মুক্তিযুদ্ধে জিয়ার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন আছে: তথ্যমন্ত্রী
তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ
তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় জিয়াউর রহমানের ভূমিকা আসলে কী ছিল, সেটি নিয়ে নানা প্রশ্ন আছে। মুক্তিযোদ্ধার ছদ্মাবরণে তিনি প্রকৃতপক্ষে পাকিস্তানের সহযোগী হিসেবে কাজ করেছিলেন। এখনও তার খেতাব বাতিলের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। এ বিষয়ে জামুকায় আলোচনা হয়েছে মাত্র।
শুক্রবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম নগরীর নিজ বাসায় সমসাময়িক বিষয়ে ব্রিফিংয়ের সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি এসব কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
ড. হাছান বলেন, নানা প্রশ্ন তুলে ও দায়িত্বহীন কথা বলে শেষ পর্যন্ত বিএনপির অনেক নেতা করোনার ভ্যাকসিন নিয়েছেন। সেজন্য তাদের সাধুবাদ জানাই। কথায় আছে না- গাধা জল ঘোলা করে খায়। ভ্যাকসিন নেওয়ার ক্ষেত্রে বিএনপির ভূমিকাও সেরকমই।
তিনি বলেন, বিএনপি নেতারা করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে অনেক অপপ্রচার চালিয়েছেন, তারা প্রথমে বলেছে সরকার ভ্যাকসিন সময়মতো আনতে পারবে না। যখন সময়মতো ভ্যাকসিন চলে এল, তখন তারা বললেন এটি নিলে কোনো কাজ হবে না। ভ্যাকসিন দিয়ে সরকার বিএনপি নেতাদের মেরে ফেলতে চাচ্ছে। এ ধরনের কথাও বলেছেন।
বিজ্ঞাপন
তিনি আরও বলেন, আমরা চাই বিএনপি নেতারা ভ্যাকসিন নিয়ে সুস্থ ও সবল থাকুক। তারা বিরোধী দল, বিরোধিতার ভূমিকায় রয়েছে। আমরা চাই বিএনপি আমাদের বিরোধিতা করুক।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, সরকার গণমাধ্যমের অবাধ স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে। হাইকোর্ট যদি আল জাজিরা বন্ধের নির্দেশ দেন, সেক্ষেত্রে হাইকোর্টের আদেশ আমাদের মানতে হবে। আমরা চাইলে আল জাজিরার সম্প্রচার আমাদের দেশে বন্ধ করতে পারতাম। অনেক দেশে বন্ধ করা হয়েছে ও বন্ধ রয়েছে। এমনকি ভারতেও কিছুদিনের জন্য বন্ধ ছিল। এখনও ৬-৭টি দেশে আল জাজিরার সম্প্রচার বন্ধ আছে। কিন্তু জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার যেহেতু গণমাধ্যমের অবাধ স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে, তাই আমরা সে উদ্যোগ নিইনি।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার পাশাপাশি দায়িত্বশীলতারও প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু স্বাধীনতা মানে এই নয় যে ভুল, মিথ্যা, পক্ষপাতদুষ্ট ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত, অপরের স্বাধীনতা হরণকারী সংবাদ পরিবেশন করা। এটা কোনোভাবেই সমীচীন নয়। আল জাজিরার রিপোর্ট মিথ্যা বানোয়াট। কাট-পেস্ট করে রিপোর্টটি প্রকাশ করা হয়েছে।
বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশ সম্পর্কে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, বিএনপি বিরোধী দল, তারা বিক্ষোভ করতেই পারে। কিন্তু চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নির্বাচনসহ অন্যান্য যেসব ইস্যুতে তারা বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়েছে তা হাস্যকর।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ কিংবা পার্শ্ববর্তী দেশে যে ধরনের স্থানীয় সরকার নির্বাচন হয়, সেই নিরিখে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে একটা ভালো নির্বাচন হয়েছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে। কিন্তু কার্যত মাঠে ছিল না। ভোটের দিন তাদের কাউকে দেখা যায়নি।
তথ্যমন্ত্রী প্রশ্ন রেখে বলেন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মতো একটা গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনে বিএনপির মহাসচিব কি চট্টগ্রাম এসেছিলেন? তিনি কি নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়েছিলেন? একটা মিটিং করেছেন? অথচ তাদের প্রচারণা চালাতে কোনো অসুবিধা ছিল না।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের নানা বাধ্যবাধকতার কারণে আমাদের দলের এমপি-মন্ত্রীদের নির্বাচনী প্রচারণায় অংশগ্রহণ করার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা ছিল। মির্জা ফখরুল সাহেবসহ তাদের দলের নেতারা যারা প্রতিদিন নয়াপল্টনে কথা বলেন, তাদের কোনো সমস্যা ছিল না। তারা কিন্তু আসেননি। বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে, কিন্তু মাঠে ছিল না। এটি তাদের ব্যর্থতা ও দলীয় দুর্বলতা। এ কারণেই তারা নির্বাচনে পরাজিত হয়েছে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ১৯৯৪ সালে আমাদের প্রয়াত নেতা মহিউদ্দিন চৌধুরী চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন। তখন থেকেই বিএনপির পরাজয় শুরু। মাঝখানে একবার আওয়ামী লীগ থেকে মঞ্জুরুল আলম মঞ্জুকে ভাড়া করে নিয়ে গিয়ে তারা জয়লাভ করেছিল। তারা কখনোই চট্টগ্রাম শহরে জয়লাভ করেনি। এটি আওয়ামী লীগের ঘাঁটি। সুতরাং এ নিয়ে বিক্ষোভ করে কোনো লাভ নেই।
আরএইচ/ওএফ