লঞ্চের আগাম টিকিট নিতে ভিড় নেই যাত্রীদের
ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গত ২০ এপ্রিল থেকে সদরঘাটে লঞ্চগুলোর আগাম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। যা চলবে সোমবার (২৫ এপ্রিল) পর্যন্ত। অগ্রিম টিকিট বিক্রি চালু থাকলেও সদরঘাটে যাত্রীদের তেমন ভিড় দেখা যায়নি। যাত্রী না থাকায় কোনো কোনো কাউন্টার ফাঁকাও দেখা গেছে।
রোববার (২৪ এপ্রিল) সরেজমিন দেখা যায়, আগাম টিকিট নিতে সদরঘাটের লঞ্চগুলোতে যাত্রীদের ভিড় নেই। বুকিং কাউন্টারগুলোতে টিকিট কেনার জন্য ভিড় দেখা যায়নি। ঢাকা-বরিশাল রুটের প্রিন্স আওলাদ-১০, সুন্দরবন-১১, পারাবাত-১০, মানামি-১ এবং সুরভী লঞ্চগুলোর কাউন্টারে টিকিট নিয়ে বসে আছেন কর্মচারীরা। যাত্রী না থাকায় ফাঁকা পড়ে আছে কোনো কোনো কাউন্টারগুলো।
বিজ্ঞাপন
লঞ্চের টিকেট এবার অনলাইন ও অফলাইন দুই ভাবেই বিক্রি হচ্ছে।
জানা যায়, ঢাকা থেকে বরিশালগামী লঞ্চ প্রিন্স আওলাদ-১০ এ সিঙ্গেল কেবিনে ১০০ টাকা ভাড়া বেড়ে ১৫০০ হয়েছে। ডাবল কেবিনে ২০০ টাকা বেড়ে ২৬০০ টাকা হয়েছে। ভিআইপি কেবিনে ১০০০ টাকা বেড়ে ৮০০০ টাকা হয়েছে। অন্যদিকে আগের ভাড়া এখনো বহাল আছে পারাবত-১০ লঞ্চে। সিঙ্গেল কেবিন ১৪০০ টাকা। ডাবল ২৮০০ টাকা, ভিআইপি ৮ থেকে ১০ হাজার, ডেক ৩৫০ টাকা।
বিজ্ঞাপন
পূবালী লঞ্চের টিকিট কাউন্টারের দায়িত্বে থাকা মো. সবুজ বলেন, আমাদের বেশিরভাগ টিকিট অনলাইনে বিক্রি হয়ে গেছে তাই এখানে ভিড় নেই। তবুও অনেক যাত্রী তাদের সুবিধামতো এসে টিকিট নিয়ে যাচ্ছেন। পাঁচ দিন ধরে টিকিট বিক্রি হওয়ায় ভিড় কম বলে জানান তিনি।
সুন্দরবন লঞ্চের বুকিং কাউন্টারের মো. রফিক বলেন, ঈদের আমেজ এখনো তেমন শুরু হয়নি। আরো দু'একদিন পর থেকে টিকিট বিক্রি বাড়বে। আমাদের এখনো বেশিরভাগ কেবিনই ফাঁকা আছে।
যাত্রাবাড়ী থেকে আগাম টিকিট নিতে আসা মো. তাওহীদ বলেন, আমি পরিবার নিয়ে বাড়ি যাব। ২৬ এপ্রিলের জন্য টিকিট নিতে এসেছি। প্রিন্স আওলাদ-১০ লঞ্চে ১০০ টাকা বেশি দিয়ে সিঙ্গেল কেবিন বুক করেছি।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের নৌ-নিরাপত্তা ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের যুগ্ম পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) শেখ মো. সেলিম রেজা জানান, সাধারণত পুরো রমজানজুড়ে যাত্রীদের ভিড় থাকে। কিন্তু এবারের চিত্র ভিন্ন। ঘাটে লঞ্চ আছে, যাত্রী নেই। সাধারণ সময়ের তুলনায় ঈদ যাত্রায় কেবিনের চাহিদা বেশি থাকে। সেজন্য আগাম টিকিট বিক্রি হচ্ছে। আশা করছি ২৮ তারিখ থেকে যাত্রীদের ভিড় বাড়বে।
সদরঘাট নৌথানা ইনচার্জ কাইউম আলী সরদার ঢাকা পোস্টকে জানান, ঈদে যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে লঞ্চে লঞ্চে আমাদের গোয়েন্দা কাজ করবে। পেট্রোলিং, কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে যাত্রীদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হবে। পন্টুন, গ্যাংওয়ে তে যেন যাত্রীরা নিরাপদে যাতায়াত করতে পারে, সেজন্যে সাদা পোশাকে আমাদের দায়িত্বরত কর্মকর্তারা কাজ করবে। সদরঘাটের মোট ১৯টি গ্যাংওয়েকে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার জন্য ৩ ধাপে ভাগ করে নিরাপত্তা দেওয়া হবে। ধারণা করছি আগামী ২৭ থেকে ২৯ তারিখ পর্যন্ত চাপ বাড়তে পারে লঞ্চে।
টিকিট কালোবাজারি নিয়ে প্রশ্নে লঞ্চ মালিক সমিতি বাংলাদেশের মহাসচিব শহীদুল ইসলাম ভূইঞা জানান, লঞ্চ মালিক হিসেবে আমাদের দায়িত্ব লঞ্চ প্রস্তুত করে দেওয়া। বাকি সব দায়িত্ব লঞ্চের স্টাফদের। জাহাজের মাস্টার, ড্রাইভার বা স্টাফরা কেউ যদি অন্যায় করে, তাহলে তাদেরকে সঙ্গে সঙ্গে শাস্তি দেওয়া আমাদের দায়িত্ব। কেউ যদি নিজের নামে অনেক টিকেট কিনে, পরিচিতদের কাছে বিক্রি করে সেখানে আমাদের করার কি আছে?
এমটি/জেডএস