শেষ দশকে গড়িয়েছে বাঙালির প্রাণের উৎসব অমর একুশে বইমেলা। মেলায় নতুন বইয়ের আয়োজন ছাড়াও শিশু-কিশোরদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে আবৃত্তি, চিত্রাঙ্কন আর সংগীত প্রতিযোগিতা। 

শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) এসব প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে পুরস্কার।

পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলা একাডেমির সচিব ড. মো. সেলিম রেজা। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. নিয়াজ আহমেদ খান। সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম।

এছাড়া, অমর একুশে বইমেলার ২২তমদিনে মেলা শুরু হয় বেলা ১১টায় এবং চলে রাত ৯টা পর্যন্ত। এর মধ্যে বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত মেলায় ছিল শিশুপ্রহর। সেই সঙ্গে ছিল নতুন ১৪৪টি নতুন বইয়ের প্রকাশ।

বিকেল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘কায়কোবাদের সাহিত্যে শ্মশানের চিত্রাবলি’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইমরান কামাল। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন হাবিব আর রহমান। সভাপতিত্ব করেন আবু দায়েন।

প্রাবন্ধিক বলেন, কায়কোবাদ স্বশিক্ষিত মানুষ হিসেবেই নিজেকে গড়ে তুলেছিলেন। কবি হিসেবে কায়কোবাদের আবির্ভাব তখন, যখন বাংলার সাহিত্যধারা হিসেবে কাহিনিকাব্যের প্রভাব ক্রমশ ক্ষীণ হয়ে আসতে শুরু করেছে। কবি হিসেবে কায়কোবাদ নিজেকে চিহ্নিত করেছিলেন পুরাতন পথের পথিক হিসেবেই। কায়কোবাদ কাহিনি নির্ভর কবি। তার প্রায় সব কবিতা ও কাব্যই কাহিনির আশ্রয়ে শিল্পিত হয়। তার প্রতিটি কাব্যগ্রন্থের কবিতা ও কাব্যকাহিনির ভাব ও বিষয়বস্তু গাঁথা হয় সুনির্দিষ্ট প্রতীকী শব্দের সাহায্য।

আলোচক বলেন, কবি কায়কোবাদের মধ্যে খুব অল্প বয়সেই স্বদেশ চেতনা জাগ্রত হয়েছিল। তিনি কেবল কাহিনিভিত্তিক কাব্যেরই কবি নন, গীতিকাব্যেরও কবি। দেশপ্রেমের যথার্থ আবেগ এবং অনগ্রসর মুসলমানদের জন্য বেদনাবোধ ছিল কায়কোবাদের সমাজসচেতন মনের পরিচয়। তিনি আন্তরিকভাবে হিন্দু-মুসলমানের মিলন কামনা করেছিলেন। গীতিকবিতার জন্য কায়কোবাদ বাংলা সাহিত্যজগতে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।

সভাপতির বক্তব্যে আবু দায়েন বলেন, কবি কায়কোবাদ বাংলাদেশের মাটি ও মানুষের প্রতিনিধিত্ব করেন। কবি হিসেবে তিনি ছিলেন অসাম্প্রদায়িক। তার মধ্যে যে শাশ্বত মানবিকতার বোধ ছিল, তা-ই একজন কবি বা সাহিত্যিকের মূল চেতনার জায়গা।

এছাড়া, আজ লেখক বলছি মঞ্চে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন-প্রাবন্ধিক ও গবেষক হাবিব আর রহমান এবং কবি আমিরুল মোমেনীন মানিক।

বইমেলার রোববারের অনুষ্ঠানসূচি

রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) অমর একুশে বইমেলার ২৩তম দিন। মেলা শুরু হবে বিকেল ৩টায় এবং চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত। বিকেল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে ‘গণ-অভ্যুত্থান ও নারী’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন মির্জা তাসলিমা সুলতানা। আলোচনায় অংশ নিবেন করবেন শাওলী মাহবুব এবং মুশাররাত শর্মি হোসেন। সভাপতিত্ব করবেন রেহনুমা আহমেদ।

আরএইচটি/জেডএস