মোটরসাইকেলের শোরুম

মোটরসাইকেলের নিবন্ধন ফি কমানো ও ১৬৫ সিসি থেকে বাড়িয়ে ৩৫০ সিসি করার সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশে যাত্রী কল্যাণ সমিতি। শনিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনের মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী এ তথ্য জানিয়েছেন।

মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা কমানো ও পথচারীদের নিরাপত্তার জন্য এ দাবি জানানো হয়েছে। দেশে মানসম্মত গণপরিবহনের অভাব। এছাড়াও যাত্রী হয়রানী, ভাড়া নৈরাজ্য, যাত্রীসেবার মান ও কর্মসংস্থানের অভাবসহ নানা কারণে মানুষ মোটরসাইকেলকে নিরাপদ বাহন ও কর্মসংস্থানের বিকল্প উপায় হিসেবে মনে করছে। 

তিনি আরও বলেন, অন্যদিকে বেকার যুবকরা অনলাইন প্লাটফর্মে মোটরসাইকেল ভাড়ায় চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে। দিনদিন মোটরসাইকেল রাইড বাড়ার কারণে সড়কে দুর্ঘটনা ঘটছে। এসব কারণে মোটরসাইকেল, ইজিবাইক, মোটরচালিত রিক্সাসহ ছোট ছোট যানবাহনের লাগাম টেনে ধরতে সরকারকে আহ্বান জানাচ্ছি।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, পৃথিবীর সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ এই দেশে রাস্তার পরিমাণ বিবেচনায় না নিয়ে প্রতিবছর প্রায় তিন থেকে চার লাখ মোটরসাইকেল রাস্তায় নামছে। বিপরীতে বাসের সংখ্যা জ্যামিতিক হারে কমছে। গণপরিবহনের এই ভুল নীতি বন্ধ না হলে অচিরেই দেশের যেকোনো সড়কে যাতায়াত কঠিন হয়ে পড়বে। বর্তমানে দেশে নিবন্ধিত ৪৪ লাখ যানবাহনের বিপরীতে ৩১ লাখ মোটরসাইকেল রয়েছে। নিবন্ধনবিহীন আরও তিন থেকে চার লাখ মোটরসাইকেল রাস্তায় চলছে। অথচ মোটরসাইকেল চালকদের মাত্র ১৮ লাখ ড্রাইভিং লাইসেন্স রয়েছে।

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির পরিসংখ্যান মতে, ২০২০ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় পড়া ছয় হাজার ৭৩৬টি যানবাহনের মধ্যে মোটরসাইকেলের সংখ্যা ছিল এক হাজার ৬৭১টি। যা মোট যানবাহনের ২৪.৮ শতাংশ। ২০১৯ সালে দুর্ঘটনায় পড়া সাত হাজার ৩৫৬টি যানবাহনের মধ্যে এক হাজার ৫৬৩টি মোটরসাইকেল সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে। যা মোট যানবাহনের ২১.৪ শতাংশ।

এতে দেখা গেছে, গত এক বছরে দেশে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার বেড়েছে ৩.৪ শতাংশ। দেশের একমাত্র এক্সপ্রেসওয়ে ঢাকা-মাওয়া-পাঁচ্চর জাতীয় মহাসড়ক ছাড়া অন্য কোনো মহাসড়কে ১০০ কিলোমিটার গতিতে নিশ্চিন্তে মোটরসাইকেল চালানোর সুযোগ নেই। রাজধানীসহ দেশের প্রধান প্রধান মহানগরীতে মোটরসাইকেলের জন্য আলাদা লেন না থাকায় ট্রাফিক আইন ভাঙ্গার শীর্ষে রয়েছে মোটরসাইকেল।

অন্যদিকে পঙ্গু হাসপাতালের তথ্য মতে, প্রতিবছর গড়ে সাড়ে সাত থেকে আট হাজার পঙ্গু রোগী মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার শিকার হয়ে এই হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। সড়ক দুর্ঘটনা ও যানজট কমাতে চীনের পাঁচটি মহানগরীসহ পৃথিবীর বহু দেশের প্রধান প্রধান মহানগরীতে মোটরসাইকেল নিষিদ্ধ করেছে।

এসআর/ওএফ