত্যতা পায়। এরপর ২০১৯ সালের ১৩ জুন পরিচালক ফানাফিল্ল্যার নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি অনুসন্ধান দল গঠন করে।

২০১৯ সালের ২২ জুলাই এনামুল বাছিরকে গ্রেফতার করে দুদকের একটি দল। আরেক মামলায় গ্রেফতার মিজানকেও পরে এ মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।

টিএইচ/আরএইচ