পৌর নির্বাচনে সহিংসতায় উদ্বিগ্ন মাহবুব তালুকদার
জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার/ ফাইল ছবি
পৌরসভা নির্বাচনে সহিংসতা ও আচরণবিধি লঙ্ঘনের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। বুধবার (১০ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের আসন্ন ২৯টি পৌরসভার নির্বাচন উপলক্ষে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে অনলাইন সভায় লিখিত বক্তব্যে তিনি এ উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
মিটিংয়ে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার উপস্থিত ছিলেন। আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি চতুর্থ ধাপে মোট ২৬টি পৌরসভায় ব্যালট পেপারের মাধ্যমে এবং ৩০টি পৌরসভায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোটগ্রহণ হবে। পঞ্চম ধাপে ৩১টি পৌরসভায় ইভিএমের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ হবে। সভায় পৌরসভায় রিটার্নিং অফিসার, পুলিশ সুপার (এসপি) ও জেলা প্রশাসকরা (ডিসি) তাদের প্রস্তুতি ও সমস্যা উপস্থাপন করেন। নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার তাৎক্ষণিকভাবে সমস্যাগুলোর সম্ভাব্য সমাধানে দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য দেন।
বিজ্ঞাপন
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করা কর্মকর্তাদের উদ্দেশে মাহবুব তালুকদার বলেন, ‘নির্বাচনের সময় আপনাদের হাতে যে অপরিমেয় ক্ষমতা আছে, তা প্রয়োগ করে একটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশ কেন নিশ্চিত করা যাবে না- তা আমার বোধগম্য নয়। পাশাপাশি এ কথাও বলে দিতে চাই, নির্বাচনের দায়িত্বপালনে কারও কোনো শিথিলতা বরদাশত করা হবে না। এ বিষয়ে আমরা শূন্য সহিষ্ণু নীতি বা জিরো টলারেন্সে বিশ্বাসী।’
সংবিধানের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রপরিচালনার মূলনীতি গণতন্ত্র ও মানবাধিকার অংশে বলা হয়েছে, প্রশাসনের সব পর্যায়ে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে জনগণের কার্যকর অংশগ্রহণ নিশ্চিত হবে। এর অর্থ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ রাষ্ট্রক্ষমতায় অংশগ্রহণ করে। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নির্যাস হচ্ছে গণতন্ত্র। গণতন্ত্রের পূর্বশর্তই হচ্ছে নির্বাচন। নির্বাচনী ব্যবস্থাপনার প্রতিটি আইনকানুন ও আচরণবিধি কঠোরভাবে পালনের মধ্য দিয়ে সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন করে আমরা গণতন্ত্রকে সুরক্ষিত ও সৌন্দর্যমণ্ডিত করতে চাই।’
বিজ্ঞাপন
এ নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘ভোট দুই অক্ষরের ছোট শব্দ হলেও এর ব্যাপ্তি অত্যন্ত বিস্তৃত বিশাল ও ব্যাপক। ভোট জনগণের সার্বভৌমত্বের প্রতীক ও জনগণের রক্ষাকবচ। সম্প্রতি ভোটারদের ভোটবিমুখতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এটি গণতন্ত্রের জন্য অশনিসংকেত। এর কারণগুলো বিশ্লেষণ করে তা প্রতিকারের প্রচেষ্টা চালানো প্রয়োজন। নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্বপালনের জন্য আমরা শপথ নিয়েছি। আপনারা আমাদের শপথের অংশীদার। কারণ নির্বাচন আমরা সরাসরি করি না, নির্বাচন করেন আপনারা। নির্বাচন কমিশনের সকল ক্ষমতা ও শক্তি এখন আপনাদের কাছে হস্তান্তরিত। কমিশনের নির্দেশে আপনারা এই ক্ষমতা প্রয়োগ করবেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘একটি কথা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, নির্বাচনী দায়িত্ব যারা পালন করবেন, তাদের কাছ থেকে পক্ষপাতমূলক আচরণ কখনও আশা করি না। কোনো ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা দলের প্রতি অনুরাগ বা বিরাগের বশবর্তী হয়ে দায়িত্ব পালন করতে আসিনি। সকল প্রার্থী আমাদের কাছে এক এবং অভিন্ন। সকলের প্রতি আচরণে আপনাদের ভূমিকা হচ্ছে বিচারকের মতো নির্মোহ।’
এসআর/এফআর