দুই বছর পর বাড়িতে ঈদ করবেন তারা
নাজিম উদ্দিন থাকেন রাজধানীর জিগাতলায়। চাকরি করেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। বাড়ি রাজশাহীর নওহাটায়। পরিবার অন্য ৩ সদস্য নিয়ে ঈদযাত্রায় এবার ছুটছেন সেখানেই। তাদের এ যাত্রা প্রায় দীর্ঘ দুই বছর পরে। করোনা মহামারির কারণে গত দুবছর যাওয়া হয়নি নওহাটায়।
রোববার (১ মে) দুপুরে রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের ৫ নং প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে ঢাকা পোস্টের সঙ্গে কথা হয় নাজিম উদ্দিনের।
বিজ্ঞাপন
সিল্ক সিটি ট্রেনে ওঠার অপেক্ষায় থাকা নাজিম উদ্দিন বলেন, বাবা-মা মারা গেছেন আরও ৫ বছর আগে। বাড়িতে আমার ভাই আছেন এবং পাশের গ্রামেই আমার বোনের বাড়ি। ঈদে সকালে বাচ্চারা মিলিত হয়, এটাই আমাদের কাছে আনন্দ। বাবা মা জীবিত না থাকলেও প্রতি বছরই পরিবার সদস্যদের নিয়ে বাড়িতে যাই। তাদের কবর জিয়ারত করি। ঈদযাত্রার এই ট্রেন ভ্রমণ আমার বাচ্চাদের জন্য অনেকটা আনন্দের, তারা খুব উপভোগ করে। যেহেতু বাবা মা বেঁচে নেই, তাই সারা বছর খুব একটা যাওয়া হয় না। ২০২০ সালে যখন করোনার কারণে বাড়ি যাওয়া হয়নি। গতবছর শুধু আমি একাই গিয়েছিলাম বাবা-মা'র কবর জিয়ারত করতে।
বিজ্ঞাপন
দীর্ঘ দুই বছর পর এবারই আমার স্ত্রী এবং সন্তানদের নিয়ে বাড়ি যাচ্ছি। টিকিট পেতে ১৪ ঘণ্টার অপেক্ষা পোহাতে হলেও এখন যেতে খুব একটা অসুবিধা হবে না। এতে আমার বাচ্চারাও অনেক খুশি।
কালনী এক্সপ্রেসে সিলেট শহরের বদিকোনায় যাবেন আব্দুল্লাহ আল মামুন। ঈদের এই যাত্রায় সঙ্গে যাচ্ছেন তার স্ত্রী, মেয়ে ও মেয়ের পছন্দের পাখি ককাটিয়েল। মামুন ঢাকা পোস্টকে বলেন, করোনার সময়ে এ পাখিগুলোই মেয়ের সঙ্গী ছিল।৫ দিনের ছুটিতে বাড়ি যাচ্ছি, পাখিগুলোকে আর কোথায় রেখে যাব? তাই সঙ্গেই নিয়ে যাচ্ছি।
মামুন আরও আর বলেন, বাড়িতে বাবা-মা আছেন। তারাও চান ঈদে তাদের সঙ্গে বাড়িতে সময় কাটাই, এটাই তাদের আনন্দের মূল উৎস। ২০২০ সালের করোনার সময় একেবারেই যাওয়া হয়নি। গতবছরও গিয়েছিলাম। আর এবারও যাচ্ছি। ট্রেন ভ্রমণটা আমার মেয়ে খুবই উপভোগ করে। তাই কষ্ট হলেও রাত জেগে ট্রেনের টিকিট সংগ্রহ করেছি।
শুধু নাজিম উদ্দিন ও মামুন নয়, এমন অনেকেই আছেন যারা দীর্ঘ ২ বছর পর পরিবারের সঙ্গে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করতে আপন গৃহে ফিরছেন।
এদিকে রোববার (১ মে) সকালে ৩টি ট্রেন ৩০-৪০ মিনিট বিলম্বে ছেড়েছে। এছাড়া এখন পর্যন্ত কোনো ট্রেন বিলম্বে ছেড়ে যায়নি। প্রতিটি ট্রেন নির্দিষ্ট সময়েই কমলাপুর রেলস্টেশনের প্ল্যাটফর্ম ছেড়েছে।
এ বিষয়ে সকালে কমলাপুর রেল স্টেশনে ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মাসুদ সারওয়ার বলেন, সকাল থেকে এখন পর্যন্ত যে ট্রেনগুলো কমলাপুর রেলস্টেশন ছেড়ে গেছে, সেগুলোর মধ্যে নীলসাগর, ধূমকেতু এবং সুন্দরবন এক্সপ্রেস ৩০ থেকে ৪০ মিনিট বিলম্ব হয়েছে। এটা অপ্রত্যাশিত, শিডিউল বিপর্যয় বলা যাবে না।
তিনি বলেন, ঈদযাত্রায় আমরা সময়ের চেয়ে নিরাপত্তাকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছি। প্রত্যেকটি ক্রসিংসহ অপারেশনাল কাজগুলো আমরা খুবই স্মুথলি করছি। যার কারণে ট্রেন ২০-৩০ মিনিট দেরি হতে পারে। সারাদিনে দুটি স্পেশাল ট্রেনসহ মোট ৩৯ জোড়া ট্রেন কমলাপুর থেকে চলাচল করবে। এসব ট্রেনে ৫৩ হাজার মানুষ ঢাকা ছাড়তে পারবে।
এমএইচএন/এসকেডি