করোনাভাইরাসের প্রয়োজনীয় সংখ্যক টিকা আগেভাগেই সংগ্রহ করে রাখতে বলেছে সংসদীয় কমিটি।

বুধবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি দেশের মানুষের করোনার টিকা নেওয়ার আগ্রহ সৃষ্টির বিষয়টি টেনে এ সুপারিশ করেছে।

কোভিডের টিকা প্রসঙ্গে সভাপতি ফারুক খান বলেন, আমরা দেখতে পাচ্ছি দেশের মানুষ আগ্রহ নিয়ে করোনার টিকা নিচ্ছে। মানুষের যে আগ্রহ তাতে আরও টিকার প্রয়োজন পড়বে। টিকার সংকটও দেখা দিতে পারে। এই মুহূর্তে দেশে ৭০ লাখ টিকা এসেছে। সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে মোট তিন কোটি টিকা আসবে। এজন্য আমরা আগেভাগে টিকা সংগ্রহ করে রাখতে বলেছি।

তিনি জানান, কমিটি চীন, রাশিয়াসহ আরও কয়েকটি দেশ থেকে টিকা আনার কথা বলেছে। আমরা বলেছি যাদের থেকেই টিকা কেনা হোক না কেন, সেটা যেন ডব্লিউএইচও’র অনুমোদিত হয়। বাংলাদেশের তাপমাত্রায় কোন টিকাগুলো সংরক্ষণ করা সম্ভব সেটাও দেখতে বলেছি দেশের সব মানুষের হার্ড ইউমিনিটি তৈরির জন্য ১২ কোটি মানুষকে টিকা দিতে হবে। এজন্য ২৪ কোটি টিকার দরকার হবে।

সংসদ সচিবালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বৈঠকে ভারত থেকে যথাসময়ে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন পাওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানানো হয়। সেই সঙ্গে পরে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুমোদিত অন্যান্য প্রতিষ্ঠান থেকে ভ্যাকসিন আমদানির উদ্যোগ নেওয়া এবং ভারত থেকে ভ্যাকসিন আনার প্রক্রিয়াটি চলমান রাখতে যথাযথ তদারকি করার সুপারিশ করা হয়।

বৈঠকে মিয়ানমারের সামরিক অভ্যুত্থান নিয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে ফারুক খান বলেন, মিয়ানমারে রাজনৈতিক অবস্থার কী পরিবর্তন হলো তার চেয়ে আমাদের চিন্তার বিষয় রোহিঙ্গা সমস্যার কতটা সমাধান আমরা করতে পারলাম। রোহিঙ্গা নিয়ে সেখানকার সেনাপ্রধান যে মন্তব্য করেছে তাতে আমাদের একটি আশার জায়গা তৈরি হয়েছে। সেখানকার সেনাপ্রধান পজিটিভ সাড়া দিয়েছে।

বৈঠকে এ বছরের ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসের মধ্যে জাতিসংঘ এবং উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধিদের ভাসানচরে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের কার্যক্রম সরেজমিনে পরিদর্শনের আমন্ত্রণ জানানোর সুপারিশ করা হয়।

এ বিষয়ে ফারুক খান বলেন, ভাসানচরে রোহিঙ্গা পুনর্বাসন নিয়ে যেসব উন্নয়ন সংস্থা উদ্বেগের কথা জানিয়েছে আমরা তাদের সেখানে নিয়ে সরেজমিনে দেখাতে বলেছি। খুব শিগগিরই ঢাকায় বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতদের ভাসানচরে নেওয়া হবে বলে কমিটি আমাদের জানিয়েছে।

বৈঠকে ইথিওপিয়ায় বাংলাদেশের নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত কর্মপরিকল্পনা উপস্থাপন করেন। এসময় কমিটি উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক-অর্থনৈতিক-রাজনৈতিক সম্পর্ক সুদৃঢ় করার সুপারিশ করে। বৈঠকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পতিত কৃষি জমি খুঁজে বের করে কনট্যাক্ট ফার্মিংয়ের ব্যবস্থা করার সুপারিশ করা হয়।

কমিটির সভাপতি মুহম্মদ ফারুক খানের সভাপতিত্বে বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ. কে. আব্দুল মোমেন, প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, কমিটির সদস্য নুরুল ইসলাম নাহিদ, গোলাম ফারুক খন্দ. প্রিন্স, কাজী নাবিল আহমেদ, মো. হাবিবে মিল্লাত, মো. আব্দুল মজিদ খান ও নিজাম উদ্দিন জলিল (জন) অংশগ্রহণ করেন।

এইউএ/জেডএস