ছবি: প্রতীকী

অমলকান্তি এক চোখ স্বপ্ন নিয়ে বলতো দেখিস, এই পৃথিবীকে নতুন কিছু দেবো আমি। কলেজের কোলাহল পেরিয়ে, সবুজ ঘাসে যত্নে আঁকতো যুদ্ধের নকশা, গোলাপের কিসসা। নাটকের মহড়ায় সাবলীলভাবে কতবার পেরিয়ে যেত সময়, কখনো যুগ।

অমলকান্তি কখনো চুপ করে থাকতো দিনের পর দিন, আপনমনে সারাদিন। তারপর হঠাৎ ফিরে এসে, নির্বিকার হাসতো দিতো নতুন স্বপ্নের সন্ধান, নতুন গান! কখনো প্রেম দিয়ে আলো জ্বালিয়ে সন্ধ্যা রাতে ফিরত ঘরে, চুপিসারে।

অমলকান্তি সবার থেকে আলাদা ছিল। সবাই যেভাবে বেঁচে থাকতো, কথা বলতো সেভাবেই, সে মাথা নিচু করে পেরিয়ে যেত রাস্তা, দুরন্ত ছন্দে কখনো দুপুর রোদে থমকে যেত হঠাৎ রাস্তার ধারে বিজ্ঞাপনে, আনমনে!

অমলকান্তিকে বলতো লোকে, ভবিষ্যতের তারকা। তার সবেতেই ছিল নতুনত্ব, অসম বন্ধুত্ব, কখনো রংতুলি, কবিতায় অথবা নাট্যমঞ্চে, গিটারের সঙ্গে সখ্যতায়, অনায়াস দক্ষতায়। বদলে ফেলার ইচ্ছেটাই সম্বল করে মুছে দিত মানুষের চোখের জল, অনর্গল!

অমলকান্তি পিঁপড়ের মতো বইতে পারতো। সযত্নে ছোট ছোট ফুল, অন্যের ভুল। বলতো বোকা অথবা কাপুরুষ হব, স্বার্থপর নয়।
কখনও পায়নি সে ভয় অন্ধকারে, তাই একদিন ভোরে অবলীলায় নিভিয়ে দিলো তার সূর্যের আলো।

অমলকান্তি এখন বড় হয়েছে, শিল্পী হয়নি। রাত জেগে হিসেব করে, চুপটি করে তারপর, ঘুমিয়ে পড়ার একটু আগে, মনে মনে ভাবে
কোনটি বড় বৃত্ত? নিম্ন নাকি মধ্যবিত্ত! শিল্প আর শিল্পীর মৃত প্রেম, বন্ধুত্ব কত হারিয়ে যায় পরিবার মধ্যবিত্ত বাধ্যবাধকতায়, ব্যস্ত রাস্তায়। ভালো থাকিস অমলকান্তি।