আদালতে দোষী হয়েও যেসব শর্তে মুক্তি পেলেন আসামি
রাজধানীর চকবাজার এলাকায় ১৫০ পুরিয়া হেরোইন থাকায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে করা মামলায় আব্দুল্লাহ নামে এক ব্যক্তিকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন আদালত। দোষী সাব্যস্ত করলেও আদালত তাকে সাজা না দিয়ে শর্ত সাপেক্ষে প্রবেশনে মুক্তি দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) ঢাকার ৮ম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক আসামির উপস্থিতিতে এ আদেশ দেন। সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী মিলন ঢাকা পোস্টকে তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বিজ্ঞাপন
বেঞ্চ সহকারী মিলন বলেন, গত ৩১ মার্চ আসামি আব্দুল্লাহ সাফাই সাক্ষী দিয়ে নিজের দোষ স্বীকার করেন। আদালত বিষয়টি প্রথম অপরাধ বিবেচনায় তাকে একজন প্রবেশন অফিসারের তত্ত্বাবধানে এক বছরের শর্তে সাপেক্ষে মুক্তি দিয়েছেন। যদি প্রবেশন অফিসারের তত্ত্বাবধানে এক বছরের মধ্যে কোনো শর্ত ভঙ্গ করেন তাহলে আদালত আইনে যেকোনো দণ্ড দিতে পারেন।
শর্তগুলোর মধ্যে ছিল, প্রবেশনের সময় কোনো ধরনের অপরাধের সঙ্গে জড়িত হওয়া যাবে না। প্রবেশন অফিসারের তত্ত্বাবধানে থাকতে হবে। প্রবেশনের মেয়াদকালে জীবিকার উপার্জন বিষয়ে প্রবেশন অফিসারকে জানাতে হবে। আদালত যেকোনো সময় হাজির হতে বাধ্য করলে তার দণ্ড নিতে বাধ্য থাকতে হবে। প্রবেশন অফিসারের মৌখিক বা লিখিত আদেশ মানতে বাধ্য থাকবে। দেশত্যাগ করা যাবে না। খারাপ লোকদের সঙ্গে মেলামেশা করা যাবে না। দেশের প্রচলিত আইনে শাস্তিযোগ্য কোনো অপরাধ করা যাবে না।শান্তি ভঙ্গের কোনো কাজ করা যাবে না। মাদক সেবন, মাদক বহন ও মাদক কারবারিদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখা যাবে না। প্রবেশন মেয়াদকালে পাঁচটি ফলের গাছ পাঁচটি বনজ গাছ লাগাতে হবে।
বিজ্ঞাপন
আদালত আদেশে উল্লেখ করেন, ‘মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ১৯৯০ এর ১৯ (১) টেবিল ক্রমিক ১(ক) ধারা মোতাবেক অপরাধে আসামি আব্দুল্লাহ দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। ১৯৬০ সালের প্রবেশন আইন এর ৫ ধারা মোতাবেক আসামির বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে আদালত মনে করেন।’
আদালত আদেশে আরও বলেন, ‘যেহেতু উক্ত অপরাধী জামিনদারসহ ৩০ হাজার টাকায় অঙ্গীকারনামায় নিজেকে আবদ্ধ করিয়াছেন, সেহেতু এক বছর প্রবেশন অফিসারের মেয়াদকালে শৃঙ্খলা পরিপন্থী কোনো কাজ করবেন না। আদালত কর্তৃক আদিষ্ট (ডাকা) হলে শাস্তি গ্রহণের জন্য উপস্থিত হবেন।’
আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ বলা হয়, রাজধানীর চকবাজার থানা এলাকায় ২০১৭ সালের ২১ ডিসেম্বর আব্দুল্লাহর কাছ থেকে তল্লাশি করে ১৫০ পুরিয়া হিরোইন পাওয়া যায়। যার ওজন ২৪ গ্রাম। এ ঘটনায় একই দিনে চকবাজার থানা বাদী হয়ে এসআই মো. আমান উল্লাহ মামলাটি দায়ের করেন। মামলার তদন্ত শেষে ২০১৮ সালের ২৩ জুন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই সিরাজুল ইসলামের আসামি আব্দুল্লাহর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলাটি বিচার চলাকালে বিভিন্ন সময়ে পাঁচজন সাক্ষী আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।
টিএইচ/ওএফ