নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে বিরোধ নিষ্পত্তিতে মেডিয়েশন (মধ্যস্থতা) পদ্ধতি প্রয়োগ করতে নিম্ন আদালতের বিচারকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। 

বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) রাতে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ‘অ্যাক্রিডিটেড মেডিয়েটর’ সনদ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।

মেডিয়েশন বিষয়ে সফলভাবে ৪০ ঘন্টাব্যাপী প্রশিক্ষণ সমাপ্ত করা বিচারক ও প্যানেল মেডিয়েটরদের এ সনদ প্রদান করা হয়।

প্রধান বিচারপতি বলেন, প্রশিক্ষণ কর্মশালায় মেডিয়েশন বিষয়ে যে জ্ঞান অর্জন করেছেন, তা বাস্তবভাবে প্রয়োগ করুন। একজন বিচারক যদি বিচারপ্রার্থীকে মেডিয়েশন পদ্ধতিতে বিরোধ নিষ্পত্তি করতে বলেন, তখন সেটা সফল হয়। তাই আপনারা নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে মেডিয়েশন পদ্ধতি প্রয়োগ করুন। 

তিনি বলেন, সকল বিচারপ্রার্থী দ্রুত ও সুষ্ঠু বিচার পাওয়ার অধিকারী। সেক্ষেত্রে দ্রুত মামলা নিষ্পত্তি করে মেডিয়েশন প্রক্রিয়া মামলাজট নিরসনে অনন্য ভূমিকা রাখতে পারে। 

প্রধান বিচারপতি বলেন, মূলত মেডিয়েশন হলো বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির একটি পদ্ধতি। যে পদ্ধতি আদালত-ট্রাইব্যুনালের প্রচলিত পদ্ধতির বাইরে থেকে অভিযোগ নিষ্পত্তিতে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। বর্তমানে ভারতীয় উপমহাদেশে মেডিয়েশন পদ্ধতি খুবই গুরুত্বের সাথে অনুসরণ করা হচ্ছে। যার মধ্যে পঞ্চায়েত অন্যতম। কানাডা এবং যুক্তরাষ্ট্রে সফলভাবে দেওয়ানি-ফৌজদারি মামলায় মেডিয়েশনের প্রয়োগ হচ্ছে। বর্তমানে নিউইয়র্কে ১০ শতাংশ দেওয়ানি মামলা বিচারের বিভিন্ন পর্যায়ে থেকেও মেডিয়েশনের মাধ্যমে নিষ্পত্তি হচ্ছে। কানাডায় প্রায় ৮০ শতাংশ মামলা এভাবে নিষ্পত্তি হচ্ছে। অস্ট্রেলিয়াতেও মেডিয়েশনের মাধ্যমে মামলা নিষ্পত্তিতে জোর দেওয়া হয়েছে।

আগামী দিনে সমগ্র বিশ্বেই মামলা নিষ্পত্তিতে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির পন্থা হিসেবে মেডিয়েশন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

সনদ প্রদান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি ও আন্তর্জাতিক মেডিয়েশন অ্যাওয়ার্ড প্রাপ্ত ব্যক্তিত্ব বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলী।

অ্যাক্রিডিটেড মেডিয়েটরদের অভিনন্দন জানিয়ে ভার্চুয়ালি বক্তব্য রাখেন আন্তর্জাতিক মেডিয়েশন বিশেষজ্ঞ ড. কেবিন বেরি ব্রাউন, ড. রিচার্ড এল. বেনকিন, মিস্টার ডেভিড গার্ডনার ও মিস ফিদা পাকসয়ী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল মেডিয়েশন সোসাইটির (বিমস) চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট এস এন গোস্বামী, সিরাজগঞ্জের জেলা জজ ফজলে খোদা মো. নাজির প্রমুখ।

সিরাজগঞ্জের জেলা জজ ফজলে খোদা মো. নাজির, অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ বেগম সালমা খাতুন, যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ মো. তানবীর আহমেদ, বেগম সুপ্রিয়া রহমান, জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার নাদিরা সুলতানা, সিনিয়র সহকারী জজ বাদল কুমার চন্দ্র, সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আসাদুজ্জামান, সহকারী জজ সাইমুন আল ইসলাম, নূর মোহাম্মদ ভূঁইয়া, বেগম লাভলী নাজনীন, ভারতের অপূর্বা প্যাটেল, মালদ্বীপের অর্চিনা কৈরালসহ ২৩ জনকে সনদ প্রদান করা হয়।

এমএইচডি/এইচকে