নানা অপকৌশলে সাম্প্রদায়িক ইস্যুতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের শিক্ষককে গ্রেপ্তার করার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও শঙ্কা প্রকাশ এবং নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ।

একের পর এক বিভিন্ন কৌশলে দেশে উস্কানিমূলক বিভিন্ন অপপ্রচার চালিয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার লক্ষ্যে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের শিক্ষকদের হেনস্থা করা হচ্ছে বলেও মনে করে মহিলা পরিষদ।

মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম ও সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ দাবি করা হয়।

তারা বলেন, বিগত কয়েকদিনে দেশে পরপর সাম্প্রদায়িক ইস্যু নিয়ে বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটে গেছে। মুন্সিগঞ্জে বিজ্ঞান শিক্ষক হৃদয় মণ্ডলকে ক্লাসে বিজ্ঞান বিষয়ে পড়ানোর সময়ে কৌশলে ধর্ম নিয়ে আলোচনা শুরু করে কয়েকজন ছাত্র। একপর্যায়ে ধর্ম অবমাননার মিথ্যা অভিযোগ তোলা হয় তার বিরুদ্ধে এবং কোন রকম তদন্ত না করেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

নওগাঁয় স্কুল ইউনিফর্ম না পড়ায় সহকারী প্রধান শিক্ষিকা আমোদিনী পাল কয়েকজন শিক্ষার্থীকে শাস্তি দেন। কিন্তু এ ঘটনাকে হিজাব পড়ার কারণে শাস্তি দেওয়া হয় বলে মিথ্যা গুজব রটিয়ে তাকে হেনস্থা করা হয়।

মীরসরাইয়ে জোরারগঞ্জ বৌদ্ধ উচ্চ বিদ্যালয়ে এক ছাত্রী হিজাব খুলতে রাজী না হওয়ায় প্রধান শিক্ষকের দ্বারা গালমন্দ ও মারধোরের বানোয়াট মিথ্যা কাহিনী বলে প্রধান শিক্ষককে হেনস্তা করার ঘটনাসহ বেশকিছু ঘটনা ঘটেছে।

মহিলা পরিষদ মনে করে, এ ঘটনাগুলো কুচক্রি উগ্রসাম্প্রদায়িক গোষ্ঠি পরিকল্পিত ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে দেশে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ও অরাজকতা সৃষ্টির জন্য ঘটাচ্ছে। মহিলা পরিষদ এ সব ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও শঙ্কা প্রকাশ করছে এবং এই ধরনের ঘটনা পুনরাবৃত্তিরোধে সরকার, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিশেষ মনোযোগ আকর্ষণ করছে।

মহিলা পরিষদ মনে করে, এই ধরনের ঘটনা দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধক এবং সংবিধানের পরিপন্থী। সকল সম্প্রদায়ের মানুষের সহাবস্থান, সম্প্রীতি, শান্তি রক্ষাকল্পে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ও দায়িত্বশীল আচরণ আশা করে মহিলা পরিষদ। ঘটনাসমূহের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি ও মদদদাতা কুচক্রিমহলকে খুঁজে বের করে গ্রেপ্তার ও উপযুক্ত শাস্তি এবং সংখ্যালঘু জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানাচ্ছে সংগঠনটি।

জেইউ/আইএসএইচ